বাগেরহাটে মালিকানা সম্পত্তির গাছ বিক্রি করলেন ইউপি চেয়ারম্যান

0
363

বাগেরহাট প্রতিনিধি: জেলার ফকিরহাট উপজেলার বেতাগাইউনিয়নে ঘূর্ণীঝড় বুলবুলে পড়ে যাওয়া মালিকানা সম্পত্তির গাছ ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বিক্রি করে দিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আর অভিযোগটি তুলেছে ক্ষতিগ্রস্থ্য মালিক ধনপোতা গ্রামের মো: নজরুল ইসলাম শেখ দিং। সরকারী পুকুর পাড়ে বলে আদালতের নির্দেশ অমান্য করে বেতাগা ইউপি চেয়ারম্যান তার খেয়াল খুশি মত মালিকানা সম্পত্তির গাছ বিক্রি করেছে এমনই আভিযোগ ওই ভুক্তোভুগী পরিবারের।
শুক্র বার বিকালে কোর্টে চলমান মামলার বরাত দিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ্য শেখ নজরুল ইসলাম বলেন,উপজেলার ৫৪ নং ধন পোতা মৌজায় এসএ ৪১৩ এবং ৪১৫ নং খতিয়ান ২৪৯ নং দাগে ১.১০ একর ডাঙ্গা জমি, এর মধ্যে.০৯২৫ একর জমির রেকর্ডী মালিক আমার পিতা মৃত মো: শাহজান শেখ, তার ওয়ারিশ আমরা মামলার বাদিগন। এই সম্পত্তি রেকর্ডীয় মালিকানায় নজরুল দিংরা, পিতামহ থেকে অদ্যাবদি ভোগ দখলে আছে। এবং এই সম্পতিতে বিগত-২৯-১১-২০০ তারিখ থেকে বাগেরহাট রামপাল সহকারী জজ আদালতে ২৮৪ নং একটি দেওয়ানী মামলা চলমান। ওই মামলার বাদী পক্ষ আমি ও আমার শরিক গন। চলমান এই মালায় আমার পক্ষে ২৮-১-২০১৬ তারিখের উচ্চাদালতের একটি স্থিতি অবস্থার আদেশ রয়েছে। আদেশে বলা হয়েছে যে ২৮৪/২০০০ দেওয়ানী মামলার চুড়ান্ত না হওয়া পর্যন্ত ১ নং বিবাদী কে স্থিতী অবস্থা বজায় রাখতে নির্দেশ দেওয় গেল।
একই মৌজায় ডিপি ৪৭২ খতিয়ানে এসএ ২৫৩ এবং ডিপি ১৮৭ নং দাগে.৭২ একর জমি যাহা পুকুর । যেটা দোয়া খার পুকুর নামে পরিচিত। এই পুকুর পাড়েই ২৮৪/২০০০ দেওয়ানী মামলার মালিকানা সম্পত্তি। সরকারী এই পুকুরটি দেখভাল করেন বেতাগা ইউনিয়ন পরিষদ । দেখভালের সুবাদে ওই জনপ্রতিনিধি তার ইচ্ছা অনুযায়ী জোর পূর্বক গাছটি বিক্রি করে দিয়েছ। অথচ এই পুকুর নিয়ে জেলা জজ আদালতে দেওয়ানী আপিল ২৪১/১৮ নং মামলা চলমান, যাহার আগামী ২৪-০৩-২০২০ তারিখ শুনানীর দিন ধার্য্য। তা উপেক্ষা করে-ই গাছ গাছটি বিক্রয় করে দিয়েছে।
এ বিষয়ে স্থানীয় তৌফিকুল ইসলাম,মাহমুদ শেখ,রবিউল ইসলাম, মকবুল শেখ, আব্দুস ছত্তার শেখ, আঃ রশিদ মল্লিক, বলেন- সরকারী এই পুকুর পাড়ে আমরা পৈত্রিক সুত্রে বসবাস করে আসছি। ওই গাছটি ব্যাক্তি মালিকানা ,তার পরও চেয়ারম্যান গাছটি কেন, কি ভাবে বিক্রয় করে আমাদের জানা নেই।
পরিষদের নিকট থেকে পুকুর মৌখিক ইজারা নিয়ে ভোগ-দখলে আছে তাদের সাথে এ বিষয়ে কথা হলে মো: লিয়াকত শেখ, মো: আ: হাই বলেন, আমরা ইজারা মাধ্যমে মাছ চাষ করি মাত্র আমরা গাছের দাবিদার না। ঘূর্ণী ঝড় বুলবুলে গাছ পড়ে গেলে আমরা পরিষদের চেয়ারম্যানকে জানাই, তিনি কি করেছেন আমরা জানিনা।ইজারার কাগজ পত্র দেখতে চাইলে বলেন, ২ বছর কোন ইজরা বন্দোবস্থ নাই, চেয়ারম্যানে নিজ ক্ষমতা বলে আমাদের মাছ চাষ করতে বলেছে।
বাড়ী ফেলে রেখে চলে যাওয়া এই পুকুরের উত্তর পাড়ের বাসিন্দা মো: সিরাজুল ইসলাম বলেন, এই এক বছর হয় আমি এখান থেকে চলে গেছি কারন বাড়ী থেকে বের হতে যে পথ ছিলো তা ভেঙ্গে পুকুরে মিশে গেছে। তারপরও ওই পাড়ে রাস্থা হবার মত খাস জমি থাকা স্বত্তেও পুকুর ইজার কারীরা তাদের দখলে রেখে। এখন বের হবার কোন পথ নেই। চেয়ারম্যানকে বার বার বলেও কোন সু ফল পাই নাই তাই অন্যত্র চলে যেতে বাধ্য হয়েছি।
এ বিষয়ে ৩নং ওয়ার্ড সদস্য মো: আলমগীর শেখ এর সাথে তার মুঠো ফোনে কথা হলে তিনি বলেন। চেয়ারম্যানের নির্দেশে পুকুর মাপ-ঝোপ করেছি, এবং সিমানা ও দিয়েছি আমি নিজে। নজরুলকে আমিন রাখতে বলেছি, কিন্তু সে কোন আমিন রাখে নাই। আমার আমিন যে খানে সিমানা দিয়েছে ওইটাই সঠিক।
এ বিষয়ে জানতে চেয়ে বেতাগা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইউনুচ আলী শেখ এর মুঠো ফোনে যোগাযোগ করা হলে তার ফোন বন্দো পাওয়া গেছে, জানা গেছে তিনি সরকারী সফরে দেশের বাইরে আছেন।