বৃষ্টি হলেই দাকোপে জলাবদ্ধতা, ভোগান্তি

0
726

আজিজুর রহমান, খুলনাটাইমস :
তিন দিনের বৃষ্টিতে খুলনার দাকোপ উপজেলার বেশ কিছু স্থানে অস্থায়ী জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ায় ভোগান্তিতে পড়ে সাধারণ মানুষ।
মঙ্গলবার (২৪ জুলাই) ভোর ৫টার দিকে শুরু হওয়া গুড়িগুড়ি বৃষ্টিতে উপজেলার অফিস পাড়ায় চরম জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। আর সাথে সাথে বেড়েছে মশার উপদ্রপ।
আগের দুদিনের মতো বৃহস্পতিবার (২৬ জুলাই) মধ্যরাত থেকে মুষলধারে বৃষ্টি হওয়ায় উপজেলার চালনা পৌরসভার বেশ কয়েকটি জায়গায় জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। বৃহস্পতিবারে একটানা প্রায় ১৭ ঘন্টা ভারি বৃষ্টি ও দমকা হাওয়ায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে জনজীবন।
পৌর এলাকা ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার আবাসিক এলাকা, থানার মোড়, প্রাণিসম্পদ অফিস সংলগ্ন চলাচলের রাস্তা পানিতে ডুবে আছে। এসব রাস্তা দিয়ে যানবাহন ও স্বাভাবিক চলাচলে বিঘœ সৃষ্টি হচ্ছে। চালনা সবুজ পল্লী, এমএম কলেজ, পার চালনা ও শহিদ মিনার এলাকায় অনেকের ঘরের ভিতরে পানি প্রবেশ করেছে। শতাধিক পুকুর ডুবে গিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকার মাছ বেরিয়ে গেছে। রাস্তার উপরে মানুষের জাল দিয়ে মাছ ধরতে দেখা গেছে।
এলাকাবাসির সাথে কথা বলে জানা যায়, বৃষ্টিতে মানুষ ঘরের বাইরে যেতে পারেনি। ব্যাহত হচ্ছে দৈনিকের কাজ। কাজ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে দিনমজুর শ্রেণির মানুষ। জলাবদ্ধতার কারণে মশার উপদ্রব বেড়ে মশাবাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে দারিদ্র মানুষ। এদিকে সুযোগ বুঝে এলাকার বিভিন্ন মোকামের ব্যবসায়ীরা নিত্যপন্যের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে ইচ্ছামত। আকাশ নরম কিন্তু দাকোপের সবজির বাজার গরম। সবমিলে মারাত্মক বিপদে রয়েছে সাধারন খেটে খাওয়া মানুষ।
উপজেলা সদরে ২০০৪ সালের নভেম্বর মাসে চালনা পৌরসভাটি প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠাতার ১৪ বছর ধরে পৌরসভায় পানি নিষ্কাশনের কোনো ব্যবস্থা না থাকায় ভারি বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধাতা সৃষ্টি হয় এবং জনগনের ভোগান্তি বাড়ে। পৌরসভার পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করার জন্য বর্তমান মেয়রের নির্বাচনি প্রতিশ্রæতি থাকলেও আজও এ সমস্যার কোনো ন্থায়ী সমাধান হয়নি।
চালনা পৌরসভার মেয়র সনত কুমার বিশ্বাস মুঠোফোনে বলেন, পানি নিস্কাসনের জন্য একাধিক ড্রেন নির্মানের কাজ চলছে এগুলি নির্মাণ হয়ে গেলে আর জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হবে না। তিনি বলেন, পানি সরানোর জন্য বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহন করা হচ্ছে। আর খাল দু’টি খননের কাজ আগামীতে শুরু করা হবে।

All-focus

স্থানীয়রা বলেন, চালনা খাল এবং আঁচাভ‚য়া খাল পূনঃখনন এবং সরাসরি নদীর সাথে কালভার্ট দিয়ে সংযোগ না করলে পৌর এলাকার এ সমস্যা কোনোদিন সমাধান হবে না ।
উপজেলার নয়টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার জনপ্রতিনিধিদের সাথে আলাপ করে জানা যায়, কয়েকটি এলাকায় গাছপালা ভেঙ্গে পড়েছে এবং আমন ধানের বীজ তোলা ডুবে গেছে। এলাকার নদীগুলোতে জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে ২/৩ ফুট বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিলডাংগা ইউনিয়নের বটবুনিয়া বাজার ও কামনিবাসিয়া পুলিশ ফাঁড়ির রাস্তা নদীভাঙ্গনে মারাত্মক হুমকির সম্মুখিন হয়ে পড়েছে একই অবস্থা সুতারখালি ইউনিয়নের। সুশিল সমাজের প্রতিনিধিরা বলেন, এমনিভাবে ভারি বর্ষণ কিছুদিন চললে ওয়াপদার রাস্থা ভেঙ্গে ওই দু’টি ইউনিয়নের কয়েকটি এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশংকা রয়েছে।
এ বিষয়ে কথা হয় খুলনা পাউবো উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মো. সাইদুর রহমানের সাথে। তিনি বলেন, দাকোপ উপজেলার যে সকল স্থানে সমস্যা আছে সেখানে পাউবোর প্রতিনিধিরা নজর রাখছে। এছাড়া আগামী তিনদিন নদীতে এরকম পানি বৃদ্ধি পাবে বলে জানান। তিনি আরও বলেন সাথে সাথে জনপ্রতিনিধিদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে এবং যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলা করার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।