বুলবুলে ক্ষতিগ্রস্ত খুলনার মাত্র ১৭ শতাংশ কৃষক পূণর্বাসনের আওতায়

0
274

নিজস্ব প্রতিবেদক: বোরো ও আমনের ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত এবং বুলবুলে ক্ষতিগ্রস্ত খুলনার ৮৩ শতাংশ কৃষক পুনর্বাসনের আওতায় আসেনি। মাত্র ১৭ শতাংশ কৃষককে সার বীজ ও নগদ ৫শ’ টাকা করে অর্থ দিয়ে পূনর্বাসনের আওতায় আনা হয়েছে। বুলবুলে ৩ হাজার ২১ হেক্টর জমির আমন এবং ৮শ’ হেক্টর জমির শাকসব্জি, সরিষা, পান, পেঁপে ও কলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গত ৯ নভেম্বর খুলনা অঞ্চলে বুলবুল আঘাত হানে।
গেল মৌসুমে প্রতিমন আমন উৎপাদনে ৯শ’ টাকা খরচ হয়। বিক্রি হয় মন প্রতি সাড়ে ৭শ’ টাকা দরে। এবারের আমনেও একই অবস্থা। জেলার ৩০ হাজার হেক্টর জমির আমন ক্ষেতে কারেন্ট পোকা আক্রমন করে। আক্রান্ত জমির খড়কুটো ছাড়া ধান কৃষকের ঘরে আসেনি। দাবদাহে বাগদা চিংড়ির ঘের ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অতিবৃষ্টি ও অনাবৃষ্টিতে গলদার আশানুরুপ উৎপাদন হয়নি। এবারের শৈত্যপ্রবাহে ৫শ’ হেক্টর জমির বীজতলা নষ্ট হয়েছে। ফলে খুলনার ৬০ হাজার কৃষক নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত।
কৃষিসম্প্রসারন অধিদপ্তরের সূত্র জানায়, বুলবুলে ক্ষতিগ্রস্ত চার হাজার ৯শ’ কৃষককে পূনর্বাসনের আওতায় আনা হয়েছে। পূনর্বাসনের আওতায় আনা উপজেলাগুলো হচ্ছে-কয়রা, পাইকগাছা, দিঘলিয়া, তেরখাদা, ডুমুরিয়া, ফুলতলা,দাকোপ, বটিয়াঘাটা, রূপসা ও মহানগরীর লবনচরা। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ৮৯ লাখ ২৫ হাজার ৮শ’ টাকা মূল্যের বীজ ও সার বিনামূল্যে সরবরাহ করা হবে। প্রত্যেক কৃষককে নগদ ৫শ’ টাকা ব্যাংকের মাধ্যমে দেয়া হবে। চাষীদের ভূট্টা, মুগডাল ও শাকসব্জি চাষের পরামর্শ দেয়া হয়েছে। এ কর্মসূচির আওতায় সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, নড়াইল ও পিরোজপুর জেলার সকল উপজেলা বুলবুলে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পুনর্বাসন করা হচ্ছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক পঙ্কজ কান্তি মজুমদার এ প্রতিবেদককে জানান, পূনর্বাসন কর্মসূচির জন্য কৃষকদের হাতে সার ও বীজ দেয়া শুরু হয়েছে। ব্যাংকের মাধ্যমে প্রত্যেক কৃষক ৫শ’ টাকা করে পাচ্ছে। কয়রা. পাইকগাছা, বটিয়াঘাটা, দাকোপ ও ডুমুরিয়া উপজেলায় ভূট্টা চাষের জন্য কৃষককে পরামর্শ দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, সরকারি সাহায্যে উৎপাদন বাড়বে এবং কৃষক উৎসাহিত হবে। এছাড়া ভোজ্য তেলের ঘাটতি পুরনের জন্য এই প্রথম বারের মত পাইকগাছা, বটিয়াঘাটা, দাকোপ ও ডুমুরিয়া উপজেলায় ১শ’ বিঘা জমিতে সূয্যমূখী চাষ হবে। কৃষকদের সুবিধার্থে জেলা সদর থেকে ভোজ্য তেল মিল মালিকরা নগদ অর্থে সূয্যমূখী কিনে নেবে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিঘলিয়া উপজেলার ২৭০ জন চাষীর মধ্যে ভূট্টার বীজ বিতরণ করা হয়। উল্লেখ্য, বুলবুল নামক ঘূর্ণিঝড়ে খুলনার ৬৮টি ইউনিয়নের মধ্যে ৫৭ টিতে ৩৪ হাজার ১৪৭ জন কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অপর একটি সূত্র জানান, ক্ষতিগ্রস্ত পান চাষীরা পূনর্বাসন সুবিধা পায়নি।