গ্রাম সমিতির নির্মিত রাস্থায় নিজের সাইন বোর্ড! তালার তেঁতুলিয়া ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ব্যাপক দূর্নীতি-অনিয়মের অভিযোগ

0
192

তালা প্রতিনিধি:
রাস্তা সংস্কারে এমপি’র বরাদ্দ’র সমুদয় টাকা লোপাট করলেন, তালার তেঁতুলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান সরদার রফিকুল ইসলাম। উপজেলার নওয়াপাড়া-কলাপোতা বাজার ভায়া ধলবাড়িয়া রাস্তা সংস্কারে কোন প্রকার কাজ না করেই ভূয়া ভাউচারের মাধ্যমে প্রকল্পের সমুদয় টাকা উত্তোলন করেছেন বলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী।
প্রাপ্ত অভিযোগে জানা যায়, তালা উপজেলার বন্যা কবলিত তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের ২ নং ধলবাড়িয়া- কলাপোতা রাস্থাটিসহ বিস্তীর্ণ এলাকার সকল রাস্তাঘাট, ঘর-বাড়ি, ফসলের ক্ষেত বর্ষা মৌসুমে পানিতে তলিয়ে যায়। এলাকাবাসীর দূর্দশার কথা চিন্তা করে তালা-কলারোয়ার সংসদ সদস্য এ্যাড. মুস্তফা লুৎফুল্লাহ্ ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের নওয়াপাড়া বাজার হতে ধলবাড়িয়ার মধ্য দিয়ে কলাপোতা বাজার পর্যন্ত ইটের সোলিং রাস্থা উঁচু করণের জন্য ৩ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেন। তবে বরাদ্দ পেয়েও দীর্ঘ দিনের সমস্যা থেকে মুক্তি মেলেনি এলাকাবাসীর। এলাকাবাসী জানায়, ভূয়া ভাউচার প্রস্তুত করে বরাদ্দের সমুদয় টাকা নিজ পকেটস্থ করেছেন।
অভিযোগের প্রেক্ষিতে সরেজমিনে পরিদর্শন ও একালার সাধারণ মানুষের সাথে কথা বলে জানাযায়, রাস্তা সংস্কারে বরাদ্দের বিষয়টি তারা জানেনইনা। এমনকি বরাদ্দের টাকায় রাস্তার কোথাও এক ঝুঁড়ি মাটিও ফেলা হয়নি। এসময় রাস্তাটি আগের মতই নীচু দেখা যায়। বর্ষা মৌসুম তো দূরের কথা, শুষ্ক মৌসুমেও ঐ রাস্তায় স্বাভাবিক চলাচল করা দূরুহ ব্যাপার। প্রতিবেদনকালে উপস্থিত শত শত এলাকাবাসী একই ধরনের অভিযোগ করেন, চেয়াম্যান রফিকুলের বিরুদ্ধে।
একই ইউনিয়নের রাখালতলা-ছোট লাউতাড়া রাস্থার উন্নয়নে বরাদ্দ হয় ৮৪ হাজার টাকা। এলজিএসপি প্রকল্পে স্থানীয় ইউপি’র তত্ত্বাবধানে পিআইসি সভাপতি ছিলেন, সংরক্ষিত ইউপি সদস্য জিঞ্জিরা বেগম। স্থানীয়রা জানান, নাম মাত্র কাজ করে পুরো টাকা নয়-ছয় করেছেন চেয়ারম্যান রফিকুল ও ঐ মহিলা মেম্বর। রাস্থার পুরনো ইট উঠিয়ে ভেঙ্গে ফের সেখানে ফেলে নামমাত্র বালু দিয়ে সিংহভাগ টাকা হজম করেছেন তারা।
ওই ইউনিয়নের শুভাষিনী গ্রামের কাজীপাড়ার রাস্তাটিতে স্থানীয় গ্রাম সমিতি কাজ করলেও একই রাস্থায় প্রকল্প দেখিয়ে সেখানে সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দেন ইউপি চেয়ারম্যান। এনিয়ে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড আ’লীগের সভাপতি হামিদ কাজী এর প্রতিবাদ করলে চেয়ারম্যান সাইবোর্ডটি উঠিয়ে নিজের বাড়িতে নিয়ে রাখেন।
এব্যাপারে ধলবাড়িয়া গ্রামের মোবারক শেখ (৫০), আবুল সরদার (৬৫), সোহাগ হোসেন (২৬) এ প্রতিবেদককে জানান, দীর্ঘ দিন তাদের এই রাস্তার কোন প্রকার সংস্কার কাজ করা হয়নি। চলাচলের একবারে অনুপোযোগী হয়ে পড়ায় স্থানীয় মেম্বর আলাউদ্দীন কর্মসূচীর লোক দিয়ে কোন রকম সংস্কার করেছেন।
সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্য আলাউদ্দীন এ প্রতিবেদককে বলেন, ১৬-১৭ অর্থবছরে স্থানীয় এমপি রাস্তা উঁচু করণের জন্য ৩ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেন। চেয়ারম্যান নিজেই প্রকল্পের সভাপতি ও নিজস্ব লোকদের প্রকল্প কমিটিতে সম্পৃক্ত করে বরাদ্দের টাকা উত্তোলন করে তা আতœসাৎ করেন। তিনি কাজটি শেষ করতে বারংবার তাগিদ দিলেও তিনি কাজ শেষ করেননি। এলাকার মানুষের দুঃখ-দূর্দশা দূর করার জন্য পরবর্তীতে কর্মসূচীর লোক দিয়ে রাস্থাটির দুই ধারে মাটি দিয়ে কোনো করমে টিকিয়ে রাখা হয়েছে।
৪ নং ওয়ার্ড সদস্য মোহাম্মদ আলী মোড়ল বলেন, তাদের চেয়ারম্যানের অনিয়মের কথা বলে শেষ করা যাবে না। শুভাষিনী সরদারপাড়া পাঞ্জেগানা মসজিদ হতে সাহেব আলীর বাড়ি পর্যন্ত ইটের সোলিং করার জন্য ৪৫ হাজার টাকা ও লাউতাড়া’র সাবেক মেম্বর আবুল কালাম’র বাড়ি হতে ছোট লাউতাড়া পর্যন্ত ইটের সোলিং নির্মাণে ১ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা বরাদ্দ থাকলেও চেয়ারম্যান কাজ না করেই টাকা উঠিয়ে নিয়েছেন।
এ বিষয়ে চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি মোবাইল সংযোগটি বিচ্ছিন করে দেন।