নারায়ণগঞ্জে কিশোর গ্যাংয়ের দুপক্ষের সংঘর্ষে একজন নিহত

0
197

টাইমস ডেস্ক:
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে কিশোর গ্যাংয়ের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে নাইম (১৭) নামে এক কিশোর নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে আরও চারজন। গত শুক্রবার রাতে ফতুল্লার ইসদাইর বুড়ির দোকান এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় হৃদয় ও হাবিব নামে দুইজনকে আটক করেছে পুলিশ। নিহত নাইম ফতুল্লার ইসদাইর এলাকার মৃত খলিল মিয়ার ছেলে। আর আটক হৃদয় ও হাবিব একই এলাকার বাসিন্দা। স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন যাবৎ ফতুল্লার ইসদাইর বুড়ির দোকান এলাকায় কিশোর গ্যাংয়ের উৎপাত চলছে। প্রায়ই কিশোরদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। প্রকাশ্যে ধারালো ছুরি ও রাম দা নিয়ে মহড়া নিত্যদিনের ঘটনায় পরিনত হয়েছে। এলাকাবাসী বিষয়টি থানায় জানালে পুলিশ এসে মহড়া দিয়েও কাউকে আটক করতে পারেনি। দীর্ঘদিনের বড় ভাই ছোট ভাই ও মাদক ক্রয়-বিক্রয় নিয়ে বিরোধের জের ধরে কিশোর নাইমকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেছে হৃদয় নামে আরেক কিশোর। ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশের এসআই নুর মোহাম্মদ জানান, ইসদাইর বুড়ির দোকান এলাকার একটি চায়ের দোকানে তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে নাঈম ও লিমন তর্কে লিপ্ত হয়। কিছুক্ষণ পর দুই পক্ষের লোকজন এসে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। তারা কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য। প্রতিপক্ষ গ্রুপের ছুরিকাঘাতে নাঈম গুরুতর আহত হলে তাকে হাসপাতালে নেয়ার পর চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। তিনি আরও জানান, নাঈমের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। সংঘর্ষে আল-আমিন, লিমনসহ চারজন ছুরিকাঘাতে আহত হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে দুইজনকে আটক করা হয়েছে।
অপহরণকারী চক্রের ১১ সদস্য আটক: এদিকে ফতুল্লা থেকে কিশোর গ্যাংয়ের অপহরণকারী চক্রের ১১ জন সদস্যকে আটক করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব-১১)। গতকাল শনিবার বিকেলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান র‌্যাব-১১ এর সিনিয়র এএসপি সুমিনুর রহমান। গত শুক্রবার রাতে ফতুল্লা মডেল থানাধীন চানমারী মাউরাপট্টি সেকশন মাঠ এলাকায় অভিযান চালিয়ে কিশোর গ্যাংয়ের এই ১১ সদস্যকে আটক করা হয়। তারা হলেনÑ রাসেল মিয়া ওরফে রাসেল (১৮), জালাল (১৮), আমিনুল ইসলাম (২৩), জনি ওরফে শফিকুল ইসলাম (১৮), জাকির হোসেন ওরফে জাকির (১৮), আনোয়ার (১৮), জুয়েল রানা (২২), আবু নাঈম (১৮), ফেরদৌস ইসলাম (১৮), আব্দুল্লাহ ওরফে শুভ (২৪) ও সাইফুল ইসলাম ওরফে শান্ত (১৮)। আটকদের জিজ্ঞাসাবাদ ও প্রাথমিক তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায়, আটকরা সবাই দুষ্কৃতিকারী ও কিশোর গ্যাং গ্রুপের সক্রিয় সদস্য। তারা দীর্ঘদিন যাবত পরিকল্পিতভাবে দলবদ্ধ হয়ে সংঘাত সৃষ্টি ও জনমনে ভয়ভীতি দেখিয়ে এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করে আসছিল। এছাড়াও ওই এলাকায় কোন অপরিচিত লোক এলে তাকে জিম্মি করে মূল্যবান জিনিসপত্র ছিনিয়ে নিতো। ৮ অক্টোবর কিশোর গ্যাং গ্রুপের ওই সদস্যরা অপর এক কিশোরকে অপহরণ করে চানমারী মাউরাপট্টি সেকশন মাঠ এলাকায় একটি পরিত্যক্ত ভবনে আটকে রাখে এবং মারধর করে তার কাছে থেকে ৩ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। পরবর্তীতে ভিকটিমের মায়ের কাছ ফোন করে ৪০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। ভিকটিমের মা ১০ হাজার টাকা দেবে বলে জানান। তারপর ভিকটিমের মা র‌্যাবের কাছে অভিযোগ করেন। ভিকটিমের মায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে র‌্যাব-১১ ঘটনার সত্যতা পেয়ে ৯ অক্টোবর দিবাগত রাতে ভিকটিমকে উদ্ধার করে ওই কিশোর গ্যাংয়ের ১১ সদস্যকে আটক করে। তাদের বিরুদ্ধে নারায়গঞ্জের ফতুল্লা থানায় আইনানুগ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন বলে জানায় র‌্যাব।