১ জুলাই থেকে দুই মাস সুন্দরবনে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা :খালে লাল পতাকা স্থাপন

0
950

শেখ মোহাম্মদ আলী, শরণখোলা থেকে:
সুন্দরবনের ছোট খালে ১ জুলাই থেকে দুই মাস মাছ ধরা নিষিদ্ধ ঘোষনা করেছে বন বিভাগ। শরণখোলা রেঞ্জের ৬০ টি খালের প্রবেশ মুখে লাল পতাকা স্থাপন করা হয়েছে। মাছ ও অন্যান্য জলজ প্রাণির নিরাপদ প্রজনন, সংরক্ষণ ও বিষ প্রয়োগ বন্ধে বনবিভাগ এ উদ্যোগ নিয়েছে। মৎস্য ভান্ডার হিসেবে খ্যাত সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের শরণখোলা, চাঁদপাই ও পশ্চিম বিভাগের খুুলনা, ও সাতক্ষীরা, রেঞ্জে ইতিমধ্যে চারশতাধিক খালকে নিষিদ্ধের আওতায় নেয়া হয়েছে।
বনবিভাগ সূত্রে জানা যায়, জুলাই ও আগষ্ট মাস সুন্দরবনে মাছের প্রজনন মৌশুম। সুন্দরবনের বনের মধ্যে দিয়ে ভোলা, বলেশ্বর, শ্যালা, পশুরসহ ১৩টি বড় নদ-নদী ও ৪৫০টি ছোট খাল প্রবাহিত হয়েছে। এ সব নদী ও খালে ভেটকী, রূপচাঁদা, দাঁতিনা, চিত্রা, পাংগাস, লইট্যা, ছুরি, মেদ, পারসে, পোয়া, তপসে, লাক্ষ্মা, কৈ, মাগুর, শোল, কাইন, বাইম, মাগুর, রূপালী ইলিশসহ ২১০ প্রজাতির সাদামাছ, গলদা, বাগদা, চাঁকা, চালী, চামীসহ ২৪ প্রজাতির চিংড়ী, বিশ^খ্যাত শিলা কাঁকড়াসহ ১৪ প্রজাতির কাঁকড়া,৪৩ প্রজাতির মালাস্কা ও ১ প্রজাতির লবস্টার পাওয় যায়। এ ছাড়াও রয়েছে বিলুপ্ত প্রায় প্রজাতির ইরাবতীসহ ৬ প্রজাতির ডলফিন। জুলাই ও আগস্ট মাস মাছ ও জলজ প্রাণির বেশির ভাগেরই প্রজননের সময়। এই সময়ে সুন্দরবনের ছোট ছোট খালে মাছের আধিক্য বেশি থাকার সুযোগে এক শ্রেণির অসাধু জেলে গোপনে ছোট খালে বিষ প্রয়োগ করে মৎস্য আহরণ করে থাকে। যার ফলে বিষক্রিয়ায় সুন্দরবনের জলজ ও বন্যপ্রাণি এবং বনজ সম্পদ দীর্ঘ মেয়াদী ক্ষতির মুখে পড়ছে। মাছের নিরাপদ প্রজনন ও সুন্দরবন সুরক্ষার জন্যই ১ জুলাই থেকে ৩১ আগষ্ট পর্যন্ত দুইমাস মৎস্য আহরণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জ কর্মকর্তা (এসিএফ) মো.জয়নাল আবেদীন বলেন, জেলেদের সতর্কতার জন্য ইতোমধ্যে শরণখোলা রেঞ্জের ৬০ টি খালের প্রবেশ মুখে লাল পতাকা স্থাপন করা হয়েছে। এই দুই মাস নির্দ্দিষ্ট করে দেওয়া ২৫ ফুটের অধিক প্রস্থের খাল ও নদী এ নিষেধাজ্ঞার আওতামুক্ত থাকবে । বড়-বড় নদী গুলো থেকে মাছ আহরণের জন্য জেলেদের সীমিত আকারে পাস-পারমিট দেওয়া হবে। সার্বক্ষণিক নজরদারিতে বনবিভাগের পাশাপাশি সুন্দরবন সহব্যবস্থাপনা কমিটি, সিপিজি, ভিটিআরটি, ওয়াইল্ড টিমের সদস্য নিয়োজিত থাকবে।
সুন্দরবন পূর্ব বনবিভাগের বিভাগীয় বনকর্মকর্তা (ডিএফও) মো. মাহমুদুল হাসান মুঠোফোনে এসব তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, মাছের প্রজনন বৃদ্ধির জন্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে সুন্দরবনের ছোট ছোট খালে ১ জুলাই থেকে ৩১ আগষ্ট পর্যন্ত মাছ ধরা নিষিদ্ধ ঘোষনা করা হয়েছে। নিষিদ্ধ সময়ে উল্লেখিত খাল গুলোতে যাতে কেউ ঢুকতে বা মাছ ধরতে না পারে সেজন্য কঠোর নজরদারী করবে সুন্দরবন বিভাগ।