জুয়াড়িদের সঙ্গে সাকিবের কথোপকথন

0
365

খুলনাটাইমস স্পোর্টস : ভারতের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের আসন্ন সিরিজের আগেই নির্বাসিত টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। কেন তিনি এই শাস্তি পেলেন? অভিযুক্ত জুয়াড়ি দীপক আগারওয়াল বেশ কয়েকবার যোগাযোগ করে গোপন তথ্য জানার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু সে ব্যাপারে আইসিসি বা বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডকে না জানানোর অভিযোগে শাস্তি পেলেন সাকিব। এর আগে এমন প্রস্তাব পেয়ে শাকিব তা জানিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু এ বার কেন তিনি তা দুর্নীতি দমন শাখাকে (এসিইউ) জানাননি, পরিষ্কার নয়। কী কথা হয়েছিল সাকিবের সঙ্গে এই সন্দেহজনক ব্যক্তির? আইসিসির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, প্রথম বার দীপক যোগাযোগ করার চেষ্টা করেন সাকিবের সঙ্গে ২০১৭ সালের নবেম্বরে। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ চলার সময়। তিনি খেলছিলেন ঢাকা ডায়নামাইটসের হয়ে। সাকিবের ঘনিষ্ঠ এক ব্যক্তিই দীপককে তাঁর ফোন নম্বর দিয়েছিলেন। দীপক এই সাকিব-ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিকে ২০১৭ বিপিএলের ক্রিকেটারদের নম্বর দেওয়ার কথা বলেছিলেন। এর পরেই হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ করে সাকিবের সঙ্গে মুখোমুখি বসার চেষ্টা করেন। এই সময়ে বাংলাদেশ ত্রিদেশীয় ওয়ান ডে সিরিজ আয়োজন করেছিল শ্রীলঙ্কা এবং জিম্বাবুয়েকে নিয়ে। ১৯ জানুয়ারি বাংলাদেশ হারিয়েছিল শ্রীলঙ্কাকে, ম্যাচের সেরা হন সাকিব। ম্যাচের পরে দীপক অভিনন্দন জানান তাঁকে। কিন্তু সঙ্গে এমন একটি মেসেজ করেন, যা দেখে দুর্নীতি দমন শাখার কর্তাদের সন্দেহ হয়। ‘‘দীপক আগরওয়াল তাঁর মেসেজে লিখেছিলেন, ‘‘আমরা কি এখনই কাজ শুরু করব না আমি আইপিএল পর্যন্ত অপেক্ষা করব’’, বিবৃতিতে এই কথা জানিয়েছে আইসিসি। এই মেসেজে ‘‘কাজ শুরু করা’’ বলতে সাকিবকে গোপন তথ্য সরবরাহ করার কথা ইঙ্গিত করতে চেয়েছেন দীপক, এমনই মনে করছে আইসিসি। সাকিব এই প্রস্তাবের কথা দুর্নীতি দমন শাখা বা কাউকে জানাননি। চার দিন পরে দীপক আবার মেসেজ পাঠান। যা আরও সন্দেহজনক। এ বার লেখেন, ‘‘ভাই এই সিরিজ নিয়ে কিছু জানাবে?’’ তবু সাকিব এ ব্যাপারে এসিইউ বা বাংলাদেশ বোর্ডকে কোনও কথা বলেননি। গত বছর আইপিএল চলার সময় ২৬ এপ্রিল সাকিবের ফ্র্যাঞ্চাইজি সানরাইজার্স হায়দরাবাদের ঘরের মাঠে লড়াই ছিল কিংস ইলেভেন পঞ্জাবের বিরুদ্ধে। দীপক এই ম্যাচের দিনই ফের মেসেজ পাঠান সাকিবকে। এ দিন কথাবার্তা চলার সময়েই দীপককে বলেন শাকিব, তিনি তাঁর সঙ্গে দেখা করতে চান। ‘‘এই দিন দীপক আগরওয়ালের কাছ থেকে একটি হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ পান সাকিব। তিনি জানতে চান সাকিবের কাছে সেই ম্যাচে এক জন নির্দিষ্ট ক্রিকেটার খেলবে কি না। অর্থাৎ আবারও গোপন তথ্য জানার চেষ্টা করেন,’’ আইসিসি বিবৃতিতে জানিয়েছে। আরও যোগ করে, ‘‘দীপক আগরওয়াল কথাবার্তা চালিয়ে যান। বিটকয়েন, ডলার অ্যাকাউন্টের প্রসঙ্গও ওঠে। সাকিবকে তাঁর ডলার অ্যাকাউন্টের ব্যাপারে বিশদে জানাতে বলেন দীপক। এই কথাবার্তা চলার সময়ই সাকিব বলেন দীপককে ‘‘প্রথমে’’ দেখা করতে তাঁর সঙ্গে। এর পরেই সাকিব সতর্ক হয়ে যান। পরে সাকিব মেনে নেন ২৬ এপ্রিলের অনেক হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজই তিনি ডিলিট করে দিয়েছেন। তবে আরও এক বার তিনি দীপকের এই প্রস্তাবের ব্যাপারে জানাননি এসিইউ বা বাংলাদেশ বোর্ডকে। এর পরে দুর্নীতি দমন শাখার অফিসারেরা বাংলাদেশে শাকিবের সঙ্গে দু’বার সামনাসামনি কথা বলেন। চলতি বছরের ২৩ জানুয়ারি এবং তার পরে ফের ২৭ আগস্ট। সাকিব তখন তাঁর বিরুদ্ধে সমস্ত অভিযোগ মেনে নেন।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা