হেফাজতের মিছিল-সমাবেশে রাজধানীতে যানজট-ভোগান্তি

0
165

টাইমস ডেস্ক:
রাজধানীতে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশ-বিক্ষোভ মিছিলকে কেন্দ্র করে রাস্তাঘাট বন্ধ থাকায় গতকাল সোমবার সকাল থেকে শুরু হয় যানজট। এতে জনভোগান্তি চরমে পৌঁছায়। যানবাহন চলাচল না করায় বেশিরভাগ মানুষকে হেঁটে গন্তব্যে যেতে দেখা যায়। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ফ্রান্সে মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সা.)-এর ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শনের প্রতিবাদে গতকাল সোমবার সকাল ১০টা থেকে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেট এলাকায় হেফাজতের হাজার হাজার নেতাকর্মী জমায়েত হন। সকাল সাড়ে ১০টায় এ বিক্ষোভে অংশ নেন কওমি মাদরাসার ছাত্র-শিক্ষকরা। হেফাজতে ইসলামের বিক্ষোভ-সমাবেশকে কেন্দ্র করে সম্ভাব্য রাস্তাঘাট আগেই বন্ধ ও ডাইভারশন করে দেয় পুলিশ। যে কারণে বিক্ষোভ মিছিল শুরুর আগেই সড়কে আটকে যায় সব যানবাহন। হেফাজতের মহাসচিব জুনায়েদ বাবুনগরী ও ঢাকা মহানগর হেফাজতে আমির নূর হোসেন কাসেমীর অংশগ্রহণে বিক্ষোভ মিছিলটি দুপুর সোয়া ১২টায় বায়তুল মোকাররম থেকে ফরাসি দূতাবাস ঘেরাও করার উদ্দেশ্যে বের হয়। মিছিল শুরু হবার পর নিরাপত্তাজনিত কারণে পথচারীদের চলাচল আটকে দেয় পুলিশ। এ ছাড়া সড়কে যানজট তীব্র আকার ধারণ করে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়ে মানুষ। হেফাজতের সমাবেশের কারণে সকাল ১০টা থেকেই রাজধানীতে তীব্র যানজট শুরু হয়। ১২টার পরপরই স্থবির হয়ে পড়ে কাকরাইল, বিজয়নগর, পল্টন মতিঝিল, যাত্রাবাড়ী, গুলিস্তান, শাহবাগ, শাহজাহানপুর, মালিবাগ, মৌচাক, মগবাজার, বাড্ডা, রামপুরাসহ নগরীর দক্ষিণাংশের বেশিরভাগ এলাকা। গতকাল সোমবার দুপুর ১২টায় জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে ফ্রান্স দূতাবাস ঘেরাও কর্মসূচি শুরু হয়। হেফাজতের বাবু নগরী বলেন, আমি সব মুসলিম দেশের রাষ্ট্র প্রধানদের কাছে দাবি জানাব, আপনারা ফ্রান্সের সঙ্গে কূটনীতিক সম্পর্ক ছিন্ন করুন। ইমানি দাবি, আপনারা ফ্রান্সের যাবতীয় পণ্য বর্জন করুন। ব্যবসায়ীদের কাছে অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, “াপনাদের ইমানি শক্তি থাকলে ফ্রান্সের পণ্য ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান থেকে ফেলে দিন। বিশ্ব মুসলিম দেশগুলো এবং বাংলাদেশ সরকারকে তিনি বলেন, যারা আল্লাহ রাসুল ও কোরআনের সঙ্গে বেয়াদবি করবে তাদের মৃত্যুদ-ের বিধান রেখে আইন পাস করুন। সভাপতির বক্তৃতায় ঢাকা মহানগর হেফাজতের সভাপতি আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী বলেন, ফ্রান্স সব মুসলমানের ইমানে আগুন জালিয়ে দিয়েছে। এ আগুন নেভানোর একমাত্র পথ ফ্রান্সের রাষ্ট্রপতিকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে। যদি ক্ষমা না চান, তাহলে এ আগুনে পুড়ে ফ্রান্স ছারখার হয়ে যাবে। তিনি অবিলম্বে বাংলাদেশের ফ্রান্স দূতাবাস বন্ধ করে সংসদে নিন্দা প্রস্তাব পাসের আহ্বান জানান। সমাবেশ শেষে একটি বিশাল মিছিল ফ্রান্স দূতাবাস ঘেরাওয়ের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। মিছিলে হাজার হাজার মানুষ অংশ নেয়। দুপুর পৌনে ১টায় মিছিলটি শান্তিনগর পৌঁছালে পুলিশ আটকে দেয়। পরে সেখানে মোনাজাতের মাধ্যমে কর্মসূচির সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়। সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন- হেফাজত নেতা শাহ আতাউল্লাহ ইবনে হাফেজ্জী, জুনায়েদ আল হাবিব, মাওলানা নুরুল ইসলাম, আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ হাসান, মাওলানা মাহফুজুল হক, মাওলানা আবদুর রব ইউসুফী, মাওলানা মামুনূল হক, ড. আহমদ আবদুল কাদের, মাওলানা হাবিবুল্লাহ মিয়াজি, মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী, মাওলানা হাসান জামিল প্রমুখ। মসমাবেশ থেকে ঢাকায় ‘মুর্তি বানানোর’ প্রতিবাদে ১৩ নভেম্বর বাদ জুমা বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।