ডায়াবেটিস রোগীদের পায়ের বিশেষ যত্ন

0
273

খুলনাটাইমস লাইফস্টাইল ডেস্ক: জার্মানিতে শতকরা ৮৪ জন ডায়াবেটিস রোগীই ডাক্তারের কাছে পায়ের যত্নের পরামর্শ জানতে চান। ডায়াবেটিস স্নায়ুর ক্ষতি করতে পারে,ফলে তাঁদের ব্যথার অনুভূতি কমে যায়। ডায়াবেটিস রোগীর পায়ের যত্নের বিশেষজ্ঞের দেওয়া ১০টি টিপস থাকছে।
নিয়মিত চেকআপ
মানুষের শরীরে কোনো সমস্যা হলে, তা প্রথম জানিয়ে দেয় ব্যথা। তবে ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে রক্ত সঞ্চালনের অসুবিধার কারণে তাদের অনুভূতি অনেক সময় কাজ করে না, তাই নানা দুর্ভোগের শিকার হতে হয়। বিশেষ করে পায়ে সংক্রমণ ঘটলে তা বেড়েই চলে, তাই চাই নিয়মিত চেকআপ। প্রতিদিন রাতে একবার খুব ভালো পা,পায়ের তলা ভালো করে লাইট দিয়ে পরীক্ষা করা দরকার। পায়ের তলায় কোথাও ফুলে বা ফেটে গেছে কি না ভালোভাবে খেয়াল করতে হবে।
ফুটবাথ
কুসুমগরম পানিতে পা ৩ থেকে পাঁচ মিনিট ডুবিয়ে রেখে তুলে ফেলতে হবে। পানিতে কোনো ওষুধ দেওয়া হবে কি না বা কি দেওয়া হবে, সে ব্যাপারে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়াই ভলো। তবে পায়ে কাটা বা বেশি ফাটা থাকলে ফুটবাথ না করাই ভালো। এতে ফল উলটো হতে পারে।
ভালো করে মুছে ফেলুন
ফুটবাথ করার পরে নরম তোয়ালে দিয়ে পা দুটোকে ভালোভাবে মুছে নিন। পায়ে আঙুলের ফাঁকে ফাঁকে মুছে নেবেন। তবে হটফ্লাশ, হেয়ারড্রায়ার বা সূর্যের আলোতে কোনোভাবেই শুকানো উচিত নয়।
তৈলাক্ত ক্রিম
পায়ের আর্দ্রতা বজায় রাখতে একটু বেশি তৈলাক্ত ক্রিম ব্যবহার করাই ভালো। পা কাটা, ফাটা বা ছিঁড়ে ব্যকটেরিয়া ছড়িয়ে গেলে ক্রিম তা সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি কমায়।
নখ কাটা
পায়ের নখ কাটার সময় খুবই সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত। বেশি ধারালো কাঁচি বা নেলকাটার দিয়ে নখ না কাটাই ভালো। তবে পায়ের নখের দু’পাশে সামান্য গোল করে বা সোজা করে কাটাই শ্রেয়। পায়ের নখের কোনো অসুখ হলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া উচিত।
নিজে করবেন না
হাত, পায়ের ত্বক শুকিয়ে গেলে বা কোনো অনুভূতি না হলে নিজে এতে হাত না দিয়ে সাধারণ পেডিকিওর করাবেন না বরং পেডিকিওরের জন্য সরাসরি ডাক্তার বা মেডিকেল বিশেষজ্ঞের কাছে যাওয়াই ভালো।
সঠিক মাপের জুতো
সঠিক মাপের জুতো পরবেন, টাইট বা বেশি বড় জুতো নয়। সবচেয়ে ভালো খাঁটি চামড়ার জুতো পরা। নারী বা পুরুষ সকল ডায়াবেটিস রোগীর জন্যই হাইহিল একেবারেই নিষিদ্ধ। বড়জোর ৩ সেন্টিমিটার উঁচু হতে পারে জুতো। একদম খালি পায়ে ঘরের ভেতরও হাঁটা ঠিক নয়, কারণ এতে মাটিতে পড়ে থাকা অনেককিছু থেকে পা সংক্রমিত হতে পারে।
জুতো কিনবেন বিকেল বেলায়
জুতোর আবরণের ভেতরে যেসব উপাদান দেওয়া থাকে, তা থেকেও পা সংক্রমিত হতে পারে। তাই নিয়মিত জুতো ভালো করে পরিষ্কার করতে হবে। তা ছাড়া জুতো কেনার সময় ডায়াবেটিস রোগীরা বিকেল বেলায় কিনবেন, কারণ সারাদিন পা সামান্য ফোলা থাকতে পারে তাই পরে তা সঠিক মাপের নাও হতে পারে। সেজন্য বিকেলের মাপই সঠিক মাপ। তবে তা শুধু ডায়াবেটিস রোগীর ক্ষেত্রে নয়, অন্যান্যের ক্ষেত্রেও হয়ে থাকে।
পায়ের যত্ন
অতীতে বলা হতো, ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষত ও আক্রান্ত হাড় সাধারণত ভালো হয় না। হাইডেলব্যার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থোপেডিক বিশেষজ্ঞ ভেনৎসের অভিজ্ঞতা ভিন্ন। তিনি বলেন, সব নিয়ম মেনে চললে ধীরে ধীরে হলেও অস্থি ভালো হতে পারে। ডাক্তার রেনাটে ভোলান্সকিও তাঁর সাথে একমত। পায়ের যত্নে তাঁর পরামর্শই এখানে তুলে দেওয়া হলো।
সুইমিং পুল
ডায়াবেটিস রোগীদের সুইমিং পুলে না যাওয়াই ভালো। কারণ সুইমিং পুলে ব্যবহার করা হয় নানা রকম প্লাস্টিকের স্যান্ডেল বা জুতো, যা থেকে বিভিন্ন সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা থাকে। শরীরের হৃদযন্ত্র থেকে যে অঙ্গের দূরত্ব বেশি, সে অঙ্গের ক্ষত শুকাতে সময় তত বেশি লাগে। বলা বাহুল্য, ডায়বেটিস রোগীর ক্ষেত্রে এই প্রক্রিয়া আরও ধীর গতিতে হয়।