পিডিবির দুই সিবিএ নেতার দখলে সরকারি গাড়ি

0
1424

নিজস্ব প্রতিবেদক :

পিডিবির দুই সিবিএ নেতার দখলে রয়েছে সরকারি দুই গাড়ি। তারা দীর্ঘ নয় বছর ধরে অবৈধভাব দুটি গাড়ি ব্যবহার করছেন। ইতিমধ্যে চাকরি থেকে অবসরেও গেছেন বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) এ দুই কর্মচারী। তারপরও গাড়ি দুটি ব্যবহার করছেন। যথারীতি তেল ও রক্ষণাবেক্ষণ খরচ বহন করছে পিডিবি। তারা দু’জন হলেন জাতীয় বিদ্যুৎ শ্রমিক লীগের সভাপতি জহিরুল ইসলাম চৌধুরী এবং সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দিন মিয়া।
গাড়ি দুটির পেছনে শুধু জ্বালানি খরচ বাবদ মাসে ব্যয় হয় প্রায় এক লাখ টাকা। এটা সরকারি কোষাগার থেকেই দেওয়া হয়। তাদের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগের বিষয়ে তদন্তসাপেক্ষে ব্যবস্থা নিতে সম্প্রতি বিদ্যুৎ বিভাগ থেকে পিডিবিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
শমিক লীগের একটি অংশের দাবি, শ্রম বিধিমালা অনুসারে অবসরে যাওয়ায় জহিরুল ইসলাম ও আলাউদ্দিন মিয়া আর সিবিএ সদস্য নন। তার পরও অবৈধ প্রভাব খাটিয়ে গাড়ি দুটি ব্যবহার করছেন। অভিযুক্ত দু’জনের দাবি, বিরোধী পক্ষ ষড়যন্ত্রমূলকভাবে তাদের বিরুদ্ধে এসব মিথ্যা তথ্য প্রচার করছে।
সূত্র জানিয়েছে, জহিরুল ইসলাম ও আলাউদ্দিন মিয়া নয় বছর ধরে সিলেট মেট্রো-ঘ-০২-০০৩৩ এবং ঢাকা মেট্রো-ঘ-১১-২৮২৭ নম্বরের দুটি পাজেরো গাড়ি ব্যবহার করছেন। যেখানে শ্রম বিধিমালা ২০১৫-এর ২০২ ধারা অনুসারে শ্রমিক সংগঠনের কোনো নেতাকর্মী সংশ্নিষ্ট সংস্থার কাছ থেকে যানবাহন সুবিধা গ্রহণ করতে পারবে না।
সূত্র আরও জানিয়েছে, আলাউদ্দিন মিয়া ২০১৭ সালের আগস্টে অবসরে গেছেন। তিনি তখন পিডিবির নকশা ও পরিদর্শন পরিদপ্তরের স্টেনো টাইপিস্ট পদে ছিলেন। গত আগস্টে তার অবসরোত্তর ছুটির (পিআরএল) সময়সীমাও শেষ হয়েছে। জহিরুল ইসলাম চলতি বছরের ৬ জুন অবসরে গেছেন। এ সময় তিনি পিডিবির অডিট পরিদপ্তরের সহকারী হিসাবরক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে জহিরুল ইসলাম বলেন, তারা ব্যক্তিগত কাজে গাড়ি ব্যবহার করেন না। সংগঠনের প্রয়োজনে ও কর্মচারীদের স্বার্থসংশ্নিষ্ট কাজে যাতায়াতের জন্য গাড়ি নিয়ে থাকেন। তিনি বলেন, দেশের বিভিন্ন স্থানে কর্মচারীদের মধ্যে নানা সমস্যা দেখা দেয়। অনেক সময় শোনা যায়, কর্মীরা ঠিকমতো কাজ করছে না। কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিরোধ হয়। এসব ঝামেলা মেটাতে ঢাকা ও ঢাকার বাইরে যাতায়াতের ক্ষেত্রে পরিবহন সুবিধা নেওয়া হয়। কর্তৃপক্ষের কাছে অনুমতি নিয়েই গাড়ি নেওয়া হয়। জহিরুলের অভিযোগ, সংগঠনের একটি পক্ষ তাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। তারা দুর্নীতি দমন কমিশন, মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন জায়গায় মিথ্যা তথ্য সরবরাহ করে সরকারকে বির্বত করার চেষ্টা করছে। সিবিএ সদস্যপদ বাতিল প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সরকারের নির্দেশেই তারা কর্মচারীদের স্বার্থে বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়নে কাজ করছেন।
আলাউদ্দিন মিয়া বলেন, যারা এসব অভিযোগ করে, তারাই দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত। মন্ত্রণালয় বলেছে, পিডিবি দেখবে অভিযোগ সত্য কি-না। তিনি বলেন, সংগঠনের একটি গ্রুপ তাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। এটি সেই ষড়যন্ত্রের অংশ।
এ বিষয়ে পিডিবি চেয়ারম্যান প্রকৌশলী খালেদ মাহমুদ বলেন, দু’জন অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারীর অবৈধভাবে গাড়ি ব্যবহারের বিষয়টি খতিয়ে দেখতে মন্ত্রণালয় থেকে তারা একটি চিঠি পেয়েছেন। তিনি পিডিবির সদস্য প্রশাসনকে অভিযোগটি তদন্ত করে একটি প্রতিবেদন দিতে বলেছেন। রিপোর্ট পেলে আইন অনুসারে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।