খুলনার আধুনিক রেলস্টেশনে ট্রেন চলাচল শুরু রবিবার

0
779

এম জে ফরাজী : অবশেষে আগামী রবিবার থেকে খুলনার আধুনিক রেলস্টেশনের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হচ্ছে। সকাল ৮টা ৪০ মিনিটে ঢাকাগামী ‘চিত্রা এক্সপ্রেস’ খুলনা স্টেশন ত্যাগের মধ্য দিয়ে এই আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। এরপর নিয়মিত ট্রেন আসা-যাওয়া করবে স্টেশনটি থেকে। খুলনার স্টেশন মাস্টার মানিক চন্দ্র সরকার বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে ট্রেন চলাচলের আগে নিচু প্লাটফর্ম সংস্কারের জন্য দাবি জানিয়েছিলেন খুলনা নাগরিক নেতারা। সে দাবি না মেনেই ট্রেন চলাচল শুরু হচ্ছে। প্রকল্প কর্মকর্তাদের ভাষ্য, আপাতত নতুন স্টেশন বা প্লাটফর্ম সংস্কারের কোনো পরিকল্পনা নেই। ফলে নিচু প্লাটফর্ম দিয়ে কিছুটা দুর্ভোগের সঙ্গেই চলাচল করতে হবে নগরবাসীকে।
খুলনার স্টেশন মাস্টার মানিক চন্দ্র সরকার জানান, ইতোমধ্যে নতুন স্টেশনে মালামাল নেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে কম্পিউটারসহ ইন্টারনেট সংযোগের কাজ শুরু হয়েছে। শনিবারের মধ্যে পুরোপুরি স্টেশন তৈরি হয়ে যাবে। রবিবার থেকে ট্রেন চলাচলের সঙ্গে সঙ্গে স্টেশন থেকে টিকিট বিক্রিসহ সব ধরণের সেবা দেওয়া হবে।
এর আগে গত ৯ নভেম্বর খুলনা রেল স্টেশন পরিদর্শন করেন রেলওয়ে অতিরিক্তি মহাপরিচালক (অবকাঠামো) মোঃ আনোয়ারুল হক। তিনি নবনির্মিত স্টেশন ভবনের সার্বিক অগ্রগতি পরিদর্শন শেষে ঢাকায় গিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে নবনির্মিত রেল স্টেশন বুঝে নেয়ার প্রস্তুতি শুরু করে। এসব প্রক্রিয়া শেষে বৃহস্পতিবার খুলনার স্টেশন মাস্টারকে ট্রেন চালু করতে মৌখিক নির্দেশ দেন এবং একই সাথে পশ্চিমাঞ্চল রেলের মহাব্যবস্থাপক মোঃ মজিবর রহমানকে উপস্থিত থাকতে নির্দেশনা দেয়া হয়।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, দীর্ঘ আন্দোলন শেষে ২০০৭ সালে তখনকার তত্ত্বাবধায়ক সরকার একটি আধুনিক রেলস্টেশন নির্মাণ প্রকল্প গ্রহণ করে। এর নাম দেওয়া হয় ‘রিমডেলিং অব খুলনা রেল স্টেশন অ্যান্ড ইয়ার্ড’। একাধিকবার সংশোধনের পর ২০১৪ সালের ২৬ জানুয়ারি প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদন পায়। ২০১৫ সালের এপ্রিল মাসে স্টেশনের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। কিন্তু ধীরগতির কারণে কয়েক দফায় প্রকল্পের সময় বাড়ানো হয়। গত অক্টোবর মাসে এর কাজ পুরোপুরি শেষ হয়েছে। স্টেশন নির্মাণে মোট ব্যয় হয়েছে ৬০ কোটি টাকা।
সূত্রটি আরও জানায়, নতুন এই স্টেশনে নতুন তিনতলা স্টেশন ভবন, ১ হাজার ২০০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৩০ ফুট প্রস্থের তিনটি প্লাটফর্ম, ৭৮৪ বর্গমিটারের একটি লিংক করিডোর, সীমানা প্রাচীর, সুবিশাল গাড়ি পার্কিং ও ফুটপাত রয়েছে। সেই সঙ্গে নতুনভাবে স্থাপন করা হয়েছে রেললাইনের স্লিপার, লোকোসেড, রেস্টুরেন্ট টিকিট কাউন্টার, ওয়েটিং রুম, ভবন সজ্জিতকরণ, রং-টাইলসের ফিনিসিং ও ধোয়া মোছার কাজ, স্বয়ংক্রিয় অগ্নিনির্বাপন ব্যবস্থা, বাগানসহ লাইটিং-এর কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে।