নগরীতে স্বর্ণ চোরাচালান ও দস্যুতার সঙ্গে জড়িত ৩ পুলিশ সদস্যসহ গ্রেফতার ৪

0
172

নিজস্ব প্রতিবেদক:
স্বর্ণ চোরাচালান ও দস্যুতার সঙ্গে জড়িত তিন পুলিশ সদস্যসহ ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে কেএমপির লবণচরা থানা পুলিশ। খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ (কেএমপি)’র অতিঃ উপ-পুলিশ কমিশনার (সদর) অতিঃ দায়িত্বে-মিডিয়া অ্যান্ড কমিউনিটি পুলিশিং (পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত) মিয়া মোহাম্মদ আশিস বিন্ হাছান, পিপিএম-সেবা স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে জানা যায়, বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) লবণচরা থানার জিডি নং-৪২৬ মূলে দুপুর অনুমান সাড়ে ১২টার সময় মোবাইল-৩ ডিউটি করাকালে লবণচরা থানাধীন সাচিবুনিয়া বিশ্বরোড মোড়ে চেকপোক্ট করাকালীন সময়ে উক্ত থানার ভূতপূর্ব এসআই(নিঃ) মোঃ মোস্তফা জামান সঙ্গীয় অফিসার ও ফোর্সসহ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে যে, বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) টুঙ্গীপাড়া এক্সপ্রেসের একটি বাসে অবৈধ স্বর্ণের বার নিয়ে একজন ব্যক্তি খুলনা মহানগরীতে প্রবেশ করবে। উক্ত সংবাদ প্রাপ্ত হয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত না করে ভুতপূর্ব এসআই(নিঃ) মোঃ মোস্তফা জামান সঙ্গীয় এএসআই(নিঃ) মোঃ আহসান হাবিব ও কনস্টেবল ৫৫২৮ মোঃ মুরাদ হোসেন যোগসাজসে মোহাম্মদনগর সাচিবুনিয়া বিশ্বরোড মোড়স্থ রূপসা ব্রীজ হতে জিরো পয়েন্টগামী মহাসড়কের দক্ষিণ পাশে বৈদ্যুতিক খুটির সামনে পাকা রাস্তার উপর চেকপোষ্ট ডিউটি পরিচালনা করে তখন পুলিশ দেখে একজন ব্যক্তি টুঙ্গীপাড়া পরিবহন থেকে নেমে সন্দেহজনকভাবে দ্রæত হেটে যেতে দেখে তাকে দাঁড়ানোর জন্য বললে উক্ত আসামী দৌঁড়ে পালানোর চেষ্টাকালে অফিসার ও ফোর্সের সহায়তায় দুপুর ২টার সময় তাকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিকে পালানোর কারণ জিজ্ঞাসা করলে তার নিকট স্বর্ণের বার আছে মর্মে স্বীকার করে। অতঃপর আসামী ব্যাসদেব দে (৩৯) এর পরিহিত জিন্স প্যান্টের বেল্টের নিচে জিন্স প্যান্টের বর্ডার কেটে সুকৌশলে বানানো গোপন পকেটে রক্ষিত অবস্থা হতে খাকি স্কচ টেপ দ্বারা মোড়ানো ৬ টি স্বর্ণের বার, নিজ হাতে বের করে এসআই(নিঃ) মোঃ মোস্তফা জামানের কাছে দেয়। পরবর্তীতে গ্রেফতারকৃত আসামী ব্যাসদেব দে-কে ভুতপূর্ব পুলিশ সদস্যরা ভয়ভীতি প্রদর্শন করে ৩ পিচ স্বর্ণের বার কেড়ে নেয় এবং তার নিকট থাকা ৩ পিচ স্বর্ণের বার সহ ছেড়ে এগিয়ে দেয়।
ধৃত ১নং আসামীকে স্বর্ণের বার চোরাচালানের মাধ্যমে এনে বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে নিজ হেফাজতে রাখায় The Special Power Act, 1974 Gi 25 B (1) (A) ধারার অপরাধ করেছে এবং এজাহার নামীয় ২নং আসামী মোঃ মোস্তফা জামান, ৩নং আসামী মোঃ আহসান হাবিব ও ৪নং আসামী মোঃ মুরাদ হোসেন ১নং আসামীর নিকট হতে ৩ পিচ স্বর্ণের বার ভয়ভীতি প্রদর্শনপূর্বক ঘটনাস্থল হতে কেড়ে নিয়ে পেনাল কোডের ৩৯২ ধারার অপরাধ করেছে। অত:পর বাকি ৩ টি স্বর্ণের বার উদ্ধারের জন্য অভিযান পরিচালনা করে ও ধৃত আসামীদের জব্দকৃত আলামতসহ থানায় এসে এজাহার দায়ের করা হয়েছে। এতদসংক্রান্তে স্বর্ণের বার চোরাচালানকারী ১ নং আসামী ব্যাসদেব দে বিজ্ঞ আদালতে ফৌজদারী কার্যবিধি আইনের ১৬৪ ধারা মোতাবেক অপরাধের সাথে তার জড়িত থাকার বিষয়টি বর্ণনা করে দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, কেএমপি অপরাধ দমন ও প্রতিরোধে সর্বদা সচেষ্ট রয়েছে। অপরাধী যেই হোক না কেন বা অপরাধীর পরিচয় যাই হোক না কেন। তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ সর্বদা অঙ্গিকারাবদ্ধ। কোন ব্যক্তির ব্যক্তিগত অপরাধের দায় প্রতিষ্ঠান হিসেবে পুলিশ বিভাগ বহন করে না। স্বর্ণ চোরাচালান ও দস্যুতার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তি ও পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে প্রচলিত ফৌজদারি আইনে মামলা রুজু করা হয়েছে এবং তাদেরকে গ্রেফতারপূর্বক যথানিয়মে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। এ ঘটনা সংক্রান্তে আসামিদের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ এবং অন্য কেউ জড়িত আছে কিনা তার রহস্য উদ্ঘাটনের জন্য ৫ দিনের পুলিশ রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে। স্বর্ণ চোরাচালান ও দস্যুতার সঙ্গে আর কেউ জড়িত থাকলে তাদের বিরুদ্ধে ও কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থ গ্রহণ করা হবে।