তালায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার!

0
288

রোকনুজ্জামান টিপু, তালা (সাতক্ষীরা):
সড়ক সংষ্কারে পুরনো রাস্তায় নুতন মাটি দিতে হবে। পাশের নদী থেকে স্কেবেটর দিয়ে কেটে দেওয়া হচ্ছে মাটি। এতে এক সময়ের সংকুচিত সড়কের পাশে লাগানো ৪ টি গাছ হেলে পড়েছে,যার গোড়ার প্রায় ৯০ শতাংশ মাটি আগেই গিলে খেয়েছে পাকুড়িয়া নদী। সরকারের উন্নয়ন অগ্রযাত্রার ধারাবাহিকতায় ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে তালা উপজেলার হরিহরনগর-রাজাপুর প্রায় সাড়ে ৪ কি:মি: রাস্তা নির্মাণের কাজ এগিয়ে চলেছে। কাজটি বাস্তবায়ন করছে তালারই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স বসু ট্রেডার্স।
জরাজীর্ণ সড়কটির ওয়ার্কওর্ডার হয়েছে ১২ ফুট প্রস্থ’র। আর তা বাস্তবায়নে পুরনো সড়কের ৪টি শিশু গাছ হেলে পড়েছে পাকুড়িয়ায়। গাছগুলি বাঁচাতে হলে সড়ক সরু হবে। আর এমনটি হলে,অর্থ বাঁচলেও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান হারাবে দীর্ঘ দিনের অর্জিত সুনাম। ঠিক এমন পরিস্থিতিতে বিষয়টিকে পুঁজি করে একটি সুযোগ সন্ধানী মহল ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের বিষোদগারে মেতে উঠেছে। এমন অভিযোগ করেছেন খোদ ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি সচেতন এলাকাবাসী। ভূল তথ্য দিয়ে বিভিন্ন মিডিয়াতেও মিথ্যাচার করা হচ্ছে।
সরেজমিনে প্রতিবেদনকালে সড়ক নির্মাণে দৃশ্যত, মাত্র ৪টি গাছের হেলে পড়ার চিত্র চোখে মিললেও খবরে অর্ধ শতাধিক গাছের তথ্য দিয়ে কতৃপক্ষকেও বিভ্রান্ত করা হচ্ছে। অভিযোগে বলা হচ্ছে, সড়কের পাশের কোনো গাছ কাটতে হলে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের অনুমতির প্রয়োজন হয়। তবে সড়কটির প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব বিবেচনায় কতৃপক্ষ সড়কটি টেন্ডারে দেওয়ার আগে নিশ্চই সরেজমিনে নক্সা প্রস্তুত করেছেন। আর এমনটি হলে পাকুড়িয়া নদীর তীরে রাস্তার পাশে লাগানো গাছগুলির গোড়ার ৯০ শতাংশই মাটি শুণ্যতার বিষয়টি চোখে পড়েছিল। তাছাড়া এমন প্রকল্প এলাকার কোন রাস্তায় কোন গাছ ঝুঁকিপূর্ণ থাকলে সড়ক বাস্তবায়নের আগে এসকল গাছের টেন্ডার হওয়ার কথা। হয়তোবা সড়কে এমন ঝুঁকিপূর্ণ গাছ কর্তনের প্রয়োজনীয়তা মনে হয়নি কতৃপক্ষের,অথবা তা ছিল কতৃপক্ষের গাফিলতি। সড়ক বাস্তবায়নে এনটি হলে গাফিলতির বিষটি চোখে পড়ার কথা থাকলেও সুসোগসন্ধারী ঠিকাদারের বিরুদ্ধাচারণে রীতিমত মাঠে নেমেছেন।
ঠিকাদার রাস্তা বাস্তবায়নে কোন দূর্নীতি বা অনিয়মের আশ্রয় নিলে তার বিরুদ্ধাচারণের কথা। কিন্তু সুষ্ঠু বাস্তবায়নে কোন প্রশ্ন না থাকায় এবার তারা গাছ পড়ার বিষয়টিকে পুঁজি করে ঠিকাদারের পিছু নিয়েছেন।
এলাকার সচেতন মহলের প্রশ্ন কারা ঠিক কি উদ্দেশ্যে ঠিকাদারের বিরুদ্ধাচারণ করছেন? আর ঠিকাদার ক্ষতিগ্রস্থ হলে কাদের লাভ? নাকি অবৈধ সুযোগ বঞ্চিত হয়ে পরিকল্পিতভাবে কেউ বা কারা তার পিছু নিয়েছে? ইত্যাদি নানা বিষয় প্রশ্নবিদ্ধ করেছে সচেতন এলাকাবাসীকে।
সড়কের দায়িত্বে থাকা তালা উপজেলা প্রকৌশল দপ্তরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী বিজন কুমার মন্ডল সাংবাদিকদের বলেন, সড়ক নির্মাণে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের গাছ কাটার নিয়ম নেই। তবে এখানে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কোন গাছই কাটেনি,বরং মাটি বিহীণ ৪ টি গাছ উপড়ে পড়েছে তাই অনিয়মের প্রশ্নই আসেনা।
সাতক্ষীরা স্থানীয় সরকার প্রকৗশলী দপ্তরের (এলজিইডি) তত্বাবধায়নে তালা উপজেলার হরিহরনগর-রাজাপুর পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৪ কি:মি: সড়ক নির্মাণের কাজটি পায় তালার মেসার্স বসু ট্রেডার্স। চলতি মাসে কাজটি শেষ হওয়ার কথা থাকলেও নানা প্রতিবন্ধকতা ও সংকটে পুরোদমে কাজ এগিয়ে নিলেও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এখনো কাজ শেষ করতে পারেনি। যদিও কাজের মেয়াদ বৃদ্ধির জন্য ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ইতোমধ্যে যথাযথ কতৃপক্ষের নিকট আবেদন করেছেন।
তালা উপজেলা প্রকৌশলী মফিজ মোল্ল্যার উদ্বৃতি দিয়ে সড়কের পাশে কোনো গাছ থাকলে তা প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে কাটতে হবে বলে দাবি করা হলেও প্রতিষ্ঠান কোন গাছই কাটেনি। যা তদন্তপূর্বক সত্যতা নিশ্চিত হবে।
ঠিকাদারী প্রতিষ্টান মেসার্স বসু ট্রেডার্সের মালিক কল্যাণ বসু জানান, কোন প্রকার অনিয়ম-দূর্নীতির আশ্রয় কিংবা সড়কের কোন গাছ তারা কাটেননি। সড়ক প্রসস্থকরণে পাশের নদী থেকে স্কেবেটর দিয়ে মাটি কেটে তা সড়কের পাশে ফেলা হচ্ছে। সড়কের পাশের ৪ টি শিশু গাছ উপড়ে আগে থেকেই পাকুড়িয়া নদীতে পড়েছিল। বরং পড়ে গাছগুলি সরিয়ে সেখানে মাটি ভরাট করছেন তারা। তাছাড়া রাস্তার গাছ উপড়ে তাদের লাভ কোথায়।