এম.পলাশ শরীফ, মোড়েলগঞ্জ থেকে:
বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জের বারইখালী ইউনিয়নের উত্তর সুতালড়ী গ্রামের ১০৪ বছরের ছখিনা বিবি বয়সের ভারে বার্ধ্যকতা তাকে দমাতে পারেনী লাঠি ভর দিয়ে এখন ও হাটছে ঠক ঠক করে। নেই মাথা গোঁজার ঠাই। স্বামী আফেল উদ্দিন মারা গেছেন ১৯৭৩ সালে। মৃত্যুর পরে ভিটেমাটি টুকুও কেঁড়ে নিয়েছে প্রভাবশালীরা। তার একটাই প্রশ্ন? প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের জন্য এতোকিছু দিচ্ছে তার পরও আমারমত অসহায় কেন ভিজিডি, ভিজিএফ, ১০ টাকার চালসহ বিভিন্ন সরকারি সুযোগ-সুবিধা থেকে বাদ পড়ছি। আর কত বয়স হলে পাবো বয়স্ক-বিধবা ভাতা।
এ রকম নানা প্রশ্ন ছিলো সংবাদকর্মীদের কাছে তার। হাতে রয়েছে একটি ব্যাগ ব্যাগের মধ্যে ছিলো জমিজমা সংক্রান্ত কাগজপত্র সেটেলমেন্টের বারান্দায় লাঠি ভরদিয়ে খুঁজতেছেন তার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও মেম্বারকে। বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টায় অফিস পাড়ায় বার্ধ্যক ছখিনা বেগম(১০৪) আরো জানান, স্বামীর পৈত্রিক বসতভিটার ১ বিঘা ৫ শতক জমি খাচ্ছেন তার স্বামীর ভাইয়ের ছেলেরা ও কর্তৃপয় স্থানীয় প্রভাবশালীরা। গোয়ালবাড়িয়া গ্রামের ৪ বিঘা বিলীন জমি ভোগদখল করছেন। ওখানের স্থানীয় প্রভাবশালীরা। কাগজপত্র তৈরি করে নিয়েছেন তারা। সেটেলমেন্টে রেকড় করাতে পারেনি। লেখা পড়া না জানলেও ঘুছিয়ে বলতে পারেন জমির হিসাব নিকাশ ছখিনা বেগম। দেশ স্বাধীনতার পরে স্বামী আফেল উদ্দিন মৃত্যুতে এ জমিজমা বিভিন্ন লোকজনে ভাগবাটোয়ারা করে দখল করেছেন। ছখিনা বেগমের জিজ্ঞেসায় তারা বলেন তার স্বামী বিক্রি করে গেছে। সংবাদকর্মীদের পেয়ে তার কাছে মনে হয়েছিলো দীর্ঘদিনের মনের ভিতরে জমানো কষ্টের কথাগুলো প্রকাশ করতে পেরেছে। দু’ চোঁখ বেয়ে ছল ছল করে অঁঝরে পানি ঝরছে।
খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, বারইখালী ইউনিয়নের উত্তর সুতালড়ী গ্রামের ৪নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মৃত. আফেল উদ্দিন শেখের স্ত্রী ছখিনা বেগম (১০৪), তার ৩ ছেলে ১ মেয়ে বড় ছেলে আ. হামিদ শেখ খুলনায় শ্রমীকের কাজ করেন। মেঝো ছেলে আব্বাস আলী শেখ মানুষিক রোগী ১ বছর ধরে নিখোঁজ রয়েছে। ছোট ছেলে জাহাঙ্গীর আলী শেখ শহরে ভ্যান চালিয়ে জীবনযাপন করেছে মাঝের মধ্যে মা ছখিনা বেগমকে ভরন পোষনের জন্য ৩-৪ শ’ টাকা পাঠিয়ে দেন। তদরুব বড় ছেলেও মাকে মাঝে মধ্যে ৫শ’ টাকা পাঠিয়ে দেন। দরিদ্র নাতি সবুজ শেখের ঘরে থাকেন ছখিনা বিবি।
ছখিনা বেগমের আকুতি আমাদেরমত অসহায়দের গরীবের মা শেখ হাসিনার দেওয়া বয়স্ক ভাতা ও মাথা গোজার একটু ঠাই মৃত্যুর পরে নিজের যায়গায় কবর হতো তাহলো মনে আর কষ্ট থাকতো না।
বারইখালী ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মো. শফিকুর রহমান লাল বলেন, তার ইউনিয়নে ৮শ’ ৪৫ জন বয়স্কভাতা ও ৩২৭ জন বিধাব ভাতা পাচ্ছেন। এ বছরে নতুনভাবে ১শ’ ৯জন বয়স্ক ভাতা ৩২ জন বিধবা ভাতা আবেদন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। তাবে ছখিনা বেগমের বিষয়টি আমার জানানেই। সে ভাতা নাপেয়ে থাকলে তাকে ভাতা দেওয়া হবে।
উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা মো. রায়হান কবীর বলেন, ছখিনা বেগমের বয়স্ক ভাতার বিষয়টি খোজ খবর নেওয়া হয়েছে। শিঘ্রই তাকে ভাতার আওতায় আনা হচ্ছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. কামরুজ্জামান বলেন, বারইখালী ইউনিয়নের বার্ধক্য ছখিনা বেগমের বয়স্ক ভাতার না পাওয়ার বিষয়টি খোঁজ খবর নিয়ে দেখা হচ্ছে। তকে শুধু বয়স্ক ভাতা নয় সকল সুযোগ সুবিধার আওতায় আনা হবে।