কিরগিজস্তানের পার্লামেন্টে বিক্ষোভকারীদের হানা

0
198

টাইমস বিদেশ :
মধ্য এশিয়ার দেশ কিরগিজস্তানে সদ্য অনুষ্ঠিত পার্লামেন্ট নির্বাচন বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভরত লোকজন রাজধানী বিশকেকের পার্লামেন্ট ভবনে ঢুকে তা-ব চালিয়েছে। ভিডিও ফুটেজে দেশটির প্রেসিডেন্ট সুরোনবাই জিনবেকভের কার্যালয়ে বিক্ষোভকারীদের ঢুকে পড়তে এবং জানালা দিয়ে কাগজপত্র ছুড়ে ফেলতে দেখা গেছে। তারা পার্লামেন্ট ভবনের বিভিন্ন অংশে আগুন দিয়েছে বলেও মনে করা হচ্ছে। সোমবার পুলিশের সঙ্গে তুমুল সংঘর্ষের দিনই বিক্ষোভকারীরা কিরগিজস্তানের পার্লামেন্ট ভবন ‘হোয়াইট হাউসে’ হানা দেয় বলে জানিয়েছে বিবিসি। রোববারের পার্লামেন্ট নির্বাচনে ভোট জালিয়াতির অভিযোগে বিক্ষোভরত লোকজনকে সরাতে পুলিশ জল কামান ও কাঁদুনে গ্যাস ছোড়ে। সংঘর্ষে একজন নিহত ও প্রায় ৬০০ লোক আহত হয়েছেন বলে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। কিরগিজস্তানের আইন অনুযায়ী, পার্লামেন্টে আসন নিশ্চিত করতে হলে কোনো দলকে নূন্যতম ৭ শতাংশ ভোট পেতে হয়। রোববারের নির্বাচনে অংশ নেওয়া ১৬টি দলের মধ্যে মাত্র ৪টি দল এ শর্ত পূর্ণ করেছে; এই চার দলের মধ্যে তিনটিই প্রেসিডেন্টের পক্ষের শক্তি। পুলিশ রাজধানীর কেন্দ্রস্থল আলা-তু চত্বরে জড়ো হওয়া কয়েক হাজার বিক্ষোভকারীকে সরাতে স্টান গ্রেনেড ছোড়ে। বিক্ষোভকারীরা প্রথমে চত্বরটির আশপাশের সড়কগুলোতে সরে গেলেও পরে ওই চত্বরটি দখলে নেয়, এখন থেকেই পার্লামেন্ট ভবনে চড়াও হয় তারা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া বিভিন্ন ভিডিওর ফুটেজে বিক্ষোভকারীদের বেষ্টনি টপকে এবং মূল ফটক ধাক্কা দিয়ে খুলে ভেতরে প্রবেশ করতে দেখা গেছে, পরে পার্লামেন্ট ভবনের উপরে ধোঁয়াও দেখা গেছে। সংঘর্ষের মধ্যেই বিক্ষোভকারীরা দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট আলমাজবেক আতামবায়েভকে স্টেট ন্যাশনাল সিকিউরিটি সার্ভিসের একটি রিমান্ড সেন্টার থেকে মুক্ত করে দেয় বলে জানিয়েছে স্থানীয় বার্তা সংস্থা একেআইপ্রেস। দুর্নীতির অভিযোগে বিচারের অপেক্ষায় আতামবায়েভকে ওই রিমান্ড সেন্টারে আটকে রাখা হয়েছিল। নির্বাচনে জালিয়াতির অভিযোগ তোলা বিক্ষোভকারীরা বলছেন, প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক গোষ্ঠীগুলো ভোট কিনেছে এবং ভোটে হস্তক্ষেপ করেছে। বিক্ষোভকারীদের এ ভাষ্যকে ‘বিশ্বাসযোগ্য’ বলেছেন আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরাও। এদিনের সংঘর্ষে আতা মেকেন পার্টির নেতা জানার আকায়েভও পায়ে আঘাত পেয়েছেন বলে জানিয়েছে বিবিসি। পার্লামেন্ট নির্বাচন বাতিলের পাশাপাশি অনেক বিক্ষোভকারী প্রেসিডেন্ট জিনবেকভের পদত্যাগও দাবি করেছেন। সোমবার ১২টি রাজনৈতিক দল এক যুক্ত বিবৃতিতে ভোটের ফল মেনে না নেওয়ার কথা জানিয়েছে। কিরগিজস্তানের সেন্ট্রাল ইলেকটোরাল কমিশনকে ভোটের ফল বাতিল করতেও আহ্বান জানিয়েছেন বিরোধী দলের প্রার্থীরা। উত্তেজনা প্রশমনে নির্বাচনে অংশ নেওয়া ১৬টি দলের নেতার সঙ্গে মঙ্গলবার বৈঠকের ঘোষণা দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট জিনবেকভ।