পাপিয়া দম্পতির ২০ বছরের কারাদ-

0
165

টাইমস ডেস্ক:
নরসিংদী জেলা যুব মহিলা লীগের বহিষ্ক”ত সাধারণ সম্পাদক শামীমা নূর পাপিয়া ও তার স্বামী মফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে করা মামলায় ২০ বছরের কারাদ-ের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া অস্ত্র আইনের আরেক ধারায় তাদের সাত বছরের কারাদ-ের আদেশ দিয়েছেন আদালত। দুই ধারার কারাদ- একই সঙ্গে চলবে বলে আদেশে উল্লেখ করেছেন বিচারক। রায় ঘোষণার পর আদালতের কাঠগড়ায় কাঁদতে দেখা যায় পাপিয়াকে। গতকাল সোমবার দুপুরে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক কে এম ইমরুল কায়েশ এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার আগে তাদের আদালতে নেয়া হয়। রায় পড়ার সময় পাপিয়া নীরব ছিলেন। বিচারক যখন তাদের কারাদ-ের আদেশ দেন তখন পাপিয়া কাঁদতে থাকেন। এরপর পুলিশ সদস্যরা তাকে কাঠগড়া থেকে প্রিজন ভ্যানে নিয়ে যান।
রায়ের পর্যবেণে বিচারক বলেন, নিজের স্বার্থ হাসিল করার জন্য নিজ বাসায় অস্ত্র-গুলি বা এত বিপুল পরিমাণ টাকা রাখা একজন রাজনৈতিক কর্মীর কাজ না। এ ধরনের রাজনৈতিক কর্মী দেশ ও জাতির জন্য অকল্যাণকর। পর্যবেণে বিচারক আরও বলেন, পাপিয়া ও তার স্বামী সুমন ছিলেন রাজনৈতিক কর্মী। মামলার স্যাপ্রমাণ পর্যালোচনা করলে তাদেরকে রাজনীতি কর্মী বলা যায় না। কারণ একজন রাজনৈতিক কর্মীর বাসায় অস্ত্র, গুলি এবং ৫৮ লাখ ৪১ হাজার টাকা পাওয়া যাওয়ার ঘটনা খুবই দুঃখজনক। এ ধরনের রাজনৈতিক কর্মী দেশ ও জাতির জন্য অকল্যাণকর।
রায়ের পর প্রতিক্রিয়ায় পাপিয়ার আইনজীবী শাখাওয়াত উল্লাহ ভূইয়া রায়কে একটি আবেগী রায় বলে মন্তব্য করেন। আইনজীবী শাখাওয়াত উল্লাহ ভূইয়া বলেন, এ মামলার এক নম্বর সাী জব্দ তালিকা প্র¯’তকারী সাইফুল ইসলাম জবানবন্দিতে বলেছেন অস্ত্র রান্না ঘর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। কিš’ এজাহার ও অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে অস্ত্র ডাইনিং রুমের খাটের তোশকের নিচ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। সেই সাীকে রিকল করে এজাহার মোতাবেক সাজানো জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, এটি একটি আবেগী রায়। কারণ রায়ের পর্যবেণে আদালত বলেছেন, তিনি সজ্জন রাজনীতিক নন। কিš’ এ মামলায় তিনি সজ্জন রাজনীতিক কিনা, সেটা বিচার্য বিষয় ছিল না। অস্ত্র রাখার সুনির্দিষ্ট অভিযোগে এ বিচার হয়েছে। তাই আমরা আসামির সঙ্গে আলোচনা করে উ”চ আদালতে আপিলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবো।
গত ২২ ফেব্রুয়ারি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে দেশত্যাগের সময় পাপিয়াসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। গ্রেপ্তার অন্যরা হলেন- পাপিয়ার স্বামী মফিজুর রহমান ওরফে সুমন চৌধুরী ওরফে মতি সুমন (৩৮), সাব্বির খন্দকার (২৯) ও শেখ তায়্যিবা (২২)। তাদের কাছ থেকে সাতটি পাসপোর্ট, নগদ দুই লাখ ১২ হাজার ২৭০ টাকা, ২৫ হাজার ৬০০ টাকার জাল মুদ্রা, ১১ হাজার ৯১ ইউএস ডলারসহ বিভিন্ন দেশের মুদ্রা জব্দ করা হয়। গ্রেপ্তারের পর ওইদিন রাতেই নরসিংদীর বাসায় এবং ২৩ ফেব্রুয়ারি ভোরে হোটেল ওয়েস্টিনে তাদের নামে বুকিং করা বিলাসবহুল প্রেসিডেন্সিয়াল স্যুটে অভিযান চালানো হয়। এছাড়া ফার্মগেট এলাকার ২৮ নম্বর ইন্দিরা রোডে অব¯ি’ত রওশন’স ডমিনো রিলিভো নামক বিলাসবহুল ভবনে তাদের দুটি ফ্যাটে অভিযান চালিয়ে একটি বিদেশি পিস্তল, দুটি পিস্তলের ম্যাগাজিন, ২০ রাউন্ড পিস্তলের গুলি, পাঁচ বোতল বিদেশি মদ ও নগদ ৫৮ লাখ ৪১ হাজার টাকা, পাঁচটি পাসপোর্ট, তিনটি চেক, বিদেশি মুদ্রা, বিভিন্ন ব্যাংকের ১০টি ভিসা ও এটিএম কার্ড জব্দ করে র‌্যাব। ওই ঘটনায় শেরেবাংলা নগর থানায় অস্ত্র আইনে একটি, বিশেষ মতা আইনে একটি এবং বিমানবন্দর থানায় বিশেষ মতা আইনে আরেকটি মামলা করা হয়। গত ২৯ জুন ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) র‌্যাবের উপপরিদর্শক আরিফুজ্জামান অস্ত্র আইনে মামলায় পাপিয়া ও তার স্বামী মফিজুরের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন। ২৩ আগস্ট ঢাকা মহানগর দায়রা জজ পাপিয়া ও তার স্বামী মফিজুরের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করেন। এ সময় তারা নিজেদের নির্দোষ দাবি করে আদালতের কাছে ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করেন। ৩১ আগস্ট মামলাটির স্যাগ্রহণ শুরু হয়। মামলায় ১২ সাীর মধ্যে ১২ জনই আদালতে স্যা দিয়েছেন।