পারস্য উপসাগরে যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করেছে ব্রিটেন

0
299

খুলনাটাইমস বিদেশ : ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর অভিজাত শাখা কুদস ফোর্সের প্রধান জেনারেল কাসেশ সোলেইমানি হত্যাকাণ্ড ঘিরে মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা তৈরি হওয়ায় পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চলে দু’টি যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করেছে যুক্তরাজ্য। সোমবার দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে এই যুদ্ধজাহাজ মোতায়েনের তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানের শীর্ষ জেনারেল কাসেম সোলেইমানিকে হত্যার সিদ্ধান্ত নেয়ার পর ওই অঞ্চলে উত্তেজনার পরিপ্রেক্ষিতে ব্রিটিশ নাগরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পারস্য উপসাগরে দু’টি যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করা হয়েছে। ব্রিটিশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেন ওয়ালেস বলেন, শনিবার রাতে সরকারি এক নির্দেশনায় পারস্য উপসাগরে যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করতে বলা হয়েছে। এই সময়ে ওই অঞ্চলে আমাদের জাহাজ এবং নাগরিকদের সুরক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থার অংশ হিসেবে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হেয়েছে। বিবৃতিতে ব্রিটিশ এই প্রতিরক্ষামন্ত্রী বাগদাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে হামলা চালিয়ে কাসেম সোলেইমানিকে হত্যায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেয়া সিদ্ধান্তকে বৈধ বলে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, পারস্য উপসাগর এবং ওমান সাগরের মাঝে হরমুজ প্রণালীতে সামুদ্রিক টহল পুনরায় শুরু করতে ব্রিটিশ যুদ্ধজাহাজ এইচএমএস মন্ট্রোজ ও এইচএমএস ডিফেন্ডারকে পাঠানো হয়েছে। হরমুজ প্রণালীতে ব্রিটিশ পতাকাবাহী জাহাজ চলাচলে নিশ্চয়তা দিতে এই দুই যুদ্ধজাহাজ কাজ করবে। বিশ্বের মোট জ্বালানি তেলের প্রায় ৩০ শতাংশ উপসাগরীয় অঞ্চল থেকে হরমুজ প্রণালী হয়ে বিভিন্ন দেশে যায়। বেন ওয়ালেস বলেন, গতকাল রাতে আমি মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী মার্ক এসপারের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছি। আমরা উত্তেজনা কমিয়ে আনতে সবপক্ষকে শান্ত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। ইরাকে নিয়োজিত মার্কিন সামরিক বাহিনীর ঘাঁটি গত কয়েকমাসে বেশ কয়েকবার ইরান সমর্থিত ইরাকি মিলিশিয়াদের হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যে ইরান-যুক্তরাষ্ট্রের মাঝে নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ায় অনেকে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। গত সপ্তাহে বাগদাদে মার্কিন দূতাবাসের সামনে বিক্ষোভ ও ভাঙচুর চালায় ক্ষুব্ধ ইরাকিরা। তাদের এই বিক্ষোভে ইরান সমর্থিত ইরাকি মিলিশিয়া গোষ্ঠী ইরাকের পপুলার মোবিলাইজেশন ফোর্সের (পিএমএফ) সদস্যরাও অংশ নেন। দূতাবাস আক্রান্ত হওয়ার পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে ড্রোন হামলা চালিয়ে ইরানের শীর্ষ জেনারেল কাসেম সোলেইমানিকে শুক্রবার সকালের দিকে হত্যা করা হয়। হামলায় পিএমএফ কমান্ডার আবু মাহদি আল-মুহান্দিস ও সোলেইমানির একজন উপদেষ্টাসহ ১০ জন মারা যান। রোববার সকালের দিকে সোলেইমানির মরদেহ ইরানে পৌঁছেছে বলে নিশ্চিত করেছে দেশটির রাষ্ট্রীয় প্রচার মাধ্যম আরআইআরবি। তার মরদেহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় আহভাজ শহরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। সেখানে রাজধানী তেহরানে নেয়ার পর মঙ্গলবার ইরানি এই জেনারেলের দাফন সম্পন্ন হবে। শনিবার বাগদাদে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান বাহিনীর একটি ঘাঁটিতে দু’টি রকেট হামলা ও বাগদাদের সুরক্ষিত গ্রিন জোনে মার্কিন দূতাবাসের কাছে দুটি মর্টারের গোলা আঘাত হেনেছে। ওই হামলার পর ইরানের ৫২ স্থানে কঠোর হামলার হুমকি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেছেন, ইরান যদি আমেরিকানদের ওপর বা যুক্তরাষ্ট্রের কোনো সম্পদ লক্ষ্য করে হামলা চালায়; তবে তেহরানের ৫২ স্থানে ভয়াবহ হামলা চালানো হবে।