আয়কর মেলায় কর দিতে আসা এক ব্যতিক্রমধর্মী তাপস ঘোষ

0
357

মারুফ গাজী:
জাতীয় আয়কর মেলা খুলনা কর অঞ্চলের শেষ দিন ছিল বুধবার। এ দিনে মানুষের উপচে পড়া ভিড়টি ছিল চোখে পড়ার মতন। সকাল থেকেই বেশ সমাগম লক্ষ্য করা গেছে করদাতাদের। শেষ দিনে মেলায় কর দিতে আসে বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষ। এর মধ্যে ব্যতিক্রম একজন করদাতা তাপস ঘোষ। তিনি খানজাহান আলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী শিক্ষক। দূর্ঘটনায় এক পা হারিয়েছেন।
খুলনার বটিয়াঘাটার ৫নং ভান্ডারকোট ইউনিয়নের সাদামাটা মানুষ তাপস ঘোষ। সচেতন নাগরিক হিসেবে ২০১৬ থেকেই তিনি অন্তর্ভুক্ত হন রাজস্ব খাতে। সেই থেকে যথারীতি কর প্রদান করে আসছেন এই শিক্ষক। স্ত্রী সোমা ঘোষকে সাথে নিয়ে তাপষ ঘোষ বুধবার কর দিতে আসেন খুলনা কর মেলায়।
খুলনাটাইমস’র এই প্রতিবেদকের সাথে একান্ত আলাপকালে তাপস ঘোষ জানান, ২০১৮ সালের ১৯ নভেম্বর মর্মান্তিক সড়ক দূর্ঘটনায় এক পা হারান। বাসায় ফেরার পথে খুলনা-মংলা হাইওয়ে সড়কে গুণাই ব্রিজের উপর ট্রাকের সাথে মটরসাইকেল সংঘর্ষে তিনি এ দূর্ঘটনার শিকার হন। এসময় সাথে ছিলেন তার ভাগ্নে, ওই দূর্ঘটনায় সে নিহত হন। অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান তাপস ঘোষ। দেশের পর ভারতেও চিকিৎসার জন্য যান তিনি। শেষমেশ রক্ষা না হয়ে অবশেষে ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারীতে ডান পা কেটে ফেলতে হয় এই শিক্ষককে।
২০১৬ সালে তিনি ট্যাক্স আইডেন্টিফিকিশন নাম্বার ’টিন’ রেজিস্ট্রেশন করেন। এরপর থেকে তিনি কর অন্তর্ভুক্ত হন। পরপর ২ বছর কর্মস্থলে কর দেয়ার পর দূর্ঘটনার শিকার হয়ে তিনি খুলনা কর অঞ্চলে এবার প্রথম কর দেন। তিনি বলেন, দূর্ঘটনায় ভাগ্নেকে হারানোর বেদনা আমাকে সর্বক্ষণ কাদায়। কর প্রদান করতে এসে আমার কোন বেগ পেতে হয়নি। ঝামেলাহীন ভাবে কর দিতে পেরে আমি ভিষন খুশি। জাতীয় আয়কর মেলায় বেসরকারী শিক্ষক-শিক্ষীকা বিভাগের ৫ নং সার্কেলে তিনি তার রিটার্ন জমা দেন।
২০০৩ সাল থেকে তিনি বাগেরহাট রামপাল গৌরম্ভার বেসরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে চাকুরিতে যোগদান করেন। দূর্ঘটনার পর এক পা হারিয়ে বটিয়াঘাটা থেকে ইজিবাইকেই তিনি বেশিরভাগ সময়ে কর্মস্থলসহ অন্যান্য স্থানে যাতায়াত করেন। র্বুমানে ১০ বৎসরের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে তার।