লিঁও নৈপুণ্যে নিউজিল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করলো অস্ট্রেলিয়া

0
313

খুলনাটাইমস স্পোর্টস : ডান-হাতি অফ-স্পিনার নাথান লিঁওর ঘুর্ণিতে টালমাটাল হয়ে সিডনি টেস্টেও হারলো স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়ার কাছে হারলো সফরকারী নিউজিল্যান্ড। সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টেস্টে নিউজিল্যান্ডকে ২৭৯ রানের বড় ব্যবধানে হারায় অস্ট্রেলিয়া। এই জয়ে তিন ম্যাচের সিরিজ ৩-০ ব্যবধানে জিতে কিউইদের হোয়াইটওয়াশ করলো অসিরা। ম্যাচে ১১৮ রানে ১০ উইকেট শিকার করেন লিঁও। পার্থে প্রথম টেস্ট ২৯৬ ও মেলবোর্নে দ্বিতীয় টেস্ট ২৪৭ রানে জিতেছিলো অস্ট্রেলিয়া। গত আগস্টে ইংল্যান্ডের সাথে অ্যাশেজে ২-২তে ড্রর পর পাকিস্তানের বিপক্ষে দুই ও এবার নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচের সিরিজ জিতলো অস্ট্রেলিয়া। বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশীপে ১০ ম্যাচে ৭জয়, ২হার ও ১টি ড্রতে ২৯৬ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে অস্ট্রেলিয়া। ৭ ম্যাচে ৭ জয়ে ৩৬০ পয়েন্ট নিয়ে এককভাবে টেবিলের শীর্ষে ভারত। প্রথম ইনিংস থেকে পাওয়া ২০৩ রানের লিডকে সাথে নিয়ে তৃতীয় দিন শেষে দ্বিতীয় ইনিংসে বিনা উইকেটে ৪০ রান করেছিলো অস্ট্রেলিয়া। ফলে ১০ উইকেট হাতে নিয়ে ২৪৩ রানে এগিয়ে যায় অসিরা। দুই ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার ২৩ ও জো বার্নস ১৬ রানে অপরাজিত ছিলেন। চতুর্থ দিন সকালে ব্যাট হাতে নিউজিল্যান্ডের বোলারদের উপর ছড়ি ঘুড়িয়েছেন ওয়ার্নার। ৮৪ ম্যাচের টেস্ট ক্যারিয়ারে ২৪তম সেঞ্চুরি তুলে নেন তিনি। ওয়ার্নারের সেঞ্চুরির সাথে হাফ-সেঞ্চুরি তুলেছেন মার্নাস লাবুশেন। ওয়ার্নার-লাবুশেনের ব্যাটিং দৃঢ়তায় ২ উইকেটে ২১৭ রানে দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষনা করে অস্ট্রেলিয়া। ৯টি চারে ১৫৯ বলে অপরাজিত ১১১ রান করেন ওয়ার্নার। ৩টি চারে ৭৪ বলে ৫৯ রান করেন লাবুশেন। প্রথম ইনিংসে ২১৫ রান করেছিলেন লাবুশেন। অস্ট্রেলিয়া ইনিংস ঘোষণায় চা-বিরতির আগে ম্যাচ জয়ের জন্য ৪১৬ রানের বড় টার্গেট পায় নিউজিল্যান্ড। জবাব দিতে নেমে অস্ট্রেলিয়ার পেসার মিচেল স্টার্কের বলে দলীয় ৪ রানের মধ্যে প্যাভিলিয়নে ফিরেন নিউজিল্যান্ডের দুই ওপেনার ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক টম লাথাম ও টম ব্লান্ডেল। লাথাম ১ ও ব্লান্ডেল ২ রান করে ফিরেন। এরপর লিঁওর ঘূর্ণি ও কামিন্সের পেস সামলাতে না পেরে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন জিত রাভাল-রস টেইলর-গ্লেন ফিলিপস। ফলে ৩৮ রানে পাঁচ উইকেট হারিয়ে ম্যাচ হারের পথ দেখে ফেলে নিউজিল্যান্ড। রাভাল ১২ ও ফিলিপস ০ রান করে লিঁওর শিকার হন। ২২ রান করা টেইলরকে থামান কামিন্স। অস্ট্রেলিয়ার বোলারদের তোপে নিউজিল্যান্ডের উইকেট পতনের স্রােতটা অবশেষে থামান উইকেটরক্ষক বিজে ওয়াটলিং ও কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম। স্ট্রাইকে গেলে কোন প্রকার ঝুঁকি নেননি ওয়াটলিং। তবে দ্রুত রান তোলার চেষ্টা করেন গ্র্যান্ডহোম। ষষ্ঠ উইকেটে জুটি বেঁধে দলের স্কোর শতরানে নিয়ে যান ওয়াটলিং-গ্র্যান্ডহোম। জমে যাওয়া জুটিতে ফাটল ধরান লিঁও। ৫টি চার ও ১টি ছক্কায় ৬৮ বলে ৫২ রান করা গ্র্যান্ডহোম শিকার হন লিঁওর। এরপর নিউজিল্যান্ডের শেষের দিকের দুই ব্যাটসম্যান টড অ্যাস্টলকে ১৭ রানে লিঁও এবং উইলিয়াম সমারভিলকে ৭ রানে স্টার্ক আউট করে অস্ট্রেলিয়াকে জয়ের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যান। আর নবম ও শেষ ব্যাটসম্যান ওয়াটলিংকে ব্যক্তিগত ১৯ রানে ফিরিয়ে নিউজিল্যান্ডকে ১৩৬ রানেই গুটিয়ে দেন লিঁও। শেষ ব্যাটসম্যান ম্যাট হেনরি আহত অবসর ছিলেন। প্রথম ইনিংসে ৬৮ রানে ও দ্বিতীয় ইনিংসে ৫০ রানে ৫টি করে উইকেট নেন লিঁও। টেস্ট ক্যারিয়ারে তৃতীয়বারের মত ১০ উইকেট নেন লিঁও। তবে ম্যাচ ও সিরিজ সেরা হয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার লাবুশেন। টেস্টের পর এবার ওয়ানডে সিরিজের লড়াই রয়েছে অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডের। যা ১৩ মার্চ থেকে শুরু হবে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
অস্ট্রেলিয়া : ৪৫৪ ও ২১৭/২ ডি, ৫২ ওভার (ওয়ার্নার ১১১*, লাবুশেন ৫৯, অ্যাস্টল ১/৪১)।
নিউজিল্যান্ড : ২৫১ ও ১৩৬, ৪৭.৫ ওভার (গ্র্যান্ডহোম ৫২, টেইলর ২২, লিঁও ৫/৫০)।
ফল : অস্ট্রেলিয়া ২৭৯ রানে জয়ী।
ম্যাচ সেরা : মার্নাস লাবুশেন (অস্ট্রেলিয়া)।
সিরিজ সেরা : মার্নাস লাবুশেন (অস্ট্রেলিয়া)।