মংলায় নানা আয়োজনে কবি রুদ্রের ৬২ তম জন্মদিন পালন

0
470

মংলা প্রতিনিধি: ১৬ অক্টোবর তারুণ্য ও সংগ্রামের দীপ্ত প্রতীক কবি রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ’র ৬২ তম জন্ম বার্ষিকী পালিত হয়েছে। বাংলাদেশের কবিতায় অবিসস্মরণীয় এই কবির শিল্পমগ্ন উচ্চারণ তাকে দিয়েছে সত্তরের অন্যতম কবি-স্বীকৃতি। ১৯৯১ সালের ২১ জুন মাত্র ৩৫ বছর বয়সে তিনি মারা যান। দিনটির স্মরণে রুদ্র স্মৃতি সংসদ, উপজেলার চাদঁপাই ইউনিয়নের কবির গ্রামের বাড়ি মংলার মিঠেখালিতে গতকাল সকালে শোভাযাত্রা সহকারে কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ, মিলাদ মাহফিল ও দোয়ার আয়োজন করেছে তার পরিবারের পক্ষ থেকে।
গতকাল মঙ্গলবার সকাল ১১টায় মংলায় সরকারি কলেজ মিলনায়তনে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের আয়োজনে স্মরণ সভায় সভাপতিত্ব করেন জোটের আহ্বায়ক মোঃ নূর আলম শেখ। স্মরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন মংলা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ গোলাম সরোয়ার। এছাড়া বক্তব্য রাখেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের নেতা সুভাষ চন্দ্র বিশ্বাস, প্রভাষক কুবের চন্দ্র মন্ডল, প্রভাষক শ্যামা প্রসাদ সেন, ড. অসিত বসু, প্রভাষক বিশ্বজিৎ মন্ডল, প্রভাষক মনোজ কান্তি বিশ্বাস, প্রভাষক সাহারা বেগম, প্রভাষক নিগার সুলতানা সুমী, সংগীত শিল্পী আব্দুল জব্বার, রিপন ও মোঃ জাহিদ হোসেন। আবার সন্ধ্যায় রুদ্র সংসদ কার্যালয়ে কবির স্মরণে স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। দিনটির স্মরণে রুদ্র সংসদে স্মরণসভা শেষে রুদ্রের কবিতা আবৃত্তি ও রুদ্রের গান পরিবেশিত হয়েছে। অকাল প্রয়াত এই কবি তার কাব্যযাত্রায় যুগপৎ ধারণ করেছেন দ্রোহ ও প্রেম, স্বপ্ন ও সংগ্রামের শিল্পভাষ্য। সাহস ও স্বপ্নে, শিল্প ও সংগ্রামে আপদমস্তক সমর্পিত এই কবি তার স্বল্পায়ু জীবনকে ছড়িয়ে দিয়েছিলেন তারুণ্যের দীপ্র সড়কে। নিজেকে মিলিয়ে নিয়েছিলেন আপামর নির্যাতিত মানুষের আতœার সঙ্গে হয়ে উঠেছিলেন তাদেরই কন্ঠস্বর। ‘জাতির পতাকা আজ খামচে ধরেছে সেই পুরোনো শকুন’Ñ এই নির্মম সত্য অবলোকনের পাশাপাশি ততোধিক স্পর্ধায় তিনি উচ্চারণ করেছেনÑ ‘ভুল মানুষের কাছে নতজানু নই’। যাবতীয় অসাম্য,শোষণ ও ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে অনমনীয় অবস্থান তাঁকে পরিণত করেছে ‘তারুণ্যের দীপ্ত প্রতীক’-এ। একই সঙ্গে তাঁর কাব্যের আরেক প্রান্তর জুড়ে রয়েছে স্বপ্ন, প্রেম ও সুন্দরের মগ্নতা। মাত্র ৩৫ বছরের (১৯৫৬-১৯৯১) স্বল্পায়ু জীবনে তিনি সাতটি কাব্যগ্রন্থ ছাড়াও গল্প, কাব্যনাট্য এবং ‘ভালো আছি ভালো থেকো’ সহ অর্ধ শতাধিক গান রচনা ও সুরারোপ করেছেন। পরবর্তীকালে এ গানটির জন্য তিনি বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি প্রদত্ত ১৯৯৭ সালের শ্রেষ্ঠ গীতিকারের (মরণোত্তর) সম্মাননা লাভ করেন।‘উপদ্রুত উপকূল’ ও ‘ফিরে চাই স্বর্নগ্রাম’ কাব্যগ্রন্থ দুটির জন্য ‘সংস্কৃতি সংসদ’ থেকে পরপর দু’বছর ‘মুনীর চৌধুরী সাহিত্য পুরষ্কার লাভ করেন। সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট ও জাতীয় কবিতা পরিষদ গঠনে তিনি গুরুত্বপূর্ন ভুমিকা পালন করেন এ কবি রুদ্র মুহম্মাদ শহিদুল্লাহ।