ভিক্ষুক পরিবারের ভরণপোষনের জন্য ভ্যানগাড়ি দিলেন ইউএনও

0
541
কয়রা (খুলনা)প্রতিনিধি:-
খুলনার কয়রা উপজেলার হতদরিদ্র ষাটউদ্ধ বয়সের বৃদ্ধা ভিক্ষুক করুনাবালার ভরণ পোষনের জন্য একটি ব্যাটারিচালিত ভ্যানগাড়ি দিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)শিমুল কুমার সাহা।
১১ ডিসেম্বর বুধবার উপজেলা পরিষদ মিলনায়তন থেকে ভিক্ষুক পরিবারটির ভরণপোষনের দায়িত্ব পালনের শর্তে ভ্যানগাড়িটি বৃদ্ধা ভিক্ষুক করুনাবালার ভাইয়ের ছেলে জিতেন চন্দ্রের কাছে হস্তান্তর করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার শিমুল কুমার সাহা।
কিছুদিন আগে কয়রা উপজেলার স্থানীয় একজন সংবাদকর্মীর মাধ্যমে হতদরিদ্র ভিক্ষুক করুনাবালা ও তার মানসিক প্রতিবন্ধি সন্তান চন্ডিদাশের দুরঅবস্থার বিষয়টি জানতে পারেন কয়রা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।
ভিক্ষুক পরিবারটির অসহায়ত্বের খবর শুনেই তিনি উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. জাফর রানাকে সাথে নিয়ে হাজির হন উপজেলার ৩ নং কয়রা গ্রামের ক্ষত্রিয় পাড়ায় করুনাবালার বাড়িতে। য়েয়ে দেখেন একটি ভাঙাচোরা  অন্ধকার ঝুপড়ি ঘরের মধ্যে কোন রকমে মাথাগুজে পড়ে আছে বৃদ্ধা করুনাবালা ও তার প্রতিবন্ধী সন্তান চন্ডিদাশ। ঘরের ভিতর মল মুত্রের প্রচন্ড গন্ধ । মানসিক প্রতিবন্ধী পুত্র চন্ডিদাশ অর্ধাউলঙ্গ হয়ে শুয়ে আছে খাটের উপর। আর খাটের পাশে মাটিতে এক টুকরা গামছা গায়ে জড়িয়ে পড়ে আছে বৃদ্ধা মা করুনা বালা।
তখনই হতদরিদ্র বৃদ্ধা ভিক্ষুক করুনাবালা ও তার মানসিক প্রতিবন্ধি সন্তান চন্ডিদাশের জন্য ব্যক্তিগত উদ্যোগে নিজের অর্থে একটি টিনশেড ঘর নির্মাণ করে দিয়েছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার শিমুল কুমার সাহা। বৃদ্ধা ও তার সন্তানকে দেখাশুনার জন্য বৃদ্ধার ভাইয়ের ছেলে জিতেন চন্দ্রকেও একটি ভ্যানগাড়ি দেয়ার আশ্বাষও প্রদান করেছিলেন তখন।
বুধবার দুপুরে নতুন ভ্যানগাড়ি পাওয়ার পর বৃদ্ধা করুনাবালার ভাইয়ের ছেলে জিতেন চন্দ্র বলেন, দিনমজুরী খেটে নিজের সন্তানদের মুখে খাবার তুলে দিতেই হিমশিম খেতে হত তার । তারমধ্যে বৃদ্ধা আর এক মানসিক প্রতিবন্ধী লালন-পালন আমার পক্ষে সম্ভ হয়ে উঠতো না। এরপরও বৃদ্ধা করুনাবালা ও তার প্রতিবন্ধী সন্তানকে যেটুকু পারে খেতে দিত সে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার বৃদ্ধা ও তার প্রতিবন্ধী সন্তানের দেখাশুনার খরচ মিটাতে ভ্যানগাড়িটি কিনে দেয়ায় এখন থেকে ভালোভাবে দেখাশুনা করতে পারবে পরিবারটির বলে দাবী জিতেনের।
কয়রা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শিমুল কুমার সাহা বলেন, যতটুকু পেরেছি নিজ থেকেই অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়িয়েছি। পরিবারটির জন্য এর আগে ১০ কেজি চাল,ডাল,তেলসহ নিজেই বৃদ্ধা করুনাবালার জন্য শাড়ি ও তার সন্তানের জন্য লুঙ্গি,গামছা কিনে পৌছে দিয়ে এসেছি। এছাড়া নিজের ব্যক্তিগত অর্থে নির্মান করে দিয়েছি একটি টিনশেড ঘর। মানব জীবনের সম্পূর্ণতা আর তৃপ্তির জন্য সমাজের অসহায়-পীড়িতদের জন্য কিছু করা দরকার। আমাদের সবারই সুযোগ রয়েছে মানবসেবায় নিজেকে নিয়োজিত করে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে নিজেকে গড়ে তোলার।