মইনুল ইসলাম, আশাশুনি প্রতিনিধি:
নাম তার জিএম গোলাম মোস্তফা। গোলাম মোস্তফা আশাশুনি উপজেলার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সেনেটারি ইন্সেপেক্টর। দায়িত্ব বাড়ী, দোকান, বাজার পরিস্কার পরিছন্ন রাখতে মানুষকে সচেতন করা। আইন অমান্য করে যদি কেউ নোংরা পরিবেশে খাদ্য দ্রব্য পরিবেশন করেন তবে তাদের বিরুদ্ধে উপজেলা প্রশাসনের সহযোগীতায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা।কিন্তু সম্প্রতি মহামারী করোনা ভাইরাসের প্রাদূর্ভাবে করোনা যোদ্ধা হিসাবে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে হাসিমুখে কাঁধে তুলে নিয়েছেন করোনার নমুনা সংগ্রহের দায়িত্ব। তিনি বিগত বছরের ডিসেম্বর মাস থেকে করোনার ডিউটি শুরু করেন ভোমরা স্থল বন্দরে। পরে ২০২০সালের মার্চ মাসের শেষের দিকে নিজ কর্মস্থল আশাশুনিতে শুরু করেন করোনা উপসর্গ রোগীর স্যাম্পল বা নমুনা সংগ্রহ করা। তিনি উপজেলার ১১টি ইউনিয়নের প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত দায়িত্ব পালনে ছুটে চলেছেন। করোনার স্যাম্পল বা নমুনা সংগ্রহের দায়িত্বটি প্যাথলজি বিভাগের উপর বর্তালেও কোন আপত্তি ছাড়াই দেশ ও দেশের মানুষের সেবাই নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছেন করোনার নমুনা সংগ্রহের মত এমন একটি ভয়াবহ বা ঝুঁকিপূর্ণ দায়িত্ব। এবিষয়ে সেনেটারি ইন্সেপেক্টর জিএম গোলাম মোস্তফা জানান, শুধু দায়িত্ব পালনের জন্য নয়, দেশ তথা জেলা ও উপজেলার মানুষকে সুস্থ রাখতে তিনি এ দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি আরও জানান, এ ঝুঁকিপূর্ণ পেশা পালন করতে গিয়ে পরিবার পরিজন থেকে হতে হয়েছে একেবারে আলাদা। পরিবারকে সুস্থ রাখতে আলাদা একটি নির্জন বাসায় একাই বসবাস করেন এমনটিই জানান তিনি। তবে দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, নমুনা সংগ্রহ করি বলে জেলা সদরে বা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অনেক কর্মচারীই আমাদেরকে ঘৃনার চোখে দেখেন। কিন্তু তিনি হাল ছেড়ে দেননি। ঘৃনা বা হাজারও অপমান মেনে নিয়ে শত কষ্টে হলেও উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে গিয়ে নমুনা সংগ্রহের দায়িত্ব পালনে তিনি কোন দিন পিছু পা হবেন না বলে তিনি জানান। অন্যদিকে, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একাধিক সূত্রে জানাগেছে, স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ে করোনার যোদ্ধার তালিকায় অধিকাংশ কর্মচারী তাদের নাম অন্তরভুক্তও করিয়েছে। যারা কিনা কখনও করোনা প্রতিরোধে অফিস থেকে বাইরে যাননি। এছাড়া অনেকে অফিসে বসেও টিএ-ডিএ বিল উত্তোলন করেছেন। তাদের তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে। সেনেটারি ইন্সেপেক্টর গোলাম মোস্তফার মাধ্যমে করোনা ভাইরাস সনাক্ত ও করোনা প্রতিরোধ বিষয়ক সচেতনা মূলক প্রচারে মুগ্ধ আশাশুনি উপজেলার সাধারণ মানুষ। ইতি মধ্যে তিনি সাধারণ মানুষের কাছে একজন করোনা যোদ্ধায় ভূষিত হয়েছেন।
