আশাশুনিতে বেড়ী বাঁধ ভেঙ্গে ২২ গ্রাম ১ হাজার হেঃ মৎস্য ঘের ও ২ শতাধিক ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত

0
147

আশাশুনি প্রতিনিধি:
ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে আশাশুনি উপজেলার বিভিন্ন নদ-নদীতে জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ১০টি পয়েন্টে পাউবো’র বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে ও ওভারফ্লো হয়ে এ পর্যন্ত ২২টি গ্রাম, দেড় হাজার হেক্টর জমির মৎস্য ঘের, ২ শতাধিক ঘরবাড়ি ও ইটেরভাটা প্লাবিত হয়েছে। এখনো ৯টি পয়েন্টে ভাঙ্গন রক্ষা করা সম্ভব না হওয়ায় নদীর পানির তোপে একের পর এক গ্রাম ও সম্পদ প্লাবিত হয়ে যাচ্ছে।
বুধবার (২৬ মে) ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাব নদ-নদীর উত্তাল পানি, হালকা ও মাঝারি ধরনের বৃষ্টি এবং ঝড়ো হাওয়া উপকূলবর্তী এলাকায় আছড়ে পড়লে দুপুর ১২ টার দিকে প্রতাপনগর ইউনিয়নের শ্রীপুর কুড়িকাহনিয়া লঞ্চঘাটের দক্ষিণ পাশে দু’টি পয়েন্টে বেড়িবাঁধ ওভারফ্লো হয়ে ভেতরে পানি প্রবেশ করতে শুরু করে। কিছুক্ষণের মধ্যেই সেখানে ৩০০ ফুটমত বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে এলাকা প্লাবিত হয়। এছাড়া হরিষখালী ৩টি পয়েন্টে, প্রতাপনগর সংলগ্ন বন্যতলায় টি পয়েণ্টে, নাংলার একটি পয়েন্টে বেড়িবাঁধ ওভারফ্লো হয়। নদীর পানি কুড়িকাহুনিয়া, চাকলা, সুভদ্রাকাটি, রুইয়ের বিল, হরিশখালি, সোনাতনকাটি, নাকনা, শ্রীপুর, গোকুলনগর, শির্ষা, একসরা গ্রাম জলমগ্ন করে। এদিকে বড়দল ইউনিয়নের বামনডাঙ্গায় গেট সংলগ্ন উত্তর দিকে ৩টি পয়েন্টে ও দক্ষিণ দিকে টি পয়েন্টে বাধভেঙ্গে বামনডাঙ্গা, তুয়ারডাঙ্গা, জামালনগর, ডুমুরপোতা, ফকরাবাদ, কেয়ারগাতি, মাদিয়া, মুরারীকাটি, কদমতলা, জেলপাতুয়া গ্রাম ও বিল প্লাবিত হয়েছে। সেখানে বাঁধ রক্ষার জন্য উপজেলা আ’লীগ সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান এবিএম মোস্তাকিমের দিকনির্দেশনায় ও আর্থিক সহায়তায় আ’লীগ নেতা ও বড়দল ইউনিয়ন নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী জগদীশ চন্দ্র সানার নেতৃত্বে কাজ করা হচ্ছে। বেকু মেশিনের সাহায্যে মাটি সংগ্রহ করে বস্তা ভর্তি ও বাঁশ গিয়ে পাইলিং এর কাজ করা হচেছ। শুক্রবার মূল বাধে কাজ করা হবে বলে তিনি জানান। উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাজমুল হুসেইন খাঁন, পিআইও সোহাগ খান ভাঙ্গন স্থান পরিদর্শন করে কাজের অগ্রগতি দেখেন ও দিকনির্দেশনা প্রদান করেন। অপরদিকে, কাদাকাটি ইউনিয়নের তেতুলিয়া আদর্শ গ্রামের বাঁধ ভেঙ্গে গ্রামের মধ্যে পানি প্রবেশ করায় পুরো গ্রামের সকল ঘরবাড়ি জানালা পর্যন্ত পানিতে তলিয়ে গেছে। আদর্শ গ্রামের এক শত ৪০টি পরিবার প্লাবিত হয়ে আশ্রয় হারা হয়ে পড়েছে। আদর্শ গ্রাম সংলগ্ন আরও ৩০টি পরিবারের ঘরবাড়ি একই সাথে প্লাবিত হয়ে গেছে। ইউপি চেয়ারম্যান দীপঙ্কর কুমার দিপ একটি রিং বাধ দিয়ে ৩০টি পরিবারকে রক্ষার ব্যবস্থা করতে সক্ষম হয়েছে। বাকী পরিবারগুলো চরম বিপাকে রয়েছে। সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহীন সুলতানা আদর্শ গ্রাম পরিদর্শন করে কিভাবে তাদেরকে রক্ষা করা যায় সে ব্যাপারে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে ব্যবস্থা নেবেন বলে আশ্বস্থ করেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাজমুল হুসেইন খাঁন ও পিআইও সোহাগ খান জানান, প্রত্যেক ইউনিয়নে ২ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা করে বরাদ্দ এসেছে, এছাড়া ২০ মেঃ চাউল, এক লক্ষ টাকার শিশু খাদ্য ও এক লক্ষ টাকার গো-খাদ্য বরাদ্দ হয়েছে।

খুলনা টাইমস/এমআইআর