শ্রমিকদের কর্মবিরতিতে খুলনাঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ত ৮ পাটকলের উৎপাদন বন্ধ

0
388

এম জ ফরাজী, খুলনা টাইমস:
বকেয়া মজুরির দাবিতে সাপ্তাহিক ছুটির কাটিয়ে ফের কর্মবিরতি পালন করেছে খুলনা-যশোর অঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ত ৮ টি পাটকলের শ্রমিকেরা। শনিবার ভোর ৬টায় এসব পাটকলের শ্রমিকরা কাজে যোগদান না করে দ্বিতীয়দিনের কর্মবিরতি শুরু করে। এর আগে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে রাতে পর্যন্ত প্লাটিনাম, দৌলতপুর, ক্রিসেন্ট, স্টার, ইস্টার্ণ, জেজে আই ও আলীম মোট ৭টি জুট মিলের উৎপাদন বন্ধ করে দেয় শ্রমিকেরা। এদিন চলেছে কার্পেটিং এবং খালিশপুর জুট মিল। তবে শনিবার ভোরে কার্পেটিং জুট মিলের শ্রমিকরা কাজে যোগদান করলেও খালিশপুর জুট মিলের কোন শ্রমিক উৎপাদন কাজে যোগ দেয়নি। ফলে বর্তমান খুলনা-যশোর অঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ত ৯টি পাটকলের মধ্যে ৮টিরই উৎপাদন কাজ বন্ধ রয়েছে। শনিবার সকালে শ্রমিকরা খালিশপুর বিআইডিসি রোডে টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেছে।
বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা জানায়, বৃহস্পতিবার সকাল সোয়া ৯টায় ৮ সপ্তাহের মজুরির দাবিতে প্লাটিনাম জুট মিলের উৎপাদন বন্ধ করে দেয় শ্রমিকরা। পরবর্তীতে সকাল ১০টায় ক্রিসেন্ট, দৌলতপুর ও স্টার জুট মিলের শ্রমিকরা তাদের মিলের উৎপাদন বন্ধ রেখে বিক্ষোভ শুরু করে। এ চারটি মিল বন্ধের সংবাদ পেয়ে দুপুর ২টার দিকে আটরা-গিলাতলা শিল্পাঞ্চলের ইস্টার্ণ এবং যশোর অভয়নগরের জে জে আই জুট মিলের উৎপান বন্ধ করে দেয় শ্রমিকরা। এদিন সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় আলীম জুট মিলের শ্রমিকরা উৎপাদন বন্ধ করে দেয়। আর শনিবার খালিশপুর জুট মিলের শ্রমিকরা উৎপাদন বন্ধ করে দিয়েছে।
পাটকলগুলোর সূত্র জানায়, খুলনা অঞ্চলের ৯টি রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলের মধ্যে ক্রিসেন্ট জুট মিল প্রায় ৫ হাজার, প্লাটিনাম সাড়ে ৪ হাজার, স্টার সাড়ে ৪ হাজার, দৌলতপুর জুট মিল সাড় ৬শ’, ইস্টার্ন ২ হাজার, আলীম দেড় হাজার, জেজেআই জুট মিল ২ হাজার ৬শ’ এবং খালিশপুর জুট মিল প্রায় সাড়ে চার হাজার শ্রমিক রয়েছেন। এসব পাটকলের শ্রমিকদের চার থেকে ১২ সপ্তাহের মজুরি বকেয়া রয়েছে।
প্লাটিনাম জুট মিলের শ্রমিক মোঃ মিজানুর রহমান বলেন, দীর্ঘদিন ধরে মজুরি না পাওয়ায় পরিবারের সদস্যদের নিয়ে অর্ধাহার-অনাহারে দিন কাটাতে হচ্ছে। টাকার অভাবে ঘরে চাল-ডাল বাজার নেই। ছেলে-মেয়েরা না খেয়ে আছে। শনিবার দ্বিতীয় দিনের মতো কর্মবিরতি চলছে।
ইস্টার্ণ জুট মিলের সিবিএ সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসেন বলেন, বর্তমানে ৮টি পাটকল বন্ধ রেখেছে শ্রমিকরা।
ক্রিসেন্ট জুট মিলের সাধারণ সম্পাদক মোঃ সোহরাব হোসেন বলেন, শ্রমিকদের চার থেকে ১২ সপ্তাহের মজুরি বকেয়া রয়েছে। এমন অবস্থায় শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ বিরাজ করছে। তারা হঠাৎ করেই বৃহস্পতিবার ৭টি পাটকলের উৎপাদন বন্ধ করে দেয়। শনিবার আরো একটি বন্ধ করেছে। শ্রমিকদর ন্যায্য পাওনা পরিশোধ মিল কর্তৃপক্ষ গড়িমসি করছে। দ্রত শ্রমিকদের মজুরি পরিশোধের দাবি জানান তিনি।