খুলনায় আদালতের পেশকার রিমান্ডে আলোচিত সেই মামলার নথি উদ্ধার

0
457

নিজস্ব প্রতিবদক:
খুলনার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে টাকা বিনিময়ে আসামিকে ভুয়া জামিন মঞ্জুরের রি-কল প্রদানের অভিযোগে ৪নং আদালতের পেশকার (স্টেনো) শেখ মোস্তাক আহমেদকে রিমান্ডে নেওয়ার পর তার স্বীকারোক্তিতে মামলার নথি উদ্ধার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ৩টায় আসামী মোস্তাকের বাসাবাড়ীর বেডরুমের তোষকের নিচ থেকে মামলার নথি উদ্ধার করা হয়। পেশকার শেখ মোস্তাক বাগেরহাট জেলার ফকিরহাটের ধনপুতা গ্রামের নিজামউদ্দিন শেখের ছেলে। সে ৪নং আদালতের পেশকার হিসেবেও কর্মরত ছিলেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৩’র মামলার আসামি ৪নং আদালত থেকে জামিন পেয়েছেন মর্মে ৩নং আদালতে একটি রি-কল জমা দেয়ার পর এ জালিয়াতি সামনে আসে। মামলা গায়েব ও জামিনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে পেশকার মোস্তাক আসামি পক্ষের সাথে ৪লাখ টাকার মৌখিক চুক্তি করেছিলেন বলে তদন্তে ধরা পড়েছে। গত ৩সেপ্টেম্বর মামলার ধার্য দিনে দেখা যায় ৪নং আদালত থেকে আসামি জামিনের বিপরিতে যে রি-কল নিয়েছেন তা সঠিক নয়। পরবর্তীতে বিষয়টি তদন্ত করে ভুয়া প্রমানিত হয়।
এ ঘটনায় প্রতারণা মামলার আসামি শেখ রাজিব (৩২) আদালতে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি প্রদান করেছেন। গত রবিবার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক তরিকুল ইসলাম ফৌজদারী কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় আসামি রাজিবের জবানবন্দি রেকর্ড করেছেন। রাজিব ঢাকা উত্তারার সেক্টর-৯, রোড নং-৯ এর ২০ নম্বর বাড়িতে বসবাস করেন। সে নড়াইল জেলার কালিয়া থানার বাবরা গ্রামের এসকে হান্নানের ছেলে। এ মামলার অপর আসামি রাজিবের স্ত্রী সুমনা খানম (৩০)।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সদর থানার এসআই আবু সাইদ জানান, মামলার আসামি রাজিবের স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দির সুত্র ধরে সোমবার বিকেলে সার্কিট হাউজ এলাকা থেকে বেঞ্চ সহকারি শেখ মোস্তাককে গ্রেফতার করা হয়। তিনি এ জামিন জালিয়াতির সাথে জড়িত রয়েছেন বলে তথ্য ছিল। গতকাল আদালত তাকে তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে। তার স্বীকারোক্তিতে ৫২ পৃষ্ঠার মামলার নথি উদ্ধার করা হয়েছে। আসামী টাকার জন্য এ কাজ করেছে বলে স্বীকার করেছে।
মামলার বিবরণে জানা যায়, দৌলতপুর পাবলা কেশবলাল রোডের মৃত. আব্দুল ওয়াদুদ মোল্লার মেয়ে হীরা খানমের কাছ থেকে ব্যবসার কথা বলে ২৯ লাখ টাকা ধার নেয় শেখ রাজিব। কিন্তু ওই টাকা ফেরৎ না দেয়ায় গত বছরের ৩ অক্টোবর হীরা খানম রাজিব ও তার স্ত্রী সুমনার বিরুদ্ধে দৌলতপুর থানায় মামলা দায়ের করেন যার নং-৪। গত ১৮ এপ্রিল মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৩ থেকে রাজিব ও স্ত্রী সুমনার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা ইস্যু করা হয় উত্তরা পশ্চিম থানায় যার প্রসেস নং ৯২/১৯ ও ৯৩/১৯। গত ২৮ আগস্ট উত্তরা থানার এসআই মো. সাইফুল ইসলাম ও এএসআই মফিজুল ইসলাম আসামিরা জামিন পেয়েছেন মর্মে ৩নং আদালতে রি-কল পাঠিয়ে দেন। গত ৩ সেপ্টেম্বর মামলার ধার্য দিনে দেখা যায় ৪নং আদালত থেকে যে রি-কল নেয়া হয়েছে তা উক্ত আদালতের নয়। আসামিরা নিজস্বার্থে অন্যান্যদের সহয়তায় আদালতের স্বাক্ষর ও সীল জাল-জালিয়াতি করে প্রতারণা করেছে। এ ঘটনায় মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৩ এর বেঞ্চ সহকারী মো. জামাল হোসেন বাদী হয়ে শেখ রাজিব ও তার স্ত্রী সুমনা খানমের বিরুদ্ধে খুলনা থানায় মামলা দায়ের করেন যার নং-৬।