সেনাপ্রধানের মেয়াদ বৃদ্ধি, ইমরানের প্রজ্ঞাপন আটকে দিলেন আদালত

0
265

খুলনাটাইমস বিদেশ : পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়ার মেয়াদ তিন বছর বৃদ্ধি করে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান যে প্রজ্ঞাপন জারি করেছিলেন দেশটির সুপ্রিম কোর্ট তা তা স্থগিত করে দিয়েছেন। গত মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্ট ওই প্রজ্ঞাপন বুধবার আদালতের শুনানি না হওয়া পর্যন্ত স্থগিত করার ঘোষণা দেন। সেনাপ্রধানের মেয়াদ বৃদ্ধি করে গত ১৯ শে আগস্ট প্রজ্ঞাপনটি জারি করে ইমরান খানের সরকার। কিন্তু দ্য জুরিস্টস ফাউন্ডেশনের এক আবেদনের শুনানিতে মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি সাঈদ খোসা এমন সিদ্ধান্ত দেন। প্রধান বিচারপতি তার পর্যবেক্ষণে বলেছেন, সেনাপ্রধানের মেয়াদ বৃদ্ধি অনুমোদন যথার্থভাবে হয়নি। প্রধান বিচারপতির এমন সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী, কেন্দ্রীয় সরকার ও সেনাপ্রধান জেনারেল কামার জাভেদ জেনারেল বাজওয়াকে নোটিশ দিয়েছে আদালত। পাকিস্তানের জাতীয় দৈনিক ডন এই খবর দিয়ে জানিয়েছে, আগামী ২৯ শে নভেম্বর পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়া মেয়াদ শেষ হবে। কথিত আছে পাকিস্তানের সব নির্বাচিত সরকার দেশটির ক্ষমতাধর সেনাবাহিনী দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। ইমরান খানের সরকারের বিরুদ্ধেও এই অভিযোগ আছে। তাইতো মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই গত ১৯ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান সেনাপ্রধান জেনারেল বাজওয়া ক্ষমতার মেয়াদ তিন বছরের বর্ধিত করে তা অনুমোদন করেন। ইমরান এমন সিদ্ধান্ত নেয়ার পর সে সময় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে এ-সংক্রান্ত একটি সংক্ষিপ্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। তাতে বলা হয়, বর্তমান ক্ষমতার মেয়াদ শেষ করার তারিখ থেকে নতুন মেয়াদে আরও তিন বছরের জন্য সেনাপ্রধান হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়াকে। ইমরান সরকারের এই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জে করে আদালতে পিটিশন দাখিল করে দ্য জুরিস্ট ফাউন্ডেশন। পাকিস্তানের সংবিধানের ১৮৪(৩) অনুচ্ছেদের অধীনে বিষয়টিকে জনস্বার্থ বিবেচনায় সেনাপ্রধানের মেয়াদ বৃদ্ধির আবেদনের বিষয়টি আমলে নেন প্রধান বিচারপতি। তবে তিনি পিটিশন প্রত্যাহারের আবেদন প্রত্যাখ্যান করেছেন। প্রধান বিচারপতি জানতে চান, ‘যদি ১৯ আগস্টই প্রজ্ঞাপন জারি করা হয় তাহলে প্রধানমন্ত্রী ২১ শে আগস্ট কিসের অনুমোদন দিয়েছেন?’ অ্যাটর্নি জেনারেল আনোয়ার মানসুর খান বলেন, ‘তাতে মন্ত্রিপরিষদের অনুমোদন প্রয়োজন ছিল। তাই মন্ত্রিপরিষদের অনুমোদনের পর প্রজ্ঞাপনে স্বাক্ষর করেন প্রধানমন্ত্রী।’ প্রধান বিচারপতি জানতে চান, ‘মন্ত্রিপরিষদের অনুমোদনের পর কি ওই প্রজ্ঞাপনে আবার প্রেসিডেন্ট অনুমোদন দিয়েছেন?’ অ্যাটর্নি জেনারেল না জানালে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘সেনাপ্রধানের মেয়াদ শুধু বাড়াতে পারেন প্রেসিডেন্ট। জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘আমরা আবার প্রেসিডেন্টের অনুমোদন নিতে পারি।’ অ্যাটর্নি জেনারেলের বক্তব্যের পর প্রধান বিচারপতি খোসা বলেন, মন্ত্রিপরিষদের ২৫ জন সদস্যের মধ্যে মাত্র ১১ জন সেনাপ্রধানের মেয়াদ বৃদ্ধিতে অনুমোদন দিয়েছেন। কিন্তু মন্ত্রিপরিষদের ১৪ জন তাদের কোনো মতামত জানাননি। তাদের এই নীরবতাকে কি সরকার একমত হিসেবে নিয়েছে?’ এ নিয়ে বুধবার শুনানি হবার কথা সুপ্রিম কোর্টে।