টাইমস প্রতিবেদক:
করোনাভাইরাসের মহামারীর পরিস্থিতি সামাল দিতে যখন বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশও হিমশিম খাচ্ছে, ঠিক তখনও খুলনায় চিংড়িতে অপদ্রব্য (জেলি) পুশ বন্ধ করা যাচ্ছে না। ওজন বাড়ানোর জন্য এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী বাগদা ও গলদা চিংড়িতে পুশ করে জেলিসহ বিভিন্ন অপদ্রব্য। এরপর রপ্তানি করা এসব চিংড়ি মাঝে মধ্যেই বিদেশ থেকে ফেরত পাঠানো হচ্ছে দেশে। এর ফলে হুমকির মুখে পড়ছে হোয়াইট গোল্ড খ্যাত চিংড়ি রপ্তানির ভবিষ্যৎ। নিয়মিত জেলা প্রশাসন, র্যাব, পুলিশ, কোস্টগার্ড অভিযান পরিচালনা করলেও অসাধু ব্যবসায়ীরা তাদের কর্মকা- অব্যাহত রেখেছে।
সূত্র জানায়, গত বৃহস্পতিবার (৮ অক্টোবর) রাতে র্যাব-৬’র কোম্পানী কমান্ডার মেজর আনিস ও এএসপি পহন চাকমার নেতৃত্বে একটি আভিযানিক দল খুলনার ডুমুরিয়া থানাধীন শাহাপুর এলাকায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে আনুমানিক ৫’শ কেজি অবৈধভাবে জেলি পুশকৃত চিংড়ি জব্দ করে। এসময় মৎস্য এবং মৎস্যজাত দ্রব্য (পরিদর্শন ও মান নিয়ন্ত্রণ) আধ্যাদেশ, ১৯৮৩ এর ১০ ধারায় (২) ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ এর ৫১ ধারা অনুযায়ী মৎস্য ব্যাবসায়ী ডিপো মালিক সত্য প্রসাদ ও শম্পা মল্লিককে ২০ হাজার টাকা করে মোট ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। অভিযানে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ছিলেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সঞ্জীব কুমার দাশ। এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. আবু বকর সিদ্দিকসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। আটককৃত চিংড়ি খাদ্য হিসাবে গ্রহণ নিরাপদ না হওয়ায় ডুমুরিয়ার উপজেলার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সিনিঃ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার তত্ত্বাবধায়নে ধ্বংস করা হয়।
এ বিষয়ে র্যাব-৬ এর লিগ্যাল এন্ড মিডিয়া অফিসার এএসপি মো. মাহবুব উল আলম জানান, ‘হোয়াইট গোল্ড খ্যাত চিংড়িতে যাতে অপদ্রব্য পুশ বন্ধ করতে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। ডুমুরিয়ার মতো র্যাব-৬’র আওতাধীন প্রতিটি বাজারেই নজরদারি রয়েছে। ভবিষ্যতেও এমন অভিযান অব্যাহত থাকবে।’
এর আগে গত সোমবার (৬ অক্টোবর) জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যজিস্ট্রেট দেবাশীষ বসাকের নেতৃত্বে খুলনার রূপসা উপজেলার বাগমারা এলাকায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়। এসময় তিনজন ব্যক্তিকে চিংড়িতে জেলি পুশ করতে দেখেন কর্তব্যরত নির্বাহী ম্যজিস্ট্রেট, মৎস্য বিভাগের কর্মকর্তাগণ এবং কোস্টগার্ডের সদস্যগণ। সোহান শেখ (১৯), মোঃ শাহাজাহান (২২) ও শেখ কানন (২৩) নামের উক্ত তিন আসামি ও জেলি পুশ করার উদ্দেশ্যে চিংড়ি পরিবহনকারী ভ্যানচালক ইব্রাহিম হাওলাদার (৩০) কে হাতেনাতে আটক করেন কোস্টগার্ডের সদস্যগণ। পরে তারা তাদের দোষ স্বীকার করায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ‘ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯’ এর যথাযথ ধারার বিধান অনুযায়ী সোহান শেখ (১৯), মোঃ শাহাজাহান (২২) ও শেখ কানন (২৩)- কে ১৫ দিন করে বিনাশ্রম কারাদ- এবং উক্ত তিন জনসহ ভ্যান-চালক ইব্রাহিম হাওলাদার (৩০)- কে ২৫ হাজার টাকা করে মোট ১ লাখ টাকা জরিমানা করেন।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (মিডিয়া) দেবাশীষ বসাক জানান ‘যেকোন অপরাধের বিরুদ্ধে সব সময়ই অভিযান চালানো হচ্ছে। ভোক্তাদের অধিকার সংরক্ষণ ও হোয়াইট গোল্ড খ্যাত চিংড়ির রপ্তানি আয় সমুন্নত রাখতে জেলা প্রশাসন এমন অভিযান নিয়মিত অব্যাহত থাকবে।’