কপিলমুনিতে ফায়ার সার্ভিস স্টেশন স্থাপনের দাবী এলাকাবাসির

0
138

নিজস্ব প্রতিবেদক:
দক্ষিণ খুলনার অন্যতম প্রধান বানিজ্যিক কেন্দ্র কপিলমুনি ও প্রস্তাবিত বিনোদগঞ্জ পৌরসভাকে কেন্দ্র করে ফায়ার সার্ভিস স্টেশন স্থাপনের দাবি ক্রমশ জোরালে হচ্ছে।
বিভিন্ন সময় সংঘটিত ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতির বিষয়গুলিকে সামনে রেখে স্থানীয় ব্যবসায়ী, সূধীমহলসহ সর্বস্তরের মানুষ কপিলমুনিতে ফায়ার সার্ভিস স্টেশন স্থাপনের দাবি জানান।
সূত্র জানায়,খুলনার পাইকগাছা উপজেলার অন্যতম প্রধান বানিজ্যিক কেন্দ্র কপিলমুনি। সুপ্রাচীণ কাল থেকে বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে কপিলমুনির রয়েছে সু-প্রসিদ্ধ ইতিহাস ও ঐতিহ্য। এছাড়া পাইকগাছা উপজেলা ১টি পৌরসভাসহ ১০ টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। পাইকগাছাসহ পার্শ্ববর্তী তালা উপজেলাতেও কোন ফায়ার সার্ভিস স্টেশন নেই। যেকোন ধরনের দূর্ঘটনায় ফায়ার সার্ভিসের প্রয়োজনে বাধ্যতামূলক প্রায় ৫০ কিঃমিঃ দুরত্বে খুলনার ডুমুরিয়া স্টেশনকে জানাতে হয়। এরপর খবর পেয়ে ৫০ কিঃমিঃ পথ পাঁড়ি দিয়ে কপিলমুনিতে এসে পৌছানোর আগেই সব কিছু ভষ্মিভূত হয়। দক্ষিণ খুলনার ঐতিহ্যবাহী কপিলমুনি কেন্দ্রীক প্রায় পাঁচ সহ¯্রাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, কল-কারখানা রয়েছে। অনার্স কলেজ, মহিলা কলেজ, একাধিক মাধ্যমিক, প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাদ্রাসা, কিন্টার গার্ডেন স্কুল, ব্যাংক-বীমা, হাসপাতাল, পোস্ট অফিসসহ বিভিন্ন সামাজিক, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সাংস্কৃতিক, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান রয়েছে এখানে। বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দেশের একমাত্র বেদ মন্দিরটি কপিলমুনিতে অবস্থিত। এখানে রয়েছে ঐতিহাসিক কালী মন্দিও ও জাগ্রত পীর জাফর আউলিয়ার মাজার। বছরের বিভিন্ন সময়ে অগ্নিকান্ডের ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকাবাসীর প্রাণের দাবি ফায়ার সার্ভিস স্টেশন স্থাপন। স্বাধিনতা পরবর্তী বিভিন্ন সময়ে সরকারের পালাবদলে জনপ্রতিনিধিরা ফায়ার সার্ভিস স্টেশন বাস্তবায়নের অঙ্গিকার করলেও কার্যত তা আশ্বাসের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়েছে। তবে সর্বশেষ গত ১১ জানুয়ারী কপিলমুনিতে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে দু’টি দোকান পুড়ে প্রায় ১৫ লক্ষ টাকার ক্ষতি সাধন ও মাত্র ২০ দিনের ব্যবধানে ৩১ জানুয়ারি মধ্য রাতে কপোতাক্ষ কম্পিউটারে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে প্রায় ৮ লক্ষাধিক টাকার মালামাল পুড়ে যাওয়ার ঘটনায় ফায়ার সার্ভিস স্টেশন স্থাপনের দাবি জোরালে হয়েছে। কপিলমুনি ইউপি চেয়ারম্যান মো: কওছার আলী জোয়াদ্দার জানান, কপিলমুনি কেন্দ্রীক একটি ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের দাবি দীর্ঘ দিনের। আশপাশের অন্তত ৩টি উপজেলায় স্টেশন না থাকায় অগ্নিকান্ডের ঘটনায় কপিলমুনি অঞ্চল বরাবরই ঝুঁকিতে রয়েছে। কপিলমুনি কলেজের অধ্যক্ষ মো: হাবিবুল্লাহ বাহার, সহচরী বিদ্যামন্দিও স্কুল এন্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক মো: কবির উদ্দীন, জাফর আউলিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ হাফেজ আব্দুস সাত্তার, হরিঢালী-কপিলমুনি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ শেখ মেজবাহ উদ্দীন, বিনোদ বিহারী শিশু নিকেতনের অধ্যক্ষ মুজিবুর রহমান, মেহেরুন্নেছা বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রহিমা আক্তার শম্পা, কে.আর.আর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শেখ আব্দুর রহমান, পিটিডি ভোকেশনাল স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো: শিমুল বিল্লাল বাপ্পি জানান, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান,শিল্প কল-কারখানার পাশাপাশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর ছেলে-মেয়েরা সার্বক্ষণিক ঝঁকিতে থাকে। তাদের দাবি, বিস্তীর্ণ অঞ্চলের লক্ষ লক্ষ মানুষের জান-মালের নিরাপত্তায় ফায়ার সার্ভিস স্টেশন স্থাপন সময়ের প্রযোজনে প্রাণের দাবি। (১৯ নভেম্বর ২০২০) ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সপ্তাহ-২০২০’ উদ্বোধনকালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জানান, ‘১১টি আধুনিক মডেল ফায়ার স্টেশন স্থাপনসহ চলতি ২০২১ সাল নাগাদ আরও ১২৯টি নতুন ফায়ার স্টেশন স্থাপন করা হবে। এর ফলে প্রতিটি উপজেলায় একটি করে ফায়ার স্টেশন স্থাপিত হবে। অন্তত তার আলোকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কপিলমুনিতে ফায়ার সার্ভিস স্টেশন স্থাপনের স্বপ্ন দেখছেন কপিলমুনিসহ বিস্তীর্ণ অঞ্চলের সাধারণ মানুষ। সর্বশেষ কপিলমুনিতে ফায়ার স্টেশন স্থাপন হলে প্রতি বছর অগ্নিকান্ডের ঘটনায় বিপুল পরিমাণ ক্ষতির হাত থেকে পরিত্রাণ মিলবে। আর দীর্ঘ দিনের লালায়িত স্বপ্ন পূরণে আরো এক ধাপ এগিয়ে যাবেন জনপদের সাধারণ মানুষ।