চট্টগ্রামের উন্নয়ন নিয়ে কোনো আপোস নয়: স্থানীয় সরকারমন্ত্রী

0
180

টাইমস ডেস্ক:
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, চট্টগ্রামের উন্নয়ন নিয়ে কোনো আপোস নয়। তিনি বলেন, চট্টগ্রাম ইকোনমিক হাব অব বাংলাদেশ (বাংলাদেশের অর্থনৈতিক কেন্দ্র)। বিশ্ব পরিস্থিতিতে মূল্যায়ন করতে গেলে চট্টগ্রামের গুরুত্ব কতটুকু তা আমরা বুঝতে পারি। অর্থনীতির ক্ষেত্রে একটি সমুদ্রবন্দরের গুরুত্ব উপলব্ধি করি। প্রকৃতি থেকে আমরা এটা পেয়েছি। এখন সেটাকে যথাযথভাবে এগিয়ে নিতে হবে। এটাকে যদি সঠিকভাবে ব্যবহার করতে না পারি, তাহলে এর চেয়ে বড় দুর্ভাগ্য আর কিছুই হতে পারে না। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে কর্ণফুলী নদীর নাব্যতা বৃদ্ধি, দখল ও দূষণ রোধে প্রণীত মাস্টারপ্ল্যানের বাস্তবায়ন, নগরের জলাবদ্ধতা নিরসন ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) উন্নয়ন সংক্রান্ত আলোচনা সভায় স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম এসব কথা বলেন। তাজুল ইসলাম বলেন, প্রধানমন্ত্রী একটি উন্নত দেশের স্বপ্ন দেখেন। এই স্বপ্ন পূরণের জন্য পথনকশা তৈরি করেছেন। এই নকশার মধ্যে অনেকগুলো বিষয় এসেছে। তাই শুধুমাত্র ঢাকাকেন্দ্রিক উন্নয়ন সীমাবদ্ধ রাখা হবে না। টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া, সেই রূপসা থেকে পাথুরিয়া-যেখানেই হোক না কেন, মানুষকে তার নিজের অধিকার দেয়া হবে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সারাজীবনের লালিত স্বপ্ন পূরণের জন্য বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা কাজ করছেন। আমি এর বিভিন্নভাবে দায়িত্ব নিয়েছি। তিনি বলেন, আমাদের মন্ত্রীদ্বয় এবং প্রশাসনিক কর্মকর্তা সচিবরা সবাই আশা করছি, এই উপলব্ধিতে এসেছেন-আমাদের কাজ হবে দেশের স্বার্থে, মানুষের স্বার্থে, কল্যাণের স্বার্থে। কারণ এ দেশ আমার দেশ, এদেশে আপনার দেশ। শুধু আমি ভালো থাকার চেষ্টা করলে আমি ভালো থাকব না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কারণে এই উপলব্ধিটা দেশের সকল মানুষ বুঝতে পারছেন। করোনা মোকাবিলায় সরকারের সফলতা তুলে ধরে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বলেন, ‘করোনার সময় ধান কাটার জন্য মানুষ পাওয়া যাচ্ছিল না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সকল ছাত্র, শিক্ষক ও প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের আহ্বান জানালেন কৃষকদের ধান কেটে দেয়ার জন্য। তার আহ্বানে সাড়া দিয়ে শিক্ষার্থীরা, প্রশাসনিক কর্মকর্তারা ধান শুধু কাটেনি, মাড়াই করে ঘরে পর্যন্ত পৌঁছে দিয়েছে। এটি শুধু শেখ হাসিনার পক্ষেই সম্ভব হয়েছে।
চট্টগ্রাম ইকোনমিক হাব অব বাংলাদেশ: স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেন, চট্টগ্রামে গড গিফটেড অপারচুনিটি (সৃষ্টিকর্তা প্রদত্ত সুযোগ) রয়েছে। তাই চট্টগ্রাম দৃষ্টিনন্দন শহর হবে। আউটার রিং রোড, কক্সবাজার পর্যন্ত মেরিন ড্রাইভ করতে পারলে হাজার হাজার পাঁচ তারকা হোটেল হবে। এজন্য রকেট সায়েন্সের দরকার হবে না। শুধু চট্টগ্রাম পর্যটন খাত দিয়ে পুরো দেশকে এগিয়ে নেবে। তবে অবকাঠামো যেন আগামী দিনের দুর্ভাগ্য ডেকে না আনে। তিনি বলেন, আমরা মনে করি, চট্টগ্রাম থেকে প্রতিদিন একজন ব্যক্তি দুই হাজার ডলারের বেশি আয় করার ক্ষমতা রাখেন। চট্টগ্রাম একটি উর্বর ভূমি। আমরা ভাগ্যবান যে, আমরা সেটা পেয়েছি। এখন সেটাকে যথাযথভাবে এগিয়ে নিতে হবে। আমাদেরকে অনেকগুলো বিষয়কে অ্যাড্রেস করতে হবে। আমাদের নদীগুলোতে যদি অপরিকল্পিতভাবে ব্যবহার করা হয় তাহলে আমরা আমাদের লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারব না। এ সময় মন্ত্রী কর্ণফুলী নদী কেন বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানকে লিজ দেয়া হচ্ছে, সে বিষয়ে জেলা প্রশাসন ও বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে প্রশ্ন রাখেন। তিনি প্রয়াত মেয়র এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরীকে স্মরণ করে বলেন, তিনি থাকলে এসব হতে দিতেন না। সবসময় চট্টগ্রামের পক্ষে কথা বলতেন। এমনকি আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধেও তিনি (কথা) বলেছেন। বিভাগীয় কমিশনার এবিএম আজাদের সঞ্চালনায় সভায় উপস্থিত ছিলেন পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক, গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ, সংসদ সদস্য ওয়াসিকা আয়েশা খান, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দিন আহমেদ, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কবির বিন আনোয়ার, নৌসচিব মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী, বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এসএম আবুল কালাম আজাদ, বিআইডব্লিউটিএ চেয়ারম্যান, বন্দরের সদস্য (প্রশাসন ও পরিকল্পনা) মো. জাফর আলম, চসিক প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন, সিডিএ চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষ, চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী একেএম ফজলুল্লাহ, চসিকের প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ একেএম রেজাউল করিম চৌধুরী, সিডিএর প্রধান প্রকৌশলী হাসান বিন শামস প্রমুখ।