আশাশুনির খোলপেটুয়ার রিং বাঁধ ভেঙ্গে ৫ গ্রাম প্লাবিত, আরো দু’ইউনিয়ন প্লাবনের আশঙ্কা!

0
219

আশাশুনি প্রতিনিধি:
আশাশুনির খোলপেটুয়া নদীতে জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় রিং বাঁধ ভেঙ্গে লোনা পানি ভেতরে প্রবেশ অব্যহত রয়েছে। আশাশুনি সদরে নতুন করে আরো ৩ গ্রামসহ মোট ৫ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। সরজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, বুধবার দুপুরের খোলপেটুয়া নদীর জোয়ারে পানি মঙ্গলবারের তুলনায় আরো কমপক্ষে একফুট বৃদ্ধি পাওয়ায় আশাশুনি টু দয়ারঘাট মেইন সড়কে রিং বাঁধের পূর্বের ভাঙ্গনকৃত ৫ টি পয়েটে ছাড়া নতুন আরেকটি পয়েন্টে ভাঙ্গলে জোয়ারের সময় লোনা পানি প্রবল বেগে ভেতরে প্রবেশ করছে। ভাটার সময় পানি ভেতরে প্রবেশের তুলনায় কম সরছে। ফলে প্রতি জোয়ারে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে মৎস্য চাষের প্রায় শতাধিক ঘের, অসংখ্য সাদা মাছ চাষের পুকুর, বসতবাড়ী, গবাদি পশুসহ আধা পাকা ও কাচা বোরো ধানের কৃষি জমি। উপজেলা চেয়ারম্যান এবিএম মোস্তাকিম, উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাজমুল হুসেইন খাঁন, সদর ইউপি চেয়ারম্যান সম সেলিম রেজা মিলন, পাউবো’র কর্মকর্তা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে তাৎক্ষনিকভাবে রিং বাঁধ সংস্কারে লোক লাগিয়ে প্রানপন কাজ করাচ্ছেন। কিন্তু সরকারিভাবে তেমন কোন বরাদ্ধ না থাকায় শ্রমিকরা কাজ করতে গড়িমশি করছে। এলাকা প্লাবিত হওয়ায় চিংড়ি পোনা হ্যাচারি, একটি মসজিদ, ৪টি মন্দির, প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ নতুন করে অসংখ্য বসতবাড়ী ভেঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রায় ডজ্জনাধিক পরিবার পাউবো’র বাঁধে অবস্থান করছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত প্লাবিত এলাকার বানভাসি পরিবারের মধ্যে সরকারি ও এনজিও’র পক্ষ থেকে কোন শুকনা খবার সরবরাহ করা হয়নি। এখন এলাকায় সুপেয় পানি, মল ত্যাগের ব্যবস্থাসহ কোন খাদ্য সরবরাহ করা হয়নি। আগামী ২/১ দিনের মধ্যে রিং বাঁধ যদি বাঁধা না হয় তাহলে উপজেলা সদর ইউনিয়ন, শ্রীউলা, শোভনালী ইউনিয়নের প্রায় সব গ্রাম এবং প্রতাপনগর ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের সবকয়টি গ্রাম প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কায় ভূগছে ওই এলাকার লোকজন। এদিকে, আশাশুনি সদরের বাজারে মরিচ্চাপ নদীর পানি রক্ষা বাঁধ না থাকায় বর্তমান বাজারের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত রাস্তাটি অত্যান্ত নীচু হওয়ায় জোয়ারের পানি অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পাওয়ায় বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভেতর দিয়ে ও দোকানের ফাক ফোকড় দিয়ে লোনা পানি ভেতরে ঢুকে থানা, আশাশুনি সরকারি হাইস্কুল সড়ক ও পুকুর ডুবে গেছে। ভূক্তভোগী প্লাবিত এলাকাবাসি দ্রæত টেকসই বাঁধ নির্মানে সংশ্লিষ্ঠ কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। প্রসঙ্গত: স¤প্রতি ১ কোটি ৩৮ লক্ষ টাকার বরাদ্দ হলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি গত গোণ থেকে যদি মুল বাঁধের কাজ করতেন তাহলে আবারও রিং বাঁধে চাপ না পড়লে ভাঙ্গতো না বলে সচেতন মহলের দাবী। তারা বাঁধের কাজ করার সকল মালামাল নিয়ে ঘটনা স্থলে পৌছেও কাজে গড়িমসি করছেন। এরই মধ্যে দয়ারঘাট ও আশাশুনি গ্রামের পিচের রাস্তা উপর দিয়ে রিং বাঁধের ভাঙ্গনকৃত ৫টি পয়েন্ট ভেঙ্গে পানি ঢুকেছে। আশাশুনি সদরের দক্ষিন পাড়া ঋষি বাড়ীর পুলিন দাশ, নিরান দাশ ও পুজা উদযাপন পরিষদের সম্পাদক রনজিৎ বৈদ্যের বাড়ী সংলগ্ন রিং বাঁধ ভেঙ্গে গেছে। এছাড়াও মনিন্দ্র সানার বাড়ীর পাশে ভেঙ্গে পানি ঢুকেছে লোকালয়ে। পাউবো’র এসও জানান, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজ করবে মুল বাঁধে। তার আগে আমাদের রিং বাঁধটি সংরক্ষন করা জরুরী। উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ দ্রæত পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন বলে জানান।