কপিলমুনিতে কাবিখা প্রকল্পে একই অর্থায়নে দু’সুফল

0
170

নিজস্ব প্রতিবেদক:
পাইকগাছার কপিলমুনির মাইটখালী খালের নাব্যতা হ্রাসে আসন্ন বর্ষা মৌসুমকে সামনে রেখে বিস্তীর্ণ এলাকার পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা নিয়ে সেখানকার সাধারণ মানুষের মধ্যে নানা আশংকা ক্রমশ দানা বেঁধে উঠছে। স্থানীয়দের দাবি, মৌসুমের আগেই খালটি খনন করে সুষ্ঠু পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনা হোক।
দীর্ঘ দিন যাবৎ সংষ্কার ও তদারকির অভাবে প্রায় ২ কিঃমিঃ দৈর্ঘ্যরে খালটি বর্তমানে অস্তিত্ব সংকটে রয়েছে। ৬০/৯০ ফুট গড় প্রায় প্রস্থের খালটির এখন ১৫/২০ ফুট অস্তিত্ব রয়েছে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়ের অধিনে গত ২০১৯-২০ দু’ অর্থ বছরে কাবিখা প্রকল্পের আওতায় স্থানীয় সরকার পরিষদের তত্ত¡াবধানে সেখানকার খালের মাটিতে পুরনো কেয়ারের রাস্তাটি সংষ্কার হলে দৃশ্যমান হয় খালের নাব্যতা। তবে তা সুষ্ঠু পানি সরবরাহে যথেষ্ঠ নয় বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। সরেজমিনে দেখা যায়, মাইটখালী সংলগ্ন জনৈক বদর গাজীর বাড়ি থেকে হাড়িয়া নদীর কামারাবাদ ওয়াপদা রাস্তা পর্যন্ত প্রায় ২ কিলোমিটার খালটির পাশ দিয়ে কাবিখা প্রকল্পের আওতায় দু’দফায় রাস্তাটি নির্মিত হয়েছে। এতে করে এক খরচে স্কেভেটর দিয়ে খাল খনন ও খননের মাটিতে রাস্তা নির্মাণে প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়েছে। এদিকে পুরনো কেয়ারের রাস্তা সংষ্কার প্রকল্পে কোন কোন এলাকায় নতুন রাস্তা নির্মানে স্থানীয়দের কেউ কেউ খুশী হতে না পারলেও প্রকল্প বাস্তবায়নকারীরা বলছেন, ৬০’র দশকে বিলের মধ্য দিয়ে নির্মিত কেয়ারের রাস্তাটি দীর্ঘ দিন যাবৎ সংষ্কার ও তদারকির অভাবে বিলীন হয়ে গিয়েছিল। একদিকে পুরনো রাস্তার অস্তিত্ব সংকট অন্যদিকে পানি নিষ্কাশনের এক মাত্র খালের নব্যতা হ্রাস দু’ইয়ে মিলে এলাকাবাসীর জনভোগান্তির কথা বিবেচনায় রেখে বাস্তবায়িত হয় দু’দফায় কাবিখার প্রকল্প দুটি। প্রকল্প বাস্তবায়নের পর এলাকাবাসী এর সুফলও ভোগ করছেন বলে জানান, স্থানীয় দু’জনপ্রতিনিধি ও প্রকল্প সভাপতিরা। এব্যাপারে স্থানীয় সিদ্দিক গাজী জানান, আসন্ন ইউপি নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রকল্প বাস্তবায়নের প্রায় দু’বছর পর কতিপয় স্বার্থান্বেষীরা সংশ্লিষ্টদের সাদা গায়ে কাঁদা মাখাতে প্রকল্পটিকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। সরকারের বিভিন্ন দফতরে আবেদনসহ নানা গণমাধ্যমে অপপ্রচারের ইস্যু তৈরির রসদ খুঁজছে। মুলত পরিকল্পিত প্রকল্পটি বাস্তবায়নে নব্যতা হ্রাসে অস্তিত্ব সংকটে নিশ্চিহ্ন প্রায় খালটি দৃশ্যমান হয়েছে। বিস্তীর্ণ বিলা লে যাতায়াতের পুরনো ব্যবস্থা ফিরে পাওয়ায় অনেকের মত তিনিও খুশী। এদিকে নতুন রাস্তা নির্মাণে সরকারের খাস জমি ব্যক্তি মালিকানায় বে-দখল হয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে স্থানীয় দু’ইউপি সদস্য মো: আলাউদ্দীন গাজী ও মোস্তাফিজুর রহমান মিন্টু জানান, কোন এলাকায় সরকারি ঠিক কি পরিমাণ জমি রয়েছে সেটা তাদের জানা নেই। খাস জমি থাকলেও পূর্বে যারা যে প্রক্রিয়ায় দখলে ছিলেন এখনও সেভাবেই রয়েছেন। বে-দখল ঠেঁকাতে কিংবা অবৈধ দখলমুক্ত করতে হলে সরকারিভাবে জরিপপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন সরকারের ব্যাপার। তারাও চান মাইটখারির খাস খাল খননের পাশাপাশি সরকারি জমির দখলমুক্ত করতে। এলাকাবাসী জানান, এক সময় খালটি স্থানীয় মৎস্যজীবিদের জীবিকার প্রান ও বিস্তীর্ণ অ লের পানি নিষ্কাশনে ব্যাপক ভূমিকা রাখত। চাষাবাদে সেচ কাজেও ব্যবহার হত খালের পানি। এক সময়ের আশীর্বাদ আর আজকের অভিশাপের অপর নাম যেন মাইটখালির খাল। এ অবস্থার মুক্তি চান স্থানীয় ভূক্তভোগীরা। স্থানীয় ইউপি সদস্য মোঃ আলাউদ্দীন গাজী বলেন, কেয়ারের রাস্তাটি সংষ্কারে তিনি প্রথমত ২০১৯ সালে প্রথম দফার প্রকল্পে মাইটখালী বিল অভিমুখের ১২ চেইন নতুনসম রাস্তা নির্মাণ করেন। ২০২০ সালে রাস্তার বাকি কাজ করেন প্রকল্প সভাপতি হিসেবে ৬ নং ওয়ার্ড সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান মিন্টু। এব্যাপারে ইউপি সদস্য ও দ্বিতীয় দফার কাজের প্রকল্প সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান মিন্টু জানান, নতুন রাস্তা নির্মাণ কোনভাবেই খাল শাষণ কিংবা কোন প্রকার অবৈধ স্বার্থ উদ্ধারে করা হয়নি। বরং একই অর্থায়নে খাল খননের মাটি দিয়ে নতুন রাস্তা করা হয়েছে। এতে নিশ্চিহ্নপ্রায় খালের অস্তিত্ব ও খানিকটা হলেও নব্যতা ফিরে এসেছে। এলাকাবাসী এর সুফলও পাচ্ছেন প্রথম থেকে। এছাড়া সরকারি জমি থাকলে তা পূর্বেও যারা যে প্রক্রিয়ায় দখল করতেন এখনও তারা তাই করছেন। প্রকল্প বাস্তবায়নে কোন প্রকার অনিয়ম-দূর্নীতি কিংবা স্বজন প্রীতির আশ্রয় নেয়া হয়নি। খালটি খননের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন জানানো হয়েছে বলেও জানান তিনি। এব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কপিলমুনি ইউপি চেয়ারম্যান কওছার আলী জোয়াদ্দারের প্রতিক্রিয়া জানার চেষ্টা করলে তিনি আসন্ন ইউপি নির্বাচনে দলীয় মনোনয়নের ব্যাপারে ঢাকায় অবস্থান করছেন বলে জানানো হয়।