তিন সেকেন্ডেই কোহলিকে রাজি করান সৌরভ

0
226

খুলনাটাইমস স্পোর্টস : জাতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক বিরাট কোহলিকে কোলকাতার দিবারাত্রির টেস্টের জন্য রাজি করতে সক্ষম হয়েছেন ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই) সভাপতি সৌরভ গাঙ্গুলি। বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী ও ধনী প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ আসনে বসার মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যে গোলাপী বলের টেস্টের বিষয়ে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের অবস্থানও সফলতার সঙ্গে পরিবর্তন করতে সক্ষম হন গাঙ্গুলি। তিন বছর আগেই বোর্ডের টেকনিক্যাল কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে ঘরোয়া ক্রিকেটে গোলাপী বলের খেলাটি চালু করেছিলেন তিনি। ইতোপূর্বে অস্ট্রেলিয়ার প্রস্তাব ফিরিয়ে দেয়ার পর আগামী ২২ থেকে ২৬ নভেম্বর কোলকাতার ইডেন গার্ডেনে বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রথমবারের মত দিবারাত্রির টেস্টে অংশগ্রহণ করতে যাচ্ছে ভারত। চার বছর আগে অবশ্য অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড দিবারাত্রির ম্যাচ খেলে ফেলেছে। গত ২৪ অক্টোবর মুম্বাইয়ে কোহলিকে নিয়ে নির্বাচক কমিটির বৈঠকের প্রসঙ্গ টেনে সৌরভ বলেন,‘ সত্যিকার অর্থে ভারত কেন এডিলেডে দিবারাত্রির টেস্ট ম্যাচ খেলতে রাজি হয়নি আমি জানি না। এর কারণ কি তাও জানি না। প্রায় এক ঘন্টার বৈঠকের শুরুতেই আমি কোহলিকে বলেছিলাম আমাদের দিবারাত্রিতের টেস্ট খেলা দরকার। তিন সেকেন্ডের মধ্যেই তিনি জবাব দেন চলেন সেই দিকেই এগিয়ে যাই।’ পাঁচ বার আইসিসি’র বর্ষ সেরা আম্পায়ারের খেতাব পাওয়া সিমন টাফেলের ‘ফাইন্ডিং দ্যা গ্যাপ’ বইয়ের প্রকাশনা উৎসবে যোগ দিয়ে এসব কথা বলেন গাঙ্গুলি। গত বছর এডিলেড ওভালে ভারতকে গোলাপী বলের ক্রিকেট খেলার প্রস্তাব দিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। ওয়েস্ট ইন্ডিজও একই ধরনের প্রস্তাব দিয়েছিল ভারতীয়দের। কিন্তু বিসিসিআই রাজি হয়নি। সৌরভ বলেন, ‘আমি ঠিক বঝুতে পারছি না তখন কি ঘটেছিল। এমন খেলায় সম্মত না হওয়ার কারণই বা কি। তবে দিরা রাত্রির টেস্টকে আমার কাছে সঠিকই মনে হচ্ছে। সে (বিরাট) অনুধাবন করেছে দর্শকহীন মাঠে টেস্ট আয়োজন করে কোনভাবেই এটিকে এগিয়ে নেয়া যাবে না।’ গাঙ্গুলির মতে এই ধারা পুনরায় উপমহাদেশে টেস্ট ক্রিকেটের জনপ্রিয়তা ফিরিয়ে আনতে সহায়তা করবে। সর্বশেষ ভারত বনাম দক্ষিণ আফ্রিকার ম্যকার তিন ম্যাচের সিরিজটিও খুব একটা প্রভাব ফেলতে পারেনি সমর্থকদের মধ্যে। যদিও সিরিজে সফরকারী প্রেটিয়াদের ৩-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ করেছে স্বাগতিক ভারত। বিসিসিআই প্রধান বলেন, ‘আমি জানি টি-২০ ক্রিকেটের প্রতিটি ম্যাচেই দর্শকরা কানায় কানায় পূর্ণ করে দেয় গোটা স্টেডিয়াম। কিন্তু একেবারেই সঠিকভাবে আয়োজন সত্ত্বেও টেস্ট ক্রিকেটে দর্শকদের মাঠে ফিরিয়ে আনা যায় না। তাই আমরা ভারতেই এটি শুরু করতে চাই। আমার মনে হয় নতুন ধারার এই টেস্ট দর্শকদের মাঠে ফিরিয়ে আনবে। এখন মানুষের জীবনধারা পাল্টে গেছে। আপনি নিশ্চয় ইচ্ছে করলেও কর্মস্থল ত্যাগ করতে পারবেন না। এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অধিকাংশই পরিবর্তনকে ভাল বলছে। বিপণনের জন্যও এই ধারার খেলা বেশী উপযুক্ত হবে উল্লেখ করে সৌরভ বলেন, ‘আপনি যখন নিজের সুবিধাকে বিষর্জন দিতে পারবেন, তখনই ভেবে বের করতে পারবেন কোনটি আসলে বেশী ভাল হবে। আমার মনে হয় গোলাপী বলের এই ক্রিকেট দর্শকদের ফের মাঠে ফিরিয়ে আনবে। ফলে টেস্ট ক্রিকেটকেও ভালভাবে বিপণন করা যাবে।’ এ সময় গাঙ্গুলি স্মরণ করিয়ে দেন ২০০১ সালের ইডেন গার্ডেনের টেস্টের কথা। যেখানে ঘুরে দাঁড়িয়ে অস্ট্রেলিয়াকে ১৭১ রানে হারিয়েছিল ভারত। সৌরভ বলেন, ‘আমার ক্যারিয়ারের শততম টেস্ট ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল এমসিজিতে বক্সিং ডে টেস্ট হিসেবে। ওই রকম একটি মুহূর্ত পাওয়াটিকে আপনি অবশ্যই ভাগ্যবান মনে করবেন। ওই টেস্টের প্রথম দিনে মাঠে ৭০ হাজার দর্শক সমাগম ঘটেছিল। যেমনটি সচরাচর দেখা যায় এ্যাশেজ সিরিজে।’