যেখান থেকে ছড়িয়ে পড়লো নতুন করোনা ভাইরাস

0
297

খুলনাটাইমস বিদেশ : দ্রুত ছড়িয়ে পড়া চীনের নতুন ‘করোনা ভাইরাস’ প্রথম ছড়িয়েছে দেশটির হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহান শহরে। ধারণা করা হয় স্থানীয় এক কাঁচা বাজার থেকে এ ভাইরাসটি ছড়িয়েছে। এ ঘটনার পর অনেকের নজরে এসেছে শহরটি। বেইজিং বা সাংহাইয়ের মতো সুপরিচিত না হলেও চীনের খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি মহানগর উহান। স্থানীয় সরকারের তথ্য মতে, উহান মহানগরে আনুমানিক ১ কোটি ১০ লাখ মানুষ বাস করে। বিশ্বের ৪২তম এবং চীনের সপ্তম বৃহত্তম শহর এটি। পশ্চিম সাংহাই থেকে ৮শ’ কিলোমিটার দূরে ইয়াংজে নদীর তীরে অবস্থিত উহান শহর, যার আয়তন প্রায় ৮ হাজার ৪৯৪ বর্গ কিলোমিটার। উহানের আয়তন ও জনসংখ্যাই বলে দেয় কীভাবে এত দ্রুত ছড়িয়ে পড়লো নতুন করোনা ভাইরাস। এ পর্যন্ত পাঁচশয়েরও বেশি মানুষ এ ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার নিশ্চিত খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ১৭ জনের। ইতোমধ্যে এ ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়েছে চীনের অন্য অঞ্চলসহ থাইল্যান্ড, তাইওয়ান, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ায়। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রেও এ ভাইরাসে আক্রান্ত এক ব্যক্তিকে শনাক্ত করা হয়েছে। আক্রান্ত ব্যক্তিদের সবাই সম্প্রতি উহান ভ্রমণ করেছেন বা সেখানে বসবাস করেন। এ সপ্তাহে চীনা নতুন বছর উদযাপন করতে চীনে যাচ্ছে লাখ লাখ মানুষ। এমন সময় বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া উহানে বসবাসরত মানুষদের শহরের বাইরে যাওয়ার ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। উহান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে লন্ডন, মস্কো, প্যারিস, রোম, নিউ ইয়র্ক, টোকিও, ব্যাংকক, সিওল, দুবাইসহ বিশ্বজুড়ে অনেক শহরে সরাসরি প্লেন চলাচল করে। মধ্য চীনে শুধু উহান তিয়ানহে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরেই পাঁচটি মহাদেশের সঙ্গে সরাসরি ফ্লাইট চালু রয়েছে। ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় বৃহস্পতিবার উহানের বহু ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ দেওয়ার আগ পর্যন্ত এসব ফ্লাইট বন্ধ থাকবে। এছাড়া, বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ট্রেন ও গণপরিবহন চলাচল। বিশ্বের অধিকাংশ দেশ চীন ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা বা বিশেষ সতর্কতা জারি করেছে। ভাইরাস সংক্রমণ রোধ করতে আপাতত অচল করে দেওয়া হয়েছে চীনের ব্যস্ততম মহানগর উহান। নতুন এ করোনা ভাইরাস মানুষের ও প্রাণীদের ফুসফুস সংক্রমণ করতে পারে। ভাইরাসজনিত ঠান্ডা বা ফ্লু’র মতো হাঁচি-কাশির মাধ্যমে মানুষ থেকে মানুষে ছড়িয়ে পড়ে এটি। এ ভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার প্রধান লক্ষণগুলো হলো: শ্বাসকষ্ট, জ্বর, কাশি, নিউমোনিয়া ইত্যাদি। শরীরের এক বা একাধিক অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ নিষ্ক্রিয় হয়ে আক্রান্ত ব্যক্তির মৃত্যু হতে পারে। সবচেয়ে আতঙ্কের বিষয় হলো ভাইরাসটি নতুন হওয়ায় এখনো কোনো ভ্যাক্সিন আবিষ্কার হয়নি। এ ভাইরাস সংক্রমণ থেকে বাঁচার একমাত্র উপায় সংক্রমিত ব্যক্তিদের থেকে দূরে থাকা।