টাইমস ডেস্ক:
বৈদ্যুতিক গোলযোগে প্রতি বছরই হাজার হাজার অগ্নিকা-ের ঘটনা ঘটছে। তাতে প্রাণহানির পাশাপাশি সম্পদেওর ব্যাপক ক্ষতি হ”েছ। প্রতি বছরই অগিকা-ে শত শত মানুষ মারা যা”েছ। পুড়ে ছাই হ”েছ কোটি কোটি টাকার সম্পদ। গত বছর দেশে সংঘটিত অগ্নিদুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ৩৯ শতাংশই বৈদ্যুতিক গোলযোগ থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে। আর বৈদ্যুতিক গোলযোগ থেকে স”ষ্ট আগুনে আর্থিক ক্ষতির পরিমাণও সবচেয়ে বেশি। ওসব অগ্নিকা-ের অন্যতম কারণই হ”েছ মানহীন বৈদ্যুতিক সরঞ্জামের ব্যবহার। সরকারি সং¯’া ফায়ার সার্ভিসের মতে, বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম উৎপাদন ও বিপণনের ক্ষেত্রে সুষ্ঠু মনিটরিং ব্যব¯’া নিশ্চিত করা গেলে এ ক্ষতি অনেক কমিয়ে আনা সম্ভব। ফায়ার সার্ভিস সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, বিগত ২০১৯ সালে সারা দেশে ২৪ হাজার ৭৪টি অগ্নিকা-ের মধ্যে বৈদ্যুতিক গোলযোগ থেকেই ঘটেছে ৮ হাজার ৬৪৪টি। যা মোট অগ্নিকা-ের ৩৯ শতাংশ। আর আগুনের ঘটনায় গত বছর ৩৩০ কোটি ৪১ লাখ ২৮ হাজার ৭৪৪ টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। তার মধ্যে শুধু বৈদ্যুতিক গোলযোগ থেকে স”ষ্ট অগ্নিকা-ে আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ ছিল ২৩২ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। তার বাইরে ওই সময়ের অগ্নিদুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে চুলার আগুন থেকে ১৮ শতাংশ, সিগারেটের টুকরো থেকে ১৫ শতাংশ, খোলা বাতির ব্যবহার থেকে থেকে ৩ শতাংশ আগুনের সূত্রপাত হয়েছে। ওসব অগ্নিকা-ের ঘটনায় মোট ১৮৪ জনের ম”ত্যু হয়েছে।
সূত্র জানায়, কারখানা ও বাসাবাড়ির নির্মাণ খরচ কমাতে ঠিকাদাররা বেশির ভাগ সময়ই নিম্নমানের বৈদুতিক তার ও সরঞ্জাম ব্যবহার করে। আবার অনেক ক্ষেত্রে ভবন মালিকও জেনেশুনে খরচ বাঁচাতে এ কাজ করে থাকে। দেয়ালের ভেতরে বৈদ্যুতিক তার বসানোর কারণে অনেক সময় তারের মান নির্ণয় করা সম্ভব হয় না। আর নিম্নমানের ওসব তার বেশি ভোল্টেজের বিদ্যুৎ ধারণ করতে পারে না। ফলে বৈদ্যুতিক তার গলে আগুন ধরে যায় এবং মুহূর্তেই তা একটি ভবনে ছড়িয়ে পড়ে। এ কারণেই ভবনে তার বসানোর আগে তা মালিকপক্ষকে তদারকি করার কথা বলা হ”েছ। পাশাপাশি এখন থেকে আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবনে তার বসানোর আগে ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তাদের অনুমোদন নেয়ারও নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
সূত্র আরো জানায়, আগুনের সূত্রপাত বৈদ্যুতিক গোলযোগের পরই চুলা থেকে বেশি ঘটে। কারণ বাসাবাড়িতে অনেক সময় গ্যাসের চুলা না নিভিয়ে অনেকে ঘুমিয়ে পড়ে। আবার ব”ষ্টির সময় অনেকে কাপড় শুকানোর জন্যও চুলা ব্যবহার করে। যাদের বাসায় ছোট শিশু রয়েছে তারাই এ কাজ বেশি করে। অসাবধানতাবশত ওই চুলা থেকেই দেশের মোট আগুনের ১৮ শতাংশ ঘটনা ঘটেছে। আবার অনেক সময় চুলার গ্যাসলাইনেও লিকেজ থাকে। তাও অগ্নিকা-ের অন্যতম কারণ। এ কারণেই চুলা ব্যবহারে সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
এদিকে অগ্নিকা-ের বিষয়ে ফায়ার সার্ভিসের ডিজি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. সাজ্জাদ হোসাইন জানান, অগ্নিকা-ের ২০টি কারণ নির্ধারণ করে দেখা গেছে তিনটি কারণে বেশি আগুনের সূত্রপাত। তাছাড়া ছোট-বড় আরো ঘটনা রয়েছে। ওসব আগুনের কারণ নির্ধারণের পর জনসচেতনতা বাড়াতে ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে লিফলেট বিতরণসহ নানা ধরনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। কারখানাগুলোয় ভালো মানের বৈদ্যুতিক তার ব্যবহার ও তা নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের তাগিদ দেয়া হ”েছ। একই সাথে আগুন দ্রুত নেভানোর জন্য সব ফোরেই আগুন নিরোধক যন্ত্রপাতি বসানোরও তাগিদ দেয়া হ”েছ। পাশাপাশি এয়ারকন্ডিশনার মেশিনগুলো নিয়মিত সার্ভিসিং করার কথাও বলা হ”েছ। কিš’ তারপরও অনেকে সেগুলো সঠিকভাবে করছে না। সেজন্য ফায়ার সার্ভিসের পর্যবেক্ষক টিম নিয়মিত কাজ করে যা”েছ।