মোড়েলগঞ্জে স্লুইজগেট খুলে লবণ পানি তুলছেন একটি মহল : কৃষকের ক্ষতি

0
340

এম.পলাশ শরীফ, মোড়েলগঞ্জ থেকে:
বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জের দু’টি ইউনিয়নের সিমান্তে হেড়মা স্লুইজগেট খুলে দিয়ে লবণ পানি তুলছেন একটি প্রভাবশালীরা মহল। খালে বাঁধ দিয়ে জাল পেতে ধরছে মাছ। ফসলের ব্যপক ক্ষতিসাধন। প্রশাসন নীরব।
সরেজমিনে শনিবার পঞ্চকরণ ও তেলীগাতি ইউনিয়ন এ দু’ ইউনিয়নে জনগুরুত্বপূর্ন হেড়মা স্লুইজগেটটি দীর্ঘদিন ধরে এলাকার একটি প্রভাবশালী মহল লবণ পানি প্রবেশ করিয়ে ৩ হাজার হেক্টর আবাধি ফসলি জমি’র ব্যাপক ক্ষতিসাধন করছে। শীতকালিন সবজি লাউ, শসা, ফুল কপি, বাঁধাকপি, বড়বটিসহ বিভিন্ন প্রজাতির সবজি উৎপাদন কমে যাচ্ছে দিন দিন।
রেকডীয় খাঁল তেলাগাতী-ডুলীগাতি হেড়মা মহিষচরণী ও উত্তর মহিষচরণী খালগুলোতে স্থায়ী ভিত্তিতে বাঁধ দিয়ে পাতা হচ্ছে পাটাজাল, গড়াজালসহ বিভিন্ন প্রজাতির শতাধিক জাল। প্রতিটি খাঁলে রয়েছে ২০/৩০টি জাল। এক সময় এসব খাঁল থেকে জনসাধারণের যোগাযোগের মাধ্যম নৌকা ও ট্রলার চলাচল করতো এখন আর সেই খাল থেকে চলছেনা নৌকা-ট্রলার। নতুন প্রজন্মের কাছে এগুলো গল্পের মত। প্রভাবশালীরা দখলে নিয়েছেন পুরো খাঁল। স্থানীয়দের রয়েছে চরম ক্ষোভ। কাদের ছত্রছায়ায় তথাকথিত এসব প্রভাবলাশীরা সরকারি নিয়ম নীতি লঙ্গন করে বাঁধ সৃষ্টি করে রেখেছে তাদের ব্যক্তি সার্থে। স্থানীয়দের অভিযোগ রয়েছে এ প্রভাশালীরা চেয়ারম্যানদের কারো কারো কাছের লোক।
পঞ্চকরণ ইউনিয়নের মহিষচরণী ও উত্তর মহিষচরণী রেকডীয় খাঁল একাই দখল করে নিয়েছেন তথাকথিত এশারাত শেখ। তিনি নিজেই বাঁধ দিয়ে দু’টি খালে ১০/১২টি জাল ফেলছেন। তেলীগাতি ইউনিয়নের চৌকিদার মনির হোসেন হাওলাদার স্লুইজগেটেই নিয়মিত জাল ফেলে মাছ ধরছেন। বিভিন্ন প্রজাতির গুড়া মাছ করছে বিনষ্ট।
এ সর্ম্পকে পঞ্চকরণ ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক মজুমদার বলেন, খাঁলে বাঁধ সৃষ্টি করে যারা অবৈধভাবে জাল ফেলছেন তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবহিত করা হবে। ইর্তোপূর্বে কয়েকটি খাঁলে তিনি নিজেও অভিযান চালিয়েছেন।
অপরদিকে তেলীগাতি ইউপি চেয়ারম্যান মোর্শেদা আক্তার বলেন, ৩-৪ বছর ধরে স্লুইজগেটের বোট পাচ দুটি মরিচা ধরে অকেজো অবস্থায় পড়ে রয়েছে। পানি প্রবেশ করছে অহ রহ। বিষয়টি তিনি স্থানীয় সংসদ সদস্যের মাধ্যেমে পানিউন্নয়ন বোর্ডকে অবহিত করেছেন। কিন্তু অদ্যবধি পর্যন্ত হয়নি কোন ব্যবস্থা।
উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা প্রণব কুমার বিশ্বাস বলেন, অভিযান চলাকালিন কোন প্রকার জাল ফেলে মাছ ধরা যাবেনা। তবে পর্যায়ক্রমে খাঁলগুলোতেও অভিযান করা হবে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাসুম হোসেন পলাশ বলেন, পঞ্চকরণ ও তেলীগাতি দু’ ইউনিয়নের স্লুইজগেট খুলে লবণ পানি তোলার বিষয়টি তিনি অবহিত হয়েছেন। ইতোমধ্যে ইউনিয়ন সহকারি কৃষি কর্মকর্তাদের খোঁজ খবর নিয়ে ফসলের ক্ষতির প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান বলেন, খাঁলে বাঁধ সৃষ্টি করে যারা জাল ফেলছেন তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।