গুজরাট দাঙ্গা: তদন্তে ‘নির্দোষ’ মুখ্যমন্ত্রী মোদীসহ তার পরিষদ

0
291

খুলনাটাইমস বিদেশ : ভারতের ইতিহাসে অন্যতম ভয়াবহ সাম্প্রদায়িক সহিংসতা গুজরাট দাঙ্গায় রাজ্যের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীসহ তার মন্ত্রিপরিষদকে নির্দোষ পেয়েছে ঘটনা তদন্ত গঠিত নানাবতী কমিশন।রাজ্য সরকারের কাছে জমা দেওয়ার পাঁচ বছর পর গতকাল বুধবার গুজরাটের বিধানসভায় উপস্থাপিত কমিশনের প্রতিবেদনের তথ্য তুলে ধরে ভারতের গণমাধ্যম এনডিটিভি এখবর দিয়েছে। ২০০২ সালে গুজরাটের গোধরায় ট্রেনে আগুনে ৫৯ জন হিন্দু নিহত হওয়ার ঘটনার সূত্র ধরে দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়া দাঙ্গায় এক হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হন, যাদের বেশিরভাগ ছিলেন মুসলমান। ওই ঘটনায় তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি জি টি নানাবতী ও অক্ষয় মেহতার সমন্বয়ে বিচারিক তদন্ত কমিশন গঠন করেন। কমিশন ২০১৪ সালে আনন্দীবেন প্যাটেলের নেতৃত্বাধীন সরকারের কাছে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেয়। তিন দিন ধরে রাজ্যজুড়ে চলতে ভয়াবহ ওই সহিংসতা রোধে ‘প্রয়োজনীয় দক্ষতা এবং আগ্রহ না দেখানোর’ অভিযোগে কমিশন দায়িত্বরত পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে বলে খবরে বলা হয়েছে। কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়, “কিছু জায়গায় উন্মত্ত জনতার ভিড় নিয়ন্ত্রণে পুলিশ অকার্যকর ছিল।” হিন্দু পুণ্যার্থীদের একটি ট্রেনে লাগা আগুনে ৬০ জন নিহত হওয়ার ঘটনা থেকে ওই দাঙ্গার দাঙ্গার সূত্রপাত। ট্রেনে আগুন দেওয়ার জন্য মুসলমানদের দায়ী করে প্রতিশোধের নেশায় উন্মত্ত হিন্দু জনতা গুজরাটের শহর ও গ্রামগুলোর মুসলিম জনবসতিতে তিন দিন ধরে তা-ব চালায়। আহমেদাবাদের গুলবার্গ আবাসিক কমপ্লেক্স হামলাকারীদের অন্যতম লক্ষ্যস্থল ছিল। সেখানে অনেক মুসলমানকে পুড়িয়ে মারা হয় ও তাদের ঘরবাড়িতে আগুন দেওয়া হয়। নিহতদের মধ্যে কংগ্রেস দলীয় সাবেক এমপি ও প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ ইহসান জাফরিও ছিলেন। নিহত জাফরির বিধবা স্ত্রী জাকিয়া জাফরি জানিয়েছেন, তার স্বামী সাহায্য চেয়ে মুখ্যমন্ত্রী মোদিকে ফোন করেছিলেন, কিন্তু সাহায্য আর আসেনি। গুলবার্গ হামলা থেকে বেঁচে যাওয়া লোকজন জানিয়েছেন, উত্তেজিত জনতা তাদের এলাকায় হামলা করার পর আত্মরক্ষার্থে জাফরি নিজের বন্দুক থেকে গুলি ছুঁড়েছিলেন। সমালোচকরা বলে থাকেন, ভারতের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ওই সময় সদ্য রাজ্যটির মুখমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়েছিলেন, দাঙ্গা থামাতে তিনি কার্যকর কোনও পদক্ষেপ নেননি। তবে দাঙ্গায় কোনও ধরনের ভূমিকা থাকার কথা অস্বীকার করে আসছেন হিন্দুত্ববাদী দল বিজেপি নেতা মোদী। প্রয়োজনীয় সাক্ষ্যপ্রমাণ না থাকায় ২০১৩ সালে ভারতের সর্বোচ্চ আদালতের একটি প্যানেল মোদীর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনার আবেদন খারিজ করে দিয়েছিল।