রোনালদোয় মাতামাতি ভালো লাগছে না জুভেন্টাস কোচেরই

0
471

স্পোর্টস ডেস্কঃ

ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোকে পেয়ে ইতালির ফুটবলমহলে কী আনন্দ! রোনালদোর ছোঁয়ায় ঝিমিয়ে পড়া ইতালিয়ান ফুটবল আবার জেগে উঠবে—ফুটবলপণ্ডিত থেকে শুরু করে দেশটির সাধারণ ফুটবল-ভক্ত—সবার মুখে একটাই কথা। রিয়াল মাদ্রিদ থেকে পর্তুগিজ ফরোয়ার্ড জুভেন্টাসে নাম লেখানোর পর থেকেই ইতালিয়ানরা যেন সপ্তম স্বর্গে।

জিনেদিন জিদান, পাওলো মালদিনি, আন্দ্রেই শেভচেঙ্কো, কাকা…একটা সময় ছিল তারকা ফুটবলারদের আলোয় ঝলমলে ছিল ইতালির ফুটবল। বিশ্বের সেরা লিগগুলোর তালিকায় ওপরের দিকেই ছিল সিরি ‘আ’র অবস্থান। কিন্তু কয়েক বছর ধরে সেই সিরি ‘আ’ই কত ম্যাড়মেড়ে! তারকাদ্যুতিই বা কোথায়! পাঁচটি ব্যালন ডি’অর জেতা রোনালদোকে পেয়ে ইতালির ফুটবলমহল তো উচ্ছ্বাসে ভাসবেই।

তবে জুভেন্টাস কোচ মাসিমিলিয়ানো অ্যালেগ্রি সবাইকে একটু সতর্কই করে দিয়েছেন। তাঁর কথার সুর অনেকটা এ রকম—এত উচ্ছ্বাস ভালো নয়। জুভেন্টাস সমর্থকদের উদ্দেশে অ্যালেগ্রি যা বলেছেন, তার সারমর্ম দাঁড়ায়—এবার শিরোপা জেতা আরও কঠিন হবে জুভদের, ‘ক্রিস্টিয়ানোর আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা অনেক। আমাদের সে খুব সাহায্যও করবে। কিন্তু আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। আমাদের মাতামাতিটা একটু বেশিই মনে হচ্ছে। এত মাতামাতি ভালো নয়। অন্য বছরগুলোর তুলনায় এবার শিরোপা জেতা আরও কঠিন হবে।’

গত মৌসুমে টানা সপ্তমবারের মতো সিরি ‘আ’র শিরোপা জিতেছে জুভেন্টাস। রোনালদোকে পাওয়ায় জুভ সমর্থকেরা স্বপ্ন দেখছে টানা অষ্টম স্কুদেত্তোর। আর ২০১৬-১৭ মৌসুমে খুব কাছে গিয়েও জিততে না পারা চ্যাম্পিয়নস লিগের শিরোপাও এবার জুভকে ধরা দেবে। সর্বশেষ ১৯৯৫-৯৬ মৌসুমে চ্যাম্পিয়নস লিগ জেতা জুভেন্টাসকে ২০১৬-১৭ মৌসুমের ফাইনালে হারাতে বড় ভূমিকা রেখেছিলেন রোনালদো। রিয়ালের ৪-১ গোলের জয়ে করেছিলেন জোড়া গোল।

সেবার জুভেন্টাসের স্বপ্ন ভেঙে দেওয়া রোনালদোকে পেয়ে নতুন করে স্বপ্ন দেখারই কথা জুভ সমর্থকদের। কিন্তু অ্যালেগ্রি সতর্কসংকেত শোনাচ্ছেন কেন? যুক্তি আছে জুভেন্টাস কোচের, ‘আমরা অনেক ম্যাচ জিতেছি, তাই প্রতিপক্ষ আরও বেশি আক্রমণাত্মক থাকবে। এ ছাড়া আমাদের তার (রোনালদো) মতো একজন অসাধারণ খেলোয়াড়ও আছে। প্রতিপক্ষ এই চ্যালেঞ্জটা নেবে এবং (আমাদের হারানোর জন্য) বেশি অনুপ্রাণিত থাকবে।’

রিয়ালের হয়ে চারটি চ্যাম্পিয়নস লিগসহ ১৫টি শিরোপা জিতেছেন রোনালদো। এমন একজন খেলোয়াড়কে দলে পেয়ে তিনি নিজেও যে খুশি, সেটাও বলতে ভোলেননি অ্যালেগ্রি, ‘তাকে দলে পেয়ে আমি কতটা আনন্দিত, তা আগেই বলেছি। কিন্তু এখন ফুটবল নিয়ে কথা বলতে হবে।’
সিরি ‘আ’তে শিয়েভোর বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে শুরু হবে রোনালদোর জুভ-অভিযান। ঘরের মাঠ আলিয়াঞ্জ স্টেডিয়ামে জুভেন্টাসের নতুন ফরোয়ার্ডের অভিষেক হবে পরের সপ্তাহে, ২৬ আগস্ট। সিরি ‘আ’র সেই ম্যাচটি জুভেন্টাস খেলবে লাৎসিওর বিপক্ষে। ইউরোপের সফলতম দল রিয়ালের হয়ে ৪৩৮ ম্যাচ খেলে ৪৫০ গোল করা রোনালদো কি জুভেন্টাসেও আলো ছড়াবেন?

অ্যালেগ্রির বিশ্বাস, রিয়ালের মতো গোলের ফোয়ারা রোনালদো জুভেন্টাসেও ফোটাবেন। এটা সত্যি হলেই যে আসল আনন্দে ভাসবে জুভ সমর্থকেরা।