নির্দেশনা উপেক্ষা করে মিনহাজ নদীর গেট দিয়ে লবণ পানি উত্তোলন, বিস্তীর্ণ অঞ্চলের ব্যাপক ফসলের ক্ষতির শঙ্কা!

0
197
নিজস্ব প্রতিবেদক:

কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা উপেক্ষা করে খুলনার পাইকগাছার বহুলালোচিত মিনহাজ বদ্ধ নদীর স্লুইচ গেট দিয়ে ইজারাদারসহ স্থানীয় কতিপয় স্বার্থান্বেসী মহলের বিরুদ্ধে লবণ পানি উত্তোলনের অভিযোগ উঠেছে। লবণ পানি উত্তোলন অব্যাহত থাকলে বিস্তীর্ণ অঞ্চলের কৃষি ফসলের ব্যাপক ক্ষতির আশংকা করছেন এলাকাবাসী। সর্বশেষ এ ঘটনায়  চেয়ারম্যান ও থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

জানাযায়, উপজেলার গড়ইখালী, লস্কর ও চাঁদখালী ইউনিয়নের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত মিনহাজ বদ্ধ নদী। ২৫২ একর আয়তনের নদী দিয়ে একদিকে যেমন এলাকার পানি নিষ্কাশন হয়ে থাকে তেমনি বদ্ধ জলাশয়ের মিষ্টি পানি ব্যবহার করে নদী পাড়ের কৃষি জমিতে এলাকার কৃষকরা বোরো ধান, তরমুজ ও বিভিন্ন ধরনের সবজির আবাদ করে থাকে।
এদিকে চলতি মৌসুমে লবণ পানি উত্তোলন বন্ধে স্থানীয় সংসদ সদস্যের কঠোর নির্দেশনায় উপজেলা পরিষদের মাসিক সভায় সর্বসম্মতিক্রমে লবন পানি উত্তোলন বন্ধের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সাম্প্রতিক একটি মহল স্লুইচ গেট দিয়ে মিনহাজ নদীতে লবণ পানি উত্তোলন করার জন্য জোর চেষ্টায় গত ১৬ এপ্রিল পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকতারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
এরই মধ্যে হঠাৎ করে গত বৃহস্পতিবার (২১ এপ্রিল) রাত ৯টার দিকে বিধান, প্রসেন, বিলাস ও সাহবাজসহ এলাকার কতিপয় ব্যক্তিরা গেটের পাট তুলে বদ্ধ নদীর ভিতরে লবণ পানি উত্তোলন করে। এসময় বিষয়টি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান, ইউএনও, থানা ওসিসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেন স্থানীরা।
খবর পেয়ে ওই রাতেই থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করলেও  পানি উত্তোলন করা বন্ধ হয়নি। পরের দিন শুক্রবার সকালে থানার ওসির সাথে কথা বলে এলাকাবাসীর উপস্থিতিতে গেটের পাট বন্ধ করে দেন ইউপি চেয়ারম্যান কে.এম আরিফুজ্জামান তুহিন।
সর্বশেষ নদী পাড়ের কৃষি জমিতে বর্তমানে পর্যাপ্ত ফসল থাকায় লবণ পানি উত্তোলন অব্যাহত থাকলে ফসলের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্খা করছেন এলাকাবাসী।
এব্যাপারে কানাখালী গ্রামের কৃষক নিমাই বাছাড় জানান, বর্তমানে হাজার হাজার বিঘা জমিতে তরমুজসহ অন্যান্য কৃষি ফসল রয়েছে এখন লবণ পানি তুললে প্রচুর ক্ষতি হবে।
কমল চন্দ্র মন্ডল নামের আরেকজন জানান, এক বিঘা জমির ফসল উৎপাদন করতে প্রচুর খরচ হয়। গেট দিয়ে লবণ পানি উঠাইলে তাদের চরম ক্ষতি হবে।
গইড়খালী ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম কেরু জানান, তিনি সবসময় লবণ পানির বিপক্ষে রয়েছেন। বর্তমানে লাখ টাকায় বিঘা প্রতি তরমুজ বিক্রি হচ্ছে। এসময়ে লবণ পানি উত্তোলন করা হলে কৃষি ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হবে। অতএব কোনো ভাবেই মিনহাজ নদীর গেট দিয়ে লবণ পানি উঠানো যাবে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
লস্কর ইউপি চেয়ারম্যান কে.এম আরিফুজ্জামান তুহিন জানান, ইতোমধ্যে মিনহাজ নদীর গেটের সামনে খনন করার জন্য ইউনিয়ন পরিষদ থেকে একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েচে। অতিদ্রুত প্রকল্পের কাজ শুরু করা হবে। এরইমধ্যে হঠাৎ বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯ টার দিকে এলাকাবাসী জানান স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি মিলে রাতের আঁধারে স্লুইচ গেটের পাট সরিয়ে জোয়ারের লবন পানি উত্তোলন করছে। তাৎক্ষণিক বিষটি থানা ওসিসহ সংশ্লিষ্ঠ সকলকে অবহিত করলে শুক্রবার সকালে ওসি সহ সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনায় তিনি নিজে সরেজমিনে গিয়ে গেটের পাট বন্ধ করে দিয়েছেন বলে জানিয়েচেন তিনি।
সর্বশেষ নদী পাড়ের হাজার হাজার বিঘা জমির কৃষি ফসল রক্ষায় চলতি মৌসুমে মিনহাজ নদীর স্লুইচ গেট দিয়ে লবণ পানি উত্তোলন বন্ধ রাখার জোর দাবী জানিয়েছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ ভুক্তভোগী এলাকাবাসী।