গ্যালারিতে আলো ছড়াবেন কলিন্দা গ্রাবার-কিতারোভিচ

0
768

স্পোর্টস ডেস্কঃ

ন্যাটো সম্মেলনে কলিন্দা গ্রাবার-কিতারোভিচের সঙ্গে দেখা হয়ে গেল ডোনাল্ড ট্রাম্পের। ছবি: এএফপিন্যাটো সম্মেলনে কলিন্দা গ্রাবার-কিতারোভিচের সঙ্গে দেখা হয়ে গেল ডোনাল্ড ট্রাম্পের। ছবি: এএফপি
ক্রোয়েশিয়ার ম্যাচ মানেই মাঠে তাঁর ঝলমলে উপস্থিতি। আজ ফাইনালেও গ্যালারিতে থাকবেন ক্রোয়াট প্রেসিডেন্ট কলিন্দা গ্রাবার-কিতারোভিচ

বিশ্বকাপ হচ্ছে আর একজন নারী আলোচিত চরিত্র হয়ে উঠবেন না, তা কী করে হয়! ২০১০ বিশ্বকাপে পত্রিকায় ইকার ক্যাসিয়াসের ছবি যত না ছাপা হয়েছে, মানুষ তার চেয়ে বেশি দেখেছে ক্যাসিয়াসের সাংবাদিক বান্ধবী সারা কারবোনেরোকে। ১৯৯৮-এর বিশ্বকাপে ব্রাজিল তারকা রোনালদোর নাম বললেই আসত তাঁর বান্ধবী সুজানার কথাও।

এবার কি সে রকম কাউকে দেখতে পাচ্ছেন? না, বান্ধবী পর্যায়ের কেউ রাশিয়া বিশ্বকাপে আলোচিত হয়ে ওঠেননি। তবে সবার দৃষ্টি কেড়েছেন, এমন একজন নারী এবারের বিশ্বকাপেও জ্বলজ্বলে। তিনি ক্রোয়েশিয়ার প্রেসিডেন্ট কলিন্দা গ্রাবার-কিতারোভিচ। ক্রোয়েশিয়ার প্রতি ম্যাচেই দেখা গেছে তাঁর ঝলমলে উপস্থিতি। কোয়ার্টার ফাইনাল শেষে তো লুকা মদরিচদের অভিনন্দন জানাতে কিতারোভিচ চলে গিয়েছিলেন ড্রেসিংরুমেও। কিতারোভিচ মাঠে থাকবেন ফাইনালেও।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বিশ্বকাপ ফাইনাল দেখতে অন্তত ১১-১২টি দেশের রাষ্ট্রপ্রধানকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। সঙ্গে থাকবেন অনেক দেশের বড় বড় কূটনীতিকও। ফুটবলের সৌজন্যে মস্কোতে বিশ্বনেতাদেরই মিলনমেলা বসে যাচ্ছে বলা যায়। খেলার আগে-পরে পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ হবে সব নেতারই। তবে ক্রোয়েশিয়ার প্রেসিডেন্ট কিতারোভিচ আর ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁর মনোযোগ থাকবে শুধুই মাঠের দিকে। রাশিয়া গিয়ে কিতারোভিচ কূটনীতি যতটুকুই করেছেন, সেটিও ফুটবলকেন্দ্রিক। পুতিন আর ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মেকে উপহার দিয়েছেন ক্রোয়েশিয়ার জার্সি। ন্যাটোর সম্মেলনে গিয়ে জার্সি উপহার দিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্পকে। একই উপহার আজ তাঁর কাছ থেকে পেতে পারেন মাখোঁও।

ফাইনাল নিয়ে ক্রোয়াট নেত্রী এতটাই রোমাঞ্চিত যে, ম্যাচের আগের দুটি দিন ভীষণ অস্থিরতায় কেটেছে তাঁর, ‘আমি খুবই রোমাঞ্চিত। জানি না কীভাবে রোববার (আজ) পর্যন্ত অপেক্ষা করব। আমার বিশ্বাস, আমরাই জিতব। তবে ফল যা-ই হোক, আমরাই জয়ী।’ কিতারোভিচের জায়গায় ক, খ, গ, ঘ কেউ দেশটির প্রেসিডেন্ট হলে তিনিও আজ ফিফা সভাপতি আর অন্য ফাইনালিস্ট ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বসে খেলা দেখতেন। কিন্তু কিতারোভিচ বলেই ব্যাপারটা একটু ভিন্ন। খেলা নিয়ে তাঁর উন্মাদনা, সবার সঙ্গে সহজে মিশে যাওয়ার ক্ষমতা-সব মিলিয়ে খেলোয়াড়-কোচদের বাইরে সম্ভবত তিনিই রাশিয়া বিশ্বকাপের সবচেয়ে বড় তারকা। কিতারোভিচ বলছিলেন, ‘আমি শুধু একজন রাজনীতিবিদ বা প্রেসিডেন্ট হিসেবেই খেলা দেখতে যাব না। শৈশবে ফুটবল খেলেছে, এমন কারও মতোই ক্রোয়াট ফুটবলের ভক্ত হিসেবে মাঠে থাকব।’

ফাইনালের ফল নিয়ে পূর্বানুমানে রাজি নন কিতারোভিচ। ফলটাকে খুব একটা গুরুত্বও দিতে রাজি নন ভদ্রমহিলা। শুধু আশা করছেন, ফ্রান্স-ক্রোয়েশিয়া ফাইনাল হবে পরিচ্ছন্ন ফুটবলের প্রদর্শনী। বিশ্বকাপ জয়ের আনন্দের চেয়ে বড় আর কিছুই হয় না। তবে ১৯৯৮-এর বিশ্বকাপের তৃতীয় ক্রোয়েশিয়ার জন্য ফাইনালে ওঠাও বিরাট অর্জন। ফাইনাল দেখতে ক্রোয়েশিয়া থেকে তাই স্রোতের মতো মানুষ যাচ্ছে মস্কোয়। তাঁদের পাসপোর্ট প্রক্রিয়া সামলাতে রীতিমতো হিমশিম অবস্থা ক্রোয়াট পুলিশের।

ক্রোয়েশিয়ার রাজধানী জাগরেবের প্রস্তুতিও এরই মধ্যে সারা। লুঝনিকিতে আজ ফল যেটিই হোক, শহরের ইয়েলাসিস স্কয়ারে স্থানীয় সময় আগামীকাল বেলা ২টা ৩০ মিনিটে স্বাগত জানানো হবে মদরিচের দলকে। বিমানবন্দর থেকে সিটি সেন্টারে যাওয়ার পথে লক্ষাধিক মানুষ তাঁদের অভিবাদন জানাবেন। প্রেসিডেন্ট কলিন্দা গ্রাবার-কিতারোভিচই যে থাকবেন বিশাল সেই জনস্রোতের নেতৃত্বে-সেটি তো বলেই দেওয়া যায়।