১০% প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যে দুর্নীতি দমনের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

0
413

টাইমস ডেস্ক : ‘উন্নত সমৃদ্ধ’ দেশ হওয়ার পথে ১০ শতাংশ জিডিপি প্রবিৃদ্ধির লক্ষ্য অর্জনে দুর্নীতির মূলোৎপাটন করতে সরকারের বার্তা প্রশাসনের তৃণমূল পর্যন্ত পৌঁছে দিতে কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেছেন, দুর্নীতির ‘প্রয়োজন’ যাতে না হয় সেজন্য সরকার বেতন-ভাতা, সুযোগ-সুবিধা বাড়িয়ে দিয়েছে। এখন পরিবর্তন আনতে হবে মানসিকতায়; দুর্নীতি হলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিতে হবে। টানা তৃতীয় মেয়াদে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়ার পর বৃহস্পতিবার প্রথমবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে এসে কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে এই নির্দেশনা দেন সরকারপ্রধান।
গত ৭ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়ে নতুন মন্ত্রিসভা গঠন করেন শেখ হাসিনা। এবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয় এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় নিজের হাতে রেখেছেন তিনি।
জনপ্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে শেখ হাসিনা বলেন, ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ৭ দশমিক ৪ শতাংশ ধরা হলেও অর্জিত হয়েছে ৭ দশমিক ৮৬ শতাংশ। আগামী পাঁচ বছরে প্রবৃদ্ধির হার সরকার ১০ শতাংশে নিয়ে যেতে চায়। আমি বলব, আমরা যে লক্ষ্য স্থির করেছি, সেটা আমরা করতে পারব। সেজন্য দরকার সুশাসন। দরকার দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন গড়ে তোলা।
শেখ হাসিনা বলেন, যেহেতু আমি বেতন, ভাতা, সুযোগ-সুবিধা এত বেশি বৃদ্ধি করে দিয়েছি, সেক্ষেত্রে আমি মনে করি যে এখন আর ওই দুর্নীতির প্রয়োজন নেই, যা প্রয়োজন সেটাতো আমরা মেটাচ্ছি। তাহলে দুর্নীতি কেন হবে?
এখানে মানুষের মন-মানসিকতার পরিবর্তন করতে হবে এবং সুনির্দিষ্ট একটা নির্দেশনায় আপনাদের যেতে হবে একেবারে তৃণমূল পর্যায় পযন্ত। কেউ যদি দুর্নীতি করে, সঙ্গে সঙ্গে তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। দ্রুত বিকাশমান বাংলাদেশের অর্থনীতি আকারের দিক দিয়ে এখন বিশ্বের ৪১তম অবস্থানে উঠে এসেছে। জিডিপির আকার দাঁড়িয়েছে ২৭৫ বিলিয়ন ডলার।
বিশ্বের অষ্টম জনবহুল দেশ বাংলাদেশ গত এক দশকে ৬.৩ শতাংশের বেশি হারে জিডিপি প্রবৃদ্ধি পেয়েছে। মাথাপিছু আয় বাড়ায় বাংলাদেশ ইতোমধ্যে বিশ্ব ব্যাংকের বিবেচনায় নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর ইকোনমিকস অ্যান্ড বিজনেস রিসার্চ ‘সিইবিআর’ বলছে, অর্থনীতির এই গতি ধরে রাখতে পারলে ২০৩৩ সালে বাংলাদেশ হবে বিশ্বের ২৪তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সরকার অর্থনৈতিক ব্যবস্থার আধুনিকায়নে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিলেও ব্যাপক মাত্রায় দুর্নীতি এং রাজনৈতিক অস্থিরতা বাংলাদেশের অগ্রগতির ক্ষেত্রে বড় দুটি ঝুঁকির বিষয় হয়ে রয়েছে বলে সিইবিআরের গবেষণায় উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও সাম্প্রতিক সময়ে প্রায় প্রতিদিনই দুর্নীতির বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির কথা বলে আসছেন। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় পরিদর্শনে শেখ হাসিনা বলেন, দেশের মানুষের চাহিদার কথা মাথায় রেখে অর্থনীতির সুফল সবার কাছে পৌঁছে দিতে সুনির্দিষ্ট কর্মসূচি নিচ্ছে তার সরকার।
সেগুলি যদি আমরা যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করতে পারি, অবশ্যই আমরা (১০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি) অর্জন করতে পারব। সেক্ষেত্রে আমরা কতগুলো পদক্ষেপ নিয়েছি। সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ, মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি আমরা যেমন ঘোষণা দিয়েছি, তেমনি দুর্নীতির বিরুদ্ধেও জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা দিয়েছি।