যশোর বোর্ডে এইচএসসি পরীক্ষায় এবার পাসের হার কমেছে

0
471

সাইমুম মোর্শেদ:

এ বছর পাসের হার ৬০ দশমিক ৪০ শতাংশ। যা গত বছর ছিল ৭০ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ। এবার জিপিএ-৫ পেয়েছে ২ হাজার ৮৯ জন। গত বছর জিপিএ-৫ পেয়েছিল ২ হাজার ৪৪৭ জন।

এবারের যশোর বোর্ডের প্রকাশিত ফলাফলে দেখা গেছে, ২০১৮ সালে ১ লাখ ৯ হাজার ৬৯২ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছে ৬৬ হাজার ২৫৮ জন। এদের মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ২ হাজার ৮৯ জন। এ গ্রেডে ১২ হাজার ৩২৪ জন, এ মাইনাস গ্রেডে ১৬ হাজার ৫২৮ জন, বি গ্রেডে ২০ হাজার ২০৫ জন, সি গ্রেডে ১৪ হাজার ৮০২ জন ও ডি গ্রেডে ৩১০ জন উত্তীর্ণ হয়েছে। সবচেয়ে কম পাস করেছে মানবিক বিভাগের পরীক্ষার্থীরা। মানবিক বিভাগের পাসের হার ৫১ দশমিক ৮৬ শতাংশ। সবচেয়ে বেশি বিজ্ঞান বিভাগে ৮০ দশমিক ৯১ শতাংশ ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে ৬৯ দশমিক ৩৯ শতাংশ পরীক্ষার্থী পাস করেছে।

পাসের হার নিম্নমুখী হওয়ার কারণ প্রসঙ্গে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মাধব চন্দ্র রুদ্র বলেন, এবার প্রশ্ন ফাঁস রোধে সরকার কঠোর অবস্থানে ছিল। সকলের সহযোগিতায় প্রশ্ন ফাঁস ছাড়াই পরীক্ষা হয়েছে। ইংরেজির প্রশ্নপত্র কঠিন হয়েছিল। এ জন্য মানবিক বিভাগের পরীক্ষার্থীদের অধিকাংশ ইংরেজিতে ফেল করেছে। মানবিক বিভাগের ফেলের প্রভাব পড়েছে সার্বিক ফলাফলে। আর তাই পাসের হার কমেছে ১০ শতাংশ। তবে জিপিএ ৫ প্রাপ্তির সংখ্য তুলনামূলক ভাল হয়েছে। কয়েকশ জিপিএ-৫ কমলেও সার্বিকভাবে এটিই ভাল ফলাফল।

মাধবচন্দ্র রুদ্র আরও বলেন, ‘চলতি বছর যশোর বোর্ডের অধীন চারটি প্রতিষ্ঠান থেকে একজনও পাস করতে পারেনি। এগুলো হচ্ছে কুষ্টিয়ার গোরাপাড়া হাজী নূরুল হক কলেজ (পরীক্ষার্থী-১), নড়াইলের গোবরা মহিলা কলেজ (পরীক্ষার্থী-৮), খুলনার হাড্ডা পাবলিক কলেজ (পরীক্ষার্থী -৭) ও ঝিনাইদহের প্রগতি মহিলা কলেজ (পরীক্ষার্থী-১৯)।

তিনি আরো বলেন, ‘আমরা খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি, ঝিনাইদহের প্রগতি মহিলা কলেজ থেকে এবার যে ১৯ জন পরীক্ষা দিয়েছেন, তারা সবাই অনিয়মিত এবং প্রত্যেকেই ইংরেজিতে ফেল করেছেন।’

তবে, বোর্ডের অধীন ৬টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা শতভাগ পাস করেছে।

অন্যদিকে, যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডেএইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলে খুলনা জেলা সবারশীর্ষে রয়েছে।পাশের হার ৬৮.৪৫ ভাগ। গত বছর ছিলো ৭৮.৬৬ ভাগ।

বৃহস্পতিবার (১৯ জুলাই) দুপুরে প্রাপ্ত ফলাফলে দেখা গেছে, এবার খুলনা জেলার ৯৯টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে ২২হাজার ৬শ’ ৪৯ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণকরে। এরমধ্যে ১৩ হাজার ৯৮০ জন পাশ করেছে।

এবার খুলনার পর যশোরের পাশের হার ৬৩.৯৫ ভাগ, কুষ্টিয়ার পাশের হার ৬১.৪২ ভাগ, সাতক্ষীরার পাশের হার ৫৯.৯৬ ভাগ, বাগেরহাটের পাশের হার ৫৯.৬৭ ভাগ,ঝিনাইদহের পাশের হার ৫৭.৯৭ ভাগ, চুয়াডাঙ্গার পাশের হার ৫২.৯০ ভাগ,মেহেরপুরের পাশের হার ৫২.৬৯ ভাগ, নড়াইলের পাশের হার ৫২.৫৬ ভাগ ওমাগুরার পাশের হার ৪৯.৪০ ভাগ নিয়ে যথাক্রমেফলাফলের তালিকায় স্থান করে নিয়েছে।যশোর শিক্ষা বোর্ডের অধিনে এ দশটি জেলা।

খুলনা জেলা যশোর বোর্ডের মধ্যে সেরা হওয়ায় এখানকার কলেজগুলোর শিক্ষার্থীদের মধ্যে বাঁধ ভাঙ্গাউচ্ছাস লক্ষ্য করা গেছে। প্রচন্ড সূর্যের তাপদাহে অধিকাংশ কলেজে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদেরউপস্থিতি অনেকটা কম।

খুলনার সরকারি মজিদ মেমোরিয়াল সিটি কলেজজেলার মধ্যে সবার শীর্ষে রয়েছে। এ কলেজ থেকে ৮১৯ জনের মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৪১৫ জন শিক্ষার্থী। পাশের হার ৯৮ ভাগ।

গত বছরও এই কলেজটি জেলার মধ্যে প্রথম হয়।
গত বছর ৯০৪ জন পরীক্ষার্থী ছিলো। পাশের হার ৯৬.৩৫ভাগ। জিপিএ-৫ পেয়েছিলো ৩০০ জন।

এছাড়াও খুলনা পাবলিক কলেজে মোট পরিক্ষার্থী ৪০২ জন।টোটাল এ প্লাস ১২১ জন।অকৃতকার্য ৩ জন।
খুলনা বয়রা সরকারি মহিলা কলেজের পাশের হার ৬৬% পরিক্ষার্থী ৫২২ জন। এ প্লাস মাত্র ৬৫ জন।অকৃতকার্য ৪৩ জন।

খুলনা সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যাক্ষ রওশন আরা জানান, গতানুগতিক ভাবে এবারের রেজাল্ট আশানুরুপ হয় নাই। ইংরেজিতে ফেল করার কারণে যশোর বোর্ডের এবার মানবিক বিভাগে পাসের হারও খুব কম, বিজ্ঞান বিভাগে পাসের হার ৮১.৭২ হলেও মানবিকে তা মাত্র ৫৮.৯৬। এই ফলাফল গোটা ফলাফলের ওপর দারুণভাবে প্রভাব ফেলেছে। তবে, জিপিএ-৫ সামান্য কম হলেও ভালো শিক্ষার্থীদের ফলাফলে তা প্রভাব ফেলেনি।