তালেবানের উত্থানে নতুন চ্যালেঞ্জে সোশাল মিডিয়া

0
129

টাইমস ডেস্ক বিদেশ : আফগানিস্তানে দ্রæত দখল প্রতিষ্ঠার পর বেশ কিছু দেশের সন্ত্রাসী তালিকায় থাকা তালেবানের অনলাইন ‘কন্টেন্ট’ নিয়ে নতুন চ্যালেঞ্জের মধ্যে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো। বার্তাসংস্থা রয়টার্সের একটি প্রতিবেদনে তালেবানসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী দলের ‘কন্টেন্ট’ নিয়ে সোশাল মিডিয়া কোম্পানিগুলোর ভিন্ন ভিন্ন অবস্থানের সঙ্গে বিপত্তির বিষয়টিও তুলে ধরা হয়েছে। সোশাল মিডিয়া জায়ান্ট ফেইসবুক সোমবার জানিয়েছে, তারা তালেবানকে সন্ত্রাসী দল হিসেবে বিবেচনা করে এবং তাদের নিষিদ্ধ করাসহ দলটির সমর্থনে জানিয়ে বিভিন্ন পোস্টও তারা নিষিদ্ধ করেছে। তবে তালেবান সদস্যরা আফগানবাসীর সঙ্গে ফেইসবুকের মেসেজিং সেবা হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে ঠিকই সরাসরি যোগাযোগ করছে। ফেইসবুকের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, আফগানিস্তানে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রয়েছে তাদের প্রতিষ্ঠান। কোনো অ্যাকাউন্টের সঙ্গে দেশটির কোনো নিষিদ্ধ সংগঠনের কার্যকলাপের সঙ্গে সম্পর্ক পেলে হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবস্থা নেবে। এমনকি অ্যাকাউন্টও বাতিল করা হতে পারে। টুইটার অবশ্য আফগানিস্তান দখলের সর্বশেষ অবস্থা জানিয়ে তালেবান মুখপাত্রসহ লাখো অনুসারীর পোস্ট অনুমোদন দিয়েছে। রয়টার্সের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে জানতে চাইলে টুইটার কর্তৃপক্ষ তাদের সহিংস সংগঠনবিরোধী নীতিমালা তুলে ধরলেও সেটা কিভাবে নির্ধারণ করা হয় তার পরিষ্কার ব্যাখ্যা দেয়নি। রয়টার্সটুইটারের নীতি বলছে, সন্ত্রাসবাদ অথবা বেসামরিক লোকজনের প্রতি সহিংসতা উস্কে দেয় এমন গোষ্ঠীকে নিজেদের প্ল্যাটফর্মে তারা অনুমোদন দেয় না। আফগানিস্তানে তালেবান ফিরে আসায় বাক স্বাধীনতা এবং মানবাধিকার, বিশেষ করে নারীর অধিকার বিপন্ন হওয়ার মতো উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। এমনকি আবারও বৈশ্বিক সন্ত্রাসবাদেরও ‘স্বর্গ’ হয়ে উঠতে পারে আফগানিস্তান। তবে তালেবান নেতারা বলছেন, তারা শান্তিপূর্ণ আন্তর্জাতিক সম্পর্ক চান এবং আফগানবাসীকে রক্ষারও প্রতিশ্রæতি দিচ্ছেন তারা। বিশ্ব নেতাদের বিভিন্ন বার্তা এবং ক্ষমতাসীন দলগুলোর কন্টেন্ট ব্যবস্থাপনা নিয়ে এ বছর উচ্চ পর্যায়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রধান সোশাল মিডিয়া প্রতিষ্ঠানগুলো। তারই ধারাবাহিকতায় গত ৬ জানুয়ারি ওয়াশিংটনের ক্যাপিটলে দাঙ্গা ও সহিংসতা উস্কে দেওয়ার কারণে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প এবং মিয়ানমারে অভ্যুত্থানের ঘটনায় দেশটির সেনাবাহিনীকে নিষিদ্ধ বিভিন্ন পোস্ট নিষিদ্ধ করা হয়। মিয়ানমারে বিদ্বেষমূলক বক্তব্য ঠেকাতে ব্যর্থতা নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়া ফেইসবুক জানিয়েছে, অভ্যুত্থানের ফলে ‘অফলাইনে’ ক্ষতির ঝুঁকিসহ মানবাধিকার লঙ্ঘনের কারণে সামরিক বাহিনীকে নিষিদ্ধ করা হয়। ইউটিউব কর্তৃপক্ষ তালেবানের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ কিংবা নিষিদ্ধ করেছে কিনা জানতে চাইলে তারা কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। তবে প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, ভিডিও শেয়ারিংয়ের ক্ষেত্রে নিজেদের ‘সন্ত্রাসী গোষ্ঠী’ বিষয়ক নীতি বাস্তবায়নে তারা ফরেইন টেরোরিস্ট অর্গানাইজেশনস (এফটিও) এর তালিকার উপর নির্ভর করে। এক্ষেত্রে ইউটিউব কর্তৃপক্ষ যুক্তরাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এফটিও তালিকায় তালেবানের নাম না থাকার বিষয়টির দিকে ইঙ্গিত করেছে। যদিও তালেবানকে ‘স্পেশালি ডেজিগনেটেড গেøাবাল টেরোরিস্ট’ আখ্যায়িত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। তালেবানকে ক‚টনৈতিকভাবে স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়ে বেশিরভাগ দেশ কম আগ্রহ দেখানোর কারণে বিষয়টি আরও জটিল হয়ে উঠেছে। তবে তালেবানের বিষয়ে বিশ্বের অবস্থান পাল্টাতেও পারে। তালেবানের সঙ্গে চীন এবং যুক্তরাষ্ট্রের আলোচনার কথা উল্লেখ করে দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তা বিষয়ক গবেষক এবং ইউনিভার্সিট অব এডিনবার্গের ডক্টরাল প্রার্থী সিনান সিয়েচ জানান, আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও তালেবানের গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে।