সিরিয়ার হাসপাতালে দফায় দফায় রুশ বিমান হামলা

0
293

খুলনাটাইমস বিদেশ : সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের বিরোধী পক্ষকে নিমূর্ল করতে হাসপাতাল গুলোতে রাশিয়ান বিমান বাহিনী দফায় দফায় বোমা হামলা চালিয়েছে বলে দ্য নিউইয়র্ক টাইমসের তদন্তে বলা হয়েছে। পূর্বে অপ্রকাশিত রাশিয়ান এয়ার ফোর্সের রেডিও রেকর্ডিং, বিমান-স্পটার লগস এবং সাক্ষী অ্যাকাউন্টগুলো বিশ্লেষণের মাধ্যমে নিউইয়র্ক টাইমস সিরিয়ার চারটি হাসপাতালে বোমা হামলায় রাশিয়ান বিমানের পাইলটের সময় সীমা বেঁধে দেওয়ার অনুমতির আলামত পায়। তদন্ত প্রতিবেদনে তাই বলা হচ্ছে, সিরিয়ায় বোমা হামলাতে রাশিয়র বিমান বাহিনীর সরাসরি সংযোগ রয়েছে। চার বছর থেকেই সিরিয়ায় রাশিয়ার বিমান হামলায় এখন পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা লাখের ওপর। নিহতদের মধ্যে শিশুও রয়েছে। বলা হচ্ছে, সিরিয়ার গৃহযুদ্ধের ক্ষেত্রে রাশিয়ার চার বছরের সামরিক হস্তক্ষেপ একটি ক্ষুদ্রতর অংশ। এর আগে সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় সীমান্তে তাদের বিরুদ্ধে চলা তুরস্কের সামরিক অভিযান রুখতে সেখানে সেনাবাহিনী পাঠাতে আসাদ সরকার সম্মত হয়েছে বলে জানিয়েছে কুর্দিরা। ওই এলাকার পরিস্থিতি ‘অসমর্থনযোগ্য’ হয়ে পড়েছে জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্র সেখান থেকে অবশিষ্ট সেনা প্রত্যাহার করার পর সিরিয়ার সরকারি বাহিনী ওই এলাকায় গেল। এই এলাকা নিয়ন্ত্রণকারী কুর্দিদের নেতৃত্বাধীন সিরিয়ান ডেমোক্রেটিক ফোর্সেস (এসডিএফ) যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান মিত্র। কুর্দিরা এই এলাকায় দীর্ঘদিনের অংশীদার যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সুরক্ষা হারানোর পর মিত্রপক্ষ পরিবর্তনের পদক্ষেপ নিয়েছে, এই সমঝোতা চুক্তি থেকে এমন ইঙ্গিতই পাওয়া যাচ্ছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। তবে সিরীয় সরকার কুর্দিদের কী প্রতিশ্রুতি দিয়েছে তা এখনো জানা যায়নি বলে জানিয়েছে বিবিসি। ২০১১ সালে সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। দেশটিতে চলমান সংকট নিয়ে বিপরীত মেরুতে অবস্থান নিয়েছে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র। বর্তমান প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। এজন্য তারা আসাদ সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণাকারী সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে অস্ত্র দিয়ে সহযোগিতা করছে। একইসঙ্গে তারা আইএসের বিরুদ্ধেও বিমান হামলা চালাচ্ছে। তবে আসাদ সরকারের দাবি, আইএসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের নামে যুক্তরাষ্ট্র মূলত আসাদবিরোধী বিদ্রোহীদের সহযোগিতা করতে সরকারি বাহিনীর ওপর হামলা চালাচ্ছে। রাশিয়া বাশার আল আসাদকে ক্ষমতায় দেখতে চায়। আসাদ সরকারের সমর্থনে রাশিয়া-ইরানও আইএস এবং বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে বিমান হামলা চালাচ্ছে। জাতিসংঘ বলছে, গৃহযুদ্ধের কারণে সিরিয়ায় অবরুদ্ধ হয়ে আছে চার লাখ মানুষ। তাদের কাছে কোনও ধরনের মানবিক সাহায্য পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে না। সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটসের তথ্য অনুযায়ী, সিরিয়া যুদ্ধে ২০১৭ সালের ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত নিহত হয়েছেন চার লাখ ৮০ হাজারের বেশি মানুষ।