বাঁশের সাঁকোই যেখানে একমাত্র ভরসা

0
588

এম জে ফরাজী : খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার আটলিয়া ও শোভনা ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী এলাকা আড়োখালী নদীর বাগআচড়া-কুলবাড়িয়া খেয়াঘাট সংলগ্ন স্থানটি। এই নদীর ওপর নেই কোনও সেতু। সেতুর পরিবর্তে বাঁশের সাঁকোই এখন একমাত্র ভরসা এ নদীর পার্শ্ববর্তী দুই ইউনিয়নের ৫ গ্রামের প্রায় ৮ হাজার মানুষের। আড়োখালী নদীর ওপর সেতু না থাকায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষজনের। আর এই দুর্ভোগ দূর করতে বাগআচড়া-কুলবাড়িয়া খেয়াঘাট সংলগ্ন স্থানটিতে সেতু স্থাপন এলাকাবাসীর প্রাণের দাবি হয়ে উঠেছে।


সূত্র জানায়, কালজয়ীর স্বাক্ষী তেলিগাতী নদীর শাখা আড়োখালী নদী। এ নদীটি খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলার ৫নং আটলিয়া ইউনিয়ন ও ৭নং শোভনা ইউনিয়নের বৃহৎ একটি অংশকে বিভক্ত করেছে। নদীটি এই ২টি ইউনিয়নের সীমানা বেষ্টিত। নদী পারাপারের জন্য বাঁশের সাঁকো তৈরি করা হয়েছে এলাকাবাসীর উদ্যোগে। বাঁগআচড়া, বাদুরগাছা, মনোহরপুরসহ আশেপাশের বয়ারশিং ও মাদারতলা গ্রামের অসংখ্য মানুষ, বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও কোমলমতি শিশুরা প্রতিদিন এ সাঁকো দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হয়।
প্রতিদিন এই সাঁকো দিয়ে কয়েক হাজার মানুষ চলাচল করলেও ভারী তো দূরের কথা, মাঝারী কোন যানবাহনও চলাচল করতে পারে না। এতে অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এলাকাবাসীর। এছাড়া প্রতিনিয়ত ছোট-খাটো দূর্ঘটনা তো ঘটেই। বিগত দিনে অনেক জনপ্রতিনিধি সেতু নির্মাণের আশ্বাস দিলেও আজও তার সঠিক বাস্তবায়ন হয়নি। জনগণের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে ২০১৬ সালের ১ ফেব্র“য়ারি খুলনা-৫ (ডুমুরিয়া-ফুলতলা) আসনের সংসদ সদস্য মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ সেতু নির্মাণের জন্য ডিও লেটার দিয়েছিলেন সংশ্লিষ্ট দপ্তরে। তবে আড়াই বছর পরেও দুঃখ-দুর্দশা দূর হয়নি এলাকাবাসীর।
এলাকাবাসীরা জানান, গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন, রাস্তা-ঘাট, কালভার্ট-সেতু নির্মাণে বর্তমান সরকারের নজীরবিহীন উদ্যোগের কথা আমাদের সকলেরই জানা। তাহলে কেন তাদের এই এলাকাটি বঞ্চিত? তাদের দুঃখ-দুর্দশা দেখার কি কেউ নেই? এলাকাবাসী বিনীতভাবে এই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
ডুমুরিয়ার বাসিন্দা গাজী আলী বাদশা জানান, বাগআচড়া-কুলবাড়িয়া খেয়াঘাট সংলগ্ন আড়োখালী নদীতে সেতু নির্মাণের যৌক্তিকতা সংক্রান্ত বিষয়ে ২১ আগস্ট চেয়ারম্যান এড. প্রতাপ কুমার রায়ের সাথে চুকনগরে ৫নং আটলিয়া ইউনিয়ণ পরিষদ ভবনে এলাকাবাসীর আলোচনা হয়েছে। এসময় চেয়ারম্যান এলাকাবাসীর ন্যায্য দাবির সাথে একাত্বতা ঘোষণা করে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও মৎস্যমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।
পরে ২৩ আগস্ট মন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ’র সাথে এলাকাবাসীসহ আওয়ামী লীগ নেতা প্রনব সরদার ও মেম্বর দেবব্রত সরদার, সাধন সরদার দেখা করেন এবং সেতু নির্মাণের যৌক্তিকতা তুলে ধরেন। এলাকাবাসীর দাবিটি শোনার পর মন্ত্রী তাৎক্ষণিকভাবে সংশ্লিষ্ট দফতরে ফোন করে সেতু নির্মাণের জন্য দ্রুত কাযর্কর পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দেন।
এ বিষয়ে শোভনা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সুরঞ্জিত বৈদ্য ও আটলিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট প্রতাপ কুমার রায়ের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তারা ফোন রিসিভ করেননি।