কৌশলে বিষ প্রয়োগ করে মাছ শিকার

0
233

কয়রা প্রতিনিধি:
সুন্দরবনের নদী খালে আবারো নুতন কৌশল অবলম্বন করে মাছ শিকার করছে একশ্রেণীর ধুরন্দর জেলেচক্র। জানা গেছে, মার্কি, দুধমুখ, চালকি, পিনমারা মোল্লাখালি, জোলাখালি, খাসিটানা, হংসরাজ, পাথকষ্টা, গেওয়াখালি, ভোমরখালি সহ বনের অনেক জায়গার ছোট ছোট নদী, খাল ও ভারানিতে বিষ দিয়ে ঘন ফাঁসের চরপাটা জালে অভিনব কায়দায়মাছ শিকারকরা হচ্ছে। ধুরন্দর জেলেরা শেষ ভাটায় বনের ভেতরের খাল ও নদীর দুথপাড়ের চরের একেবারে নীচে আধা কিলোমিটার ব্যাপী ঘন ফাঁসের চরপাটা জাল ফেলে রাখে। অর্ধেক পরিমান জোয়ারের পানিতে রিপকর্ড বিষের বোতল থেকে বিষ ছিটানো শুরু করে জেলেরা। এ সময় বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত চিংড়ি সহ অন্যান্য প্রজাতির মাছ ধীরে ধীরে দুথকিনারে জড়ো হয়। জোয়ার পূর্ণ হলে দীর্ঘ আকৃতির চরপাটা জাল টেনে উঁচু করে লম্বা চিকন খুঁটির মাথায় বেঁধে দেওয়া হয়। কিছুক্ষণ পর পুনরায় ভাটা হলে শেষ ভাটায় চরে নেমে বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত সমুদয় মাছ ধরা শুর করেজেলেরা। এভাবেস্বাভাবিকের চেয়ে ৩/৪ গুণ বেশি পরিমান মাছ পেয়ে জেলেদের উৎফুল্ল হতে দেখা যায়। বরফ মেশানো কসকেট ও ড্রাম ভর্তি বিপুল পরিমান বিষযুক্ত মাছ সুন্দরবন থেকে লোকালয়ে এনে দেউলিয়া বাজার মৎস্য আড়ত, চাঁদালি, মৎস্য আড়ত ও ফুলতলা মাছের বাজারে বেচাকেনা করছে অসাধু জেলেচক্র। মৎস্য আড়তে মাছ ক্রয় করতে যাওয়া কয়েকজন খুচরা ক্রেতারা জানায়, গোন চলাকালীন সময়ে চরপাটার জেলেরা সুন্দরবন থেকে বিপুল পরিমান মাছ আড়তে এনে বিক্রি করে। কসকেট ও ড্রাম থেকে এ সকল মাছ আড়তের ফ্লোরে ঢেলে ফেনানোর সময় বিষের গন্ধ বের হতে থাকে। এ মাছ ক্রয় করে বাড়িতে নিয়ে রান্না করে খেলে অনেকের পেটের পীড়া দেখা দিচ্ছে।কোম্পানি নামধারী একশ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী অতি অল্প সময়ে এধরনের পদ্ধতিতে বেশি মাছ আহরণ করে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়েছেন। পুঁজিপতি এসকল কোম্পানিদের দাপটে সুন্দরবনের প্রকৃত জেলেরা নিঃস্ব হচ্ছে।সুন্দরবনের পেশাদার মৎস্য শিকারী ইয়াছিন , আয়ুব, দাউদ মোল্লা, আবুল কালাম আজাদসহ অনেকেই অভিযোগ করে বলেন, আমরা কয়েক পুরুষ ধরে সুন্দরবনের ওপর নির্ভর করে বেচে আছি। সুন্দর বনের নিষিদ্ধ বনাঞ্চল মাছের আবাস স্থল। সেখানেই মাছের প্রজনন ও বংশ বিস্তার হয়ে থাকে । (অভায়ারণ্য এলাকা) কিন্তু ব্যবসায়ী নামধারি কতিপয় ব্যক্তি (রাজনৈতিক পরিচয়ে) বনবিভাগের অসাধু কয়েক কর্মকর্তা কর্মচারীর সাথে সক্ষতা করে প্রতিনিয়ত বনের অভায়ারণ্য এলাকায় ভেষালী জালসহ বিভন্ন ক্ষুদ্র ফাঁসের জালের মাধ্যমে মাছ আহরন করছেন। এভাবে চলতে থাকলে সুন্দরবনের মৎস্য সম্পদ খুব শীঘ্রই বিলুপ্ত হবে এতে কোন সন্দেহ নেই ।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে খুলনা রেঞ্জের সহকারী বনসংরক্ষক মোঃ আবু সালেহ বলেন, বিষ প্রয়োগে মাছ শিকার রোধ করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করা হয়েছে।