মোড়েলগঞ্জের পুটিখালীতে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে চলছে বেকারী কারখানা

0
444

এম.পলাশ শরীফ, মোড়েলগঞ্জ থেকে॥
বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জের পুটিখালীতে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে চলছে বেকারী কারখানা। আইনের প্রতি কোন তোয়াক্কা না করে নিয়ম নীতি ছাড়াই দীর্ঘদিন ধরে চলেছে এ কারখানা দুটি। শিশুশ্রমীক অনেক দিনের পুরানো তৈল থেকে তৈরি করা হচ্ছে খাদ্য সামগ্রী। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নেই কোন তদারকী।
সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, পুটিখালী ইউনিয়নের মঙ্গলেরহাট বাজার সংলগ্ন চিপা গলীতে “লাক্সারী” বেকারীর মালিক পুটিখালী ইসলামীয়া সিনিয়র আলিম মাদ্রাসা করনীক মো. ছত্তার হাওলাদার। একই মালিকের পাশাপাশি দু’টি কারখানা। প্রতিষ্ঠানের মূল ফটকে নেই কোন সাইনবোর্ড কারখানা চলাকালীন সময়ে অবাধে ঢুকছেন কুকুর।
দিনের বেলায় কারখানা বন্ধ থাকলেও সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত শ্রমীকের বেড়ে যায় কাজের গতি তৈরি করা হয় বাজারজাত করার জন্য রুটি, কেক, টোষ্ট, বিস্কুটসহ বিভিন্ন খাদ্য সামগ্রী। বেকারীটির পিছনে রয়েছে আরও একটি কারখানা সেখানে তৈরি করা হচ্ছে অনেকদিনের পুরানো তৈল থেকে চানাচুর ভাজা, বুড ভাজাসহ বিভিন্ন সামগ্রী প্যাকেটজাত করে প্রস্তুত করা হচ্ছে। পরেরদিন বাজারে সরবরাহের জন্য। কথা হয় ওই কারখানার মূল শ্রমীক রুহুল আমীন শেখ(৬৫), গ্রামের বাড়ি বাগেরহাটের অলোকদিয়া গ্রামে র্দীঘ এক বছর ধরে ১২ হাজার টাকা মাসিক বেতনে কাজ করেন এ কারখানায় তিনি। একই সাথে শিশুশ্রমীক হাসান(১২) ওই গ্রামের তার নানাবাড়ি। পিতার বাড়ি নোয়াখালী জেলায়। এ কারখানায় সে ১ মাস ধরে ২ হাজার ৮শ’ টাকায় বেতনে। সংসারের অভাবের তাড়নায় পড়ালেখা বন্ধ করে দিয়ে কারখানায় কাজ নিয়েছেন। এ রকম শ্রমীক আল আমীন হাওলাদার, সাগর শেখ, আরিফ হাওলাদার প্রত্যেকের সাথে কথা বলে জানাযায়, মালিক মাঝের মধ্যে আসে, রাত হলেই তাদের কাজের গতি বেড়ে যায়। প্যাকেটজাত খাদ্য সামগ্রীর মধ্যে লাক্সরী বেকারীর নামে একটি টিকিট লাগানো রয়েছে। সে টিকিটে খাদ্য উৎপাদন ও মেয়াদ শেষের নেই কোন নির্দিষ্ট তারিখ। এমনকি বিএসটিআই’র অনুমদিত নেই, কোন রেজিষ্ট্রেশন নম্বর। বেকারী পরিচালনার ক্ষেত্রে সরকারি নিয়ম অনুযায়ী অনুমোদিত সকল প্রকার কাগজপত্র রয়েছে কিনা অভিযোগ রয়েছে স্থানীয়দের।
এ সর্ম্পকে ওই কারখানা দু’টির মালিক মো. ছত্তার হাওলাদারের সাথে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কারখানা তদারকীর জন্য সেনিটারী ইন্সেপেক্টেরের ওপর আর কে আছে। তিনিতো মাঝে মধ্যে এসে দেখে যান। বিএসটিআই’র অনুমোদন তার রয়েছে। তবে অনেক টিকিট রেজিষ্ট্রেশন নম্বর ছাড়া পূর্ব থেকেই ছাপানো রয়েছে সেগুলো শেষ করে নম্বর টিকিট ব্যবহার করা হবে। পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার বিষয়ে তিনি এড়িয়ে যান।
উপজেলা সেনিটারী ইন্সেপেক্টর গোবিন্দ্র চন্দ্র দাস বলেন, ওই বেকারীটি বিষয় খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে। শ্রিঘই এর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে তিনি জানতে পেরেছেন মালিক বিএসটিআই’র অনুমোদনের জন্য আবেদন করেছেন।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. কামরুজ্জামান বলেন, ইতোপূর্বে ওই কারখানাতে ভ্রাম্যমান আদালতে অভিযান করে জরিমানা আদায় করা হয়েছিলো। একই সাথে সকল প্রকার লাইসেন্স ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র না করে বেকারী চালু না করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিলো। সে নির্দেশ অমান্য করে থাকলে তার বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।