ক্রসড্যাম বাঁধ অপসারন না হওয়ায় পানি বন্দি শালতা পাড়ের ৪০ হাজার মানুষ

0
194

তালা প্রতিনিধি:
শালতা নদী খননে ক্রসড্যাম বাঁধ অপসারণ না করায় সাতক্ষীরার তালা উপজেলার খলিলনগর ইউনিয়নের ১০টি গ্রামের প্রায় ৪০ হাজার মানুষ পানি বন্দি হয়ে পড়েছে। পানি বন্দী এলাকায় দেখা দিয়েছে খাদ্যের সংকট। ভেঙ্গে পড়েছে স্যানিটেশনসহ যাতায়াত ব্যবস্থা। ভেসে গেছে কোটি কোটি টাকার চিংড়ীসহ সাদা মাছের ঘের ও পুকুর। নষ্ট হয়েছে ফসলি জমি ও বীজতলা।
সোমবার (২৪ আগষ্ট) সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, জলাবদ্ধতায় গ্রাম গুলো পানিতে তলিয়ে আছে। মানুষের বাড়ীর উঠানে হাটু পানি, কাঁচা ঘরবাড়ী গুলো ধ্বসে পড়ার উপক্রম হয়েছে। ভেঙ্গে পড়েছে যাতায়াত ব্যবস্থা। যাতয়াতের জন্য অনেকে নৌকা, সাঁকোসহ বিভিন্ন পদ্ধতি ব্যবহার করছেন। ঘরের মধ্য বাসা বেঁধেছে পোকামাকড় ও বিষাক্ত সাপ। এ কারণে আতংকে রয়েছে শিশুসহ ঘরের মহিলারা। এতে চরম জনদূর্ভোগে পৌঁছেছে সাধারণ মানুষ। এসময় শালতা পাড়ের ক্ষুদ্র মৎস্য ব্যবসায়ী আলতাপ বিশ্বাস জানান,শালতা নদী পলি পড়ে ভরাট হয়ে গেছে। ফলে প্রতি বছরের ছয় মাস পানির মধ্যে তাদের বসবাস করতে হয়। জলবদ্ধতার সময় স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে অতি কষ্টে জীবন-যাপন করতে হয় তাদের।
খলিলনগর ইউনিয়নের দাশকাটি গ্রামের কৃষক আলাউদ্দিন গাজী বলেন, ‘আমার যতটুকু জমি আছে, তা তলিয়ে গেছে। বর্তমানে চাষাবাদ করতে পারছিনা। তিনি আরও বলেন, গত কয়েক দিন আগে গ্রামের একটি লোক মারা যায়। কিন্তু জলবদ্ধতার কারণে তাকে এ গ্রামে কবর দিতে পারেনি। এমন বক্তব্য আখড়াখোলা গ্রামের মাসুদ বিশ^াস, করিম মোড়ল, মজিবর রহমান, আকবর হোসেনসহ অনেকের।
তালা উপজেলা পানি কমিটির সাধারণ সম্পাদক মীর জিল্লুর রহমান বলেন, শালতা নদী খনন প্রকল্পের সাথে টিআরএম যুক্ত না থাকায় নদীর দু’পাড়ের মানুষগুলি জলাবদ্ধতার শিকার হচ্ছে সাধারণ মানুষ। যত দিন টিআরএম চালু না করা হবে, ততদিন এ জলাবদ্ধতা নিরাসন হবেনা। এ জনপদ বাঁচাতে হলে, প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা কপোতাক্ষ খনন প্রকল্পে টিআরএম যুক্ত রেখে খনন কাজ হয়েছে। ঠিক তেমনি শলতা নদী খনন প্রকল্পে টিআরএম চালু রাখলে এ জনপদ বেঁচে যাবে বলে তিনি দাবী করেন।
খলিলনগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সরদার ইমান আলী জানান, দীর্ঘ আন্দোলনের পর শালতা খনন শুরু হয়। কিন্তু ঠিকাদার ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরের অনিয়মের কারণে খনন কাজ যথাযথ বাস্তবায়ন হচ্ছে না। যে কারণে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।
খলিলনগর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও তালা প্রেসক্লাবের সভাপতি প্রনব ঘোষ বাবলু জানান, গত চার বছর ধরে খলিলনগর ইউনিয়নের কোনো ¯øুইস গেট সংস্কার করা হয়নি। এছাড়া শালতা খননের সময়ে নদীর মধ্যে দেওয়া ক্রসড্যাম বাঁধ অপসারন না করায় এই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। দ্রæত পানি নিস্কাশনের ব্যবস্থা না হলে সাধারণ মানুষের কষ্টের শেষ থাকবে না।
তালা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. ইকবাল হোসেন জানান, বিষয়টি সরেজমিনে গিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে জলাবদ্ধতার থবর শুনে সোমবার (২৪ আগষ্ট) সকালে তালা উপজেলার খলিলনগর ইউনিয়নের জলাবদ্ধতা এলাকা পরিদর্শন করেন সাতক্ষীরা-১ (তালা-কলারোয়া) আসনের সংসদ সদস্য এ্যাডভোকেট মুস্তফা লূৎফুল্লাহ। পরিদর্শন শেষে তিনি এপ্রতিনিধিকে বলেন, নলতা বাটুলতলা ¯øুইস গেট সংস্কার করার ব্যবস্থা করা হবে। খুব দ্রæত শালতার ক্রসড্যাম বাঁধ অপসারণ করে পানি নিস্কাশনের ব্যবস্থা করা হবে।