মহাসড়ক-সড়ক রক্ষণাবেক্ষণের ব্যয় যাত্রীদের থেকে আদায়ের উদ্যোগ

0
160

টাইমস ডেস্ক:
দেশের মহাসড়ক-সড়ক রক্ষণাবেক্ষণের ব্যয় ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে আদায়ের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। মূলত সড়ক নির্মাণের পর তা দীর্ঘ মেয়াদে টেকসই করার উদ্দেশ্যেই এমন উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। সড়ক রক্ষণাবেক্ষণ নীতিমালা-২০২০-এর খসড়ায় এমন প্রস্তাব করা হয়েছে। বর্তমানে দেশে ২২ হাজার ২৯৫ কিলোমিটার জাতীয়, আঞ্চলিক ও জেলা মহাসড়ক রয়েছে। এই সড়ক মেরামত, সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্যই নতুন নীতিমালা করা হচ্ছে। সব পক্ষের মতামত নিয়ে দ্রুতই নীতিমালাটি চূড়ান্ত করা হবে। যদিও আগে থেকেই সারা দেশে সড়ক-মহাসড়কে সেতু থেকে টোল আদায় করা হচ্ছে। পাশাপাশি তিনটি সড়ক থেকেও টোল আদায় করা হচ্ছে। এখন সড়ক রক্ষণাবেক্ষণ নীতিমালা-২০২০ নিয়ে খুব শিগগিরই সচিবালয়ে আন্তঃ মন্ত্রণালয় বৈঠক হতে যাচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, খসড়া নীতিমালার ১০ নম্বর ধারায় বলা আছে, সরকার পর্যায়ক্রমে সড়ক ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে এর রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় আহরণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। আর সড়ক ব্যবহারের অনুপাতে রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় নির্বাহের জন্য ‘রোড মেইনটেন্যান্স ফান্ড’-এর মাধ্যমে অর্থ সংস্থান করা হবে। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সূত্র জানায়, বিগত ২০১৩ সালে সড়ক রক্ষণাবেক্ষণের জন্য অর্থ জোগানে একটি তহবিল গঠনের প্রস্তাব জাতীয় সংসদে বিল আকারে পাস হয়। তবে তা এখনো কার্যকর হয়নি। দেশে নতুন রাস্তাঘাট নির্মাণে অর্থ ব্যয়ে মন্ত্রণালয়গুলো যতোটা আগ্রহী, সড়ক রক্ষণাবেক্ষণে ততোটা আগ্রহী নয়। আর সড়ক ও জনপথ বিভাগের মতে, সড়ক রক্ষণাবেক্ষণের জন্য যে টাকা চাওয়া হয় তা পাওয়া যায় না। যেমন ২০১৮-১৯ অর্থবছরে সড়ক সংস্কার ও অবকাঠামো সংরক্ষণে ১২ হাজার কোটি টাকা প্রয়োজন হলেও পাওয়া গেছে মাত্র ২ হাজার ২২৮ কোটি টাকা। একটি সড়ক নির্মাণের পর বছর না ঘুরতেই তা বেহাল হয়ে পড়ে। এমন বাস্তবতায় সরকার নীতিমালা করতে যাচ্ছে যেখানে ব্যবহারকারীদের টাকা দিয়েই সড়ক রক্ষণাবেক্ষণ করা হবে।
সূত্র আরো জানায়, খসড়া নীতিমালা অনুযায়ী সড়ক রক্ষণাবেক্ষণে আর্থিক সমস্যা দূর করতে সরকার প্রয়োজনে দেশি-বিদেশি উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা থেকে বিকল্প উপায়ে অর্থায়নের চেষ্টা করবে। রক্ষণাবেক্ষণের জন্য সরকার একটি বার্ষিক বরাদ্দ কর্মসূচিও প্রণয়ন করবে। আর নতুন বিনিয়োগ প্রকল্পের ক্ষেত্রে যে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ করবে, নির্মাণ-পরবর্তী নির্দিষ্ট সময়ের জন্য সড়ক রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ওই প্রতিষ্ঠানই দায়িত্বপ্রাপ্ত হবে এবং তা হবে চুক্তিমোতাবেক। তবে ঠিকাদারকে কতো সময়ের জন্য সড়ক রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব দেয়া হবে তা প্রকল্প কাজের গতি-প্রকৃতি বিশ্লেষণ করে ঠিক করা হবে। আর নিয়মিত সড়ক রক্ষণাবেক্ষণের কার্যক্রম বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি সংগ্রহ করবে। একই সঙ্গে বেসরকারি পর্যায়েও যন্ত্রপাতি লিজ ও ভাড়া দিতে পারবে সরকার।
এ প্রসঙ্গে সড়ক ও জনপথ বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী এ কে আজাদ জানান, সড়ক রক্ষণাবেক্ষণের জন্য যে টাকা খরচ হবে, খসড়া নীতিমালায় তা ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে নেয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। তবে কোন প্রক্রিয়ায় ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে টাকা নেয়া হবে তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি।