করোনা আবার আসতে পারে, প্রয়োজনের বেশি খরচ নয়: প্রধানমন্ত্রী

0
191

টাইমস ডেস্ক:
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, করোনা মহামারি আবার দেখা দিলে প্রচুর অর্থের প্রয়োজন হবে। এজন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সরকারি অর্থ খরচ করার বিষয়ে সর্বোচ্চ মিতব্যয়ী হতে হবে। আমাদের মিতব্যয়ী হতে হবে। ঠিক যেটুকু আমাদের নেহায়েত প্রয়োজন তার বেশি এখন কোনো পয়সা খরচ করা চলবে না। গতকাল রোববার গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে সাভার সেনানিবাসে সেনাবাহিনীর ১০টি ইউনিট ও সংস্থাকে জাতীয় পতাকা প্রদান অনুষ্ঠানে এমন নির্দেশনা দেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০২০ সাল আমাদের বাঙালির জাতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি সময়। এ বছর আমরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন করছি। যদিও করোনাভাইরাসের কারণে তার যথাযথ প্রোগ্রাম করতে পারিনি। তারপরও আমরা যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে ডিজিটাল পদ্ধতিতে এটি পালন করেছি। যারা এই পদক পেলেন তাদের জন্য অত্যন্ত গৌরবের। কারণ বাংলাদেশে স্বাধীন না হলে এটি সম্ভব হতো না। জাতির পিতা সবসময় আমাদের প্রেরণা দিয়েছেন। উজ্জীবিত করেছেন। তিনি বলেন, ১৯৭৪ সালে বঙ্গবন্ধু একটি প্রতিরক্ষা নীতিমালা করে দিয়ে যান। আমরা এখন যদি সেই নীতিমালা দেখি, সেটা এতোই যুগোপযোগী যে এখন তা আমাদের জন্য প্রযোজ্য। কোভিড-১৯ এর এই সংকটময় সময়ও মানুষের কল্যাণে সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, এবার পাঁচ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকার বাজেট দিয়েছি। যেটা দেয়া খুব কঠিন ছিল। তবু আমরা দিয়েছি, তারপরও বলেছি যে, অর্থ খরচের ব্যাপারে সবাইকে একটু সচেতন থাকতে হবে। কারণ করোনাভাইরাস যদি আবার ব্যাপক হারে দেখা দেয়, তাহলে আমাদের প্রচুর অর্থের প্রয়োজন হবে। তিনি বলেন, মানুষকে আবার আমাদের সহযোগিতা করতে হবে, চিকিৎসা করতে হবে, ওষুধ কিনতে হবে, হয়তো আরও ডাক্তার-নার্স আমাদের লাগবে। সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমাদের মিতব্যয়ী হতে হবে। ঠিক যেটুকু আমাদের নেহায়েত প্রয়োজন তার বেশি এখন কোনো পয়সা খরচ করা চলবে না। ভবিষ্যতের দিকে লক্ষ্য রেখেই সে ব্যবস্থা নিতে হবে। যদিও আমরা বাজেট ঠিক রেখেছি।
এসময় সেনাবাহিনী দেশের মানুষের আপনজন উল্লেখ করে তাদের সর্বোচ্চ দেশপ্রেম ও পেশাদারিত্ব বজায় রেখে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। শেখ হাসিনা বলেন, দেশের জনগণের কল্যাণের কথা চিন্তা করে আপনাদের কাজ করতে হবে। তিনি বলেন, সেনাবাহিনী দেশের সম্পদ, মানুষের ভরসা ও বিশ্বাসের প্রতীক। আপনাদের সবাইকে পেশাগতভাবে দক্ষ, সামাজিক ও ধর্মীয় মূল্যবোধে উদ্বুদ্ধ হয়ে সৎ ও মঙ্গলময় জীবনের অধিকারী হতে হবে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সশস্ত্র বাহিনী গড়ে তোলার পদক্ষেপ নিয়ে একটি প্রতিরক্ষা নীতিমালা তৈরি করে দিয়ে যান। স্বাধীনতা-পরবর্তী ধ্বংসস্তূপ থেকেই দেশকে অগ্রগতির পথে এগিয়ে নিতে এ পদক্ষেপ নেন তিনি। সেটা এতোই যুগোপযোগী যে, এত বছর পরও সেটা মনে হয় এখনও অত্যন্ত সময়োপযোগী। তারই আলোকে আমরা ইতোমধ্যে ফোর্সেস গোল ২০৩০ প্রণয়ন করে সেনাবাহিনীসহ সব বাহিনীর সার্বিক উন্নয়নে আধুনিকায়নে এবং যুগের সঙ্গে তারা যেন তাল মিলিয়ে চলতে পারে, সেদিকে লক্ষ্য রেখেই বিভিন্ন কার্যক্রম হাতে নিয়েছি। শেখ হাসিনা বলেন, এ পতাকা, লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত। এই পতাকা হচ্ছে একটি জাতির স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব, সম্মান ও মর্যাদার প্রতীক। এই পতাকার মান রক্ষা করা প্রত্যেকেরই দায়িত্ব। প্রতিটি সৈনিক এবং আমি মনে করি সবারই দায়িত্ব এই পতাকার মর্যাদা রক্ষা করা। জাতীয় পতাকা পাওয়ার যোগ্যতা অর্জন করা যেকোনো ইউনিটের জন্য সম্মান ও গৌরবের বিষয়। আজকে আপনারা সেই স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের প্রতীক জাতীয় পতাকা অর্জন করেছেন। আপনাদের হাতে আমার পক্ষ থেকে সেনাবাহিনী প্রধান পতাকা তুলে দিয়েছেন। আমার দুর্ভাগ্য সশরীরে উপস্থিত থাকতে পারলাম না। এটা সত্যিই আমার জন্য খুব কষ্টের। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্ব এগিয়ে যাচ্ছে। বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমাদের চলতে হবে। আমাদের সশস্ত্র বাহিনী বা আমাদের সেনাবাহিনী এখন শুধু আমাদের দেশে সীমাবদ্ধ নয়। আমরা জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনেও অবদান রেখে যাচ্ছি। আমি সবসময় চেয়েছি, সেনাবাহিনী বা আমাদের সশস্ত্র বাহিনী সবসময় আধুনিক প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত সুপ্রশিক্ষিত একটি সেনাবাহিনী গড়ে উঠুক।