খুলনায় সন্ত্রাসী হামলার শিকার ঘের ব্যবসায়ীর মামলা গ্রহণে টালবাহানার অভিযোগ

0
665

নিজস্ব প্রতিবেদক:
রূপসায় মোঃ ইব্রাহিম (২৭) নামে এক ঘের ব্যবসায়ী সন্ত্রাসীদের হামলার শিকারের পর ভুক্তভোগীর চাচা সাইফুল ইসলাম থানায় অভিযোগ দাখিল করতে গেলে থানার ওসি টালবাহানা করছেন।
ইব্রাহিমের আপন সেজো চাচা মোঃ সাইুফল ইসলাম রোববার বিকেলে এ প্রতিবেদককে বলেন, তার ভাইপোকে মারধরের বিষয়ে গত ২৯ নভেম্বর সকালে রূপসা থানায় মামলা দিতে যাই। মামলায় আদম, সোহেল, গোলাম মাওলা ও জলিলের পুত্র হুমায়নকে আসামি এবং হুকমদাতা হিসেবে ৩নং নৈহাটির সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তফা কামালের নাম উল্লেখ করা হয়। ওই দিন ওসি মোঃ রফিকুল ইসলাম আমাকে বলেন, আমার শরীরটা ভালো না পরের দিন আসেন। ওসির কথা মত ৩০ নভেম্বর রাত ৯টার দিকে পুনরায় গেলে তিনি ওই দিন আবার বলেন পরের দিন আসেন। তার এই মামলা নেওয়ার বিষয়ে টালবাহানা দেখে আমরা আর যাইনি।
রূপসা থানা ওসি মোঃ রফিকুল ইসলাম বলেন, অভিযোগ দিতে কেউ কখনো থানায় আসেননি।
জেলা পুলিশ সুপার এস এম শফিউল্লাহ শনিবার রাতে এ প্রতিবেদককে বলেন, ভুক্তভোগীরা আমার কাছে আসতো। আমি ব্যবস্থা নিতাম। সাধারণ মানুষের জন্য সব সময় আমার দরজা খোলা রয়েছে। আমি বিষয়টি দেখছি।
সাবেক ৩নং নৈহাটি ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল রোববার বিকেলে এ প্রতিবেদককে বলেন, ওই দিন রাস্তাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় বাসিন্দা আঃ হাই শিকদারের সাথে ইব্রাহিমের বাকবিত-া হয়। আঃ হাই বয়স্ক লোক। সে তালিমপুর মসজিদের মোয়াজ্জিন। তাকে ইব্রাহিম লাথি মারে। সেই কারণে আঃ হাই শিকদারের ছেলেরা ইব্রাহিমকে মারধর করেছে। আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য এই মিথ্যা অভিযোগ দিচ্ছে। তার নামে থানায় একাধিক মামলা রয়েছে তিনি তা স্বীকার করে বলেন ওই মামলায় আমাকে দোষী প্রমাণ করতে পারেনি।
হামলার শিকার ইব্রাহিম বলেন, এলাকায় প্রভাশালী হওয়ার কারণে তার ভয়ে কেউ মুখ খুলতে চায় না। সব কিছুই টাকা দিয়ে ম্যানেজ করে ফেলেন। ওই দিন আঃ হাই শিকদারকে আমি কোনো মারধর করিনি। তার মেয়ে পান্নার সাথে কথা কাটাকাটি হয়েছিলো। ওই সময় আবার তার কাছে মাফ চেয়ে এটা মীমাংসা করা হয়। এর কিছুক্ষণের পর ওই চেয়ারম্যানের নির্দেশে আদম, সোহেল, গোলাম মাওলা ও জলিলের পুত্র হুমায়ুন আমার ওপর হামলা চালায় এসময় মহিউদ্দিন, মনি, বাবু ও সোহেলসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলো। মোস্তফা কামালের বিরুদ্ধে এলাকায় ও থানায় অনেক অভিযোগ রয়েছে। মামলার না করার জন্য আমার পরিবারের আত্মীয়-স্বজনকে হুমকি ধামকি দেওয়া হচ্ছে।
আঃ হাই শিকদারের ছেলে গোলাম মাওলা বলেন, আমার বাবা ও বোন পান্নাকে ইব্রাহিম অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও ধাক্কা মারে। এ জন্য আমি ইব্রাহিমকে মারধর করেছি। আমার বাবার ৯০ বছর বয়স। তিনি তালিমপুর মসজিদের খাদেম ও মোয়াজ্জিন ছিলেন। এখন অসুস্থ থাকার কারণে যেতে পারেন না। আমার বাবা ও বোনকে কেউ অপমান মারধর করলে আমি কি বসে থাকতে পারি।
উল্লেখ্য, খুমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মোঃ ইব্রাহিম জানান, ২৮ অক্টোবর সকাল সাড়ে ১১টার দিকে উক্ত ইউনিয়নের তালিমপুর গ্রামে তার ইব্রাহিম এন্টারপ্রাইজ নামের ইট-বালু ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর পাশাপাশি তিনি ঘেরের ব্যবসা করেন। ইটের গাড়ি চলাচল করায় তাদের রাস্তা ভেঙে যায়। এ বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দা খন্দকারের সাথে বাকবিত-া হয়। ওই সময়ই মীমাংসা হয়ে যায়। পরে তার ইটের গোলার পাশেই ঘেরে চলে আসেন। এর কিছুক্ষণ পর সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানের নির্দেশে ২৫-৩০ জন ধারাল অস্ত্র দিয়ে তার ওপর এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে। প্রথমে তাকে রূপসা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হলে ওখানকার চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য খুমেক হাসপাতালে রেফার্ড করেন। চিকিৎসকরা জানান, ধারাল অস্ত্রের আঘাতে ক্ষতস্থানে সেলাই দেওয়া হয়েছে।